ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারতবিরোধিতার পুরনো কার্ড ভোঁতা প্রমাণিত, বুমেরাং হতে পারে

ভারতবিরোধী বিএনপি এখন ভারতের আশীর্বাদ পেতে মরিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫

ভারতবিরোধী বিএনপি এখন ভারতের আশীর্বাদ পেতে মরিয়া

হাসান নাসির ॥ পুরনো সেই কার্ডটি একেবারেই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। শুধু অকার্যকরই নয়, সেটি এখন সাংঘাতিকভাবে বুমেরাং। চরম ভারতবিরোধীরা এখন কেমন যেন তেজ হারিয়ে ফেলেছেন। বিরোধিতা আর নয়, বরং উল্টো তাঁরা বৃহৎ প্রতিবেশী দেশটির আশীর্বাদ চাইছেন। চলছে ভারতের প্রতি অনুগত হবার প্রাণান্তকর চেষ্টা। দলটি এখন ভারতের অনুগ্রহ লাভে রীতিমতো মরিয়া। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধান অমিত শাহর ফোন আসেনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে। অথচ, ফলাও করে প্রচার করা হলো সংবাদ মাধ্যমে। ভাবনা এমন যে, ভারত থেকে একটি ফোন এলেই বুঝি পুলকিত হতো বিএনপি। কিন্তু কেনই বা বাংলাদেশের ভারতবিরোধীদের এহেন নিস্তেজ অবস্থা। বিএনপি অনেকটাই নিশ্চিত দেশের রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তন ঘটে গেছে। ভারতবিরোধিতার সেই পুরনো কার্ড দিয়ে খেলাটা আর জমবে না। বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৈরী রেখে এদেশে ক্ষমতার রাজনীতিতে আর সুবিধা করা যাবে না। সে কারণেই এখন চলছে উল্টো ভারতের প্রতি বিশ্বস্ত হবার প্রতিযোগিতা। ভারতের বিগত সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি’র নিরঙ্কুশ জয়ের পর এদেশের ভারতবিরোধীরা ভেবেছিলেন, এই বুঝি প্রকারান্তরে তাদেরই বিজয় হলো। বিজেপির জয়ে বিএনপির উচ্ছ্বাস এবং নেতাদের অভিনন্দন বার্তা নরেন্দ্র মোদির কাছে পৌঁছেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ সরকারের আগেই। ভাবখানা এমনই যে, বাংলাদেশে আমরা পরাজিত হলেও কংগ্রেসকে হারিয়ে ভারতে জিতেছি বিপুল ভোটের ব্যবধানে। নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে অভিনন্দন জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তাঁর পুত্র তারেক রহমান। নির্বাচনে জয়ী বিজেপি নেতা মোদি নাকি বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে ভারত সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন। তারেকের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এই আমন্ত্রণের খবর ফলাও করে প্রচারও করা হয়। আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের মিত্র ভারতীয় কংগ্রেস সাধারণ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় বিএনপি-জামায়াত জোট এবং বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অতি আনন্দ পরিলক্ষিত হলেও ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো যে বাংলাদেশের দলগুলোর মতো হঠকারী ও হুজুগে নয়, সেটিই প্রমাণ হলো নরেন্দ্র মোদি সরকারের অবস্থানের মধ্য দিয়ে। প্রতিবেশী দেশটির শীর্ষ নেতারা শত্রু-মিত্র চিনতে ভুল করেন না। সে জন্যই দু’দেশের সম্পর্ক এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সুদৃঢ়। কিছু রাজনৈতিক দল নয়, ভারতবিরোধী মনোভাবের বুদ্ধিজীবীদের অবস্থানও টিভি-টকশোতে বিএনপিপন্থী আলোচকদের কথাবার্তায় উল্টে যায়, যারা ভারতের নাম শুনলেই রীতিমতো তারা কামান দেগেছেন এখন তারা আর তেমন উচ্চকণ্ঠ নন। বরং ভারতকে হিসেবে রেখেই কথা বলছেন। তবে পানিটা ঘোলা করে না খেলেই ভাল হতো।
×