ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাফল্যের ধারাবাহিকতায়

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

সাফল্যের ধারাবাহিকতায়

সফলতা যে সহজেই ধরা দেয়, তা নয়। অনেক শ্রম, কর্মনিষ্ঠতা, কর্মকুশলতা, দক্ষতা, যোগ্যতা, সততা ও একনিষ্ঠতার সমন্বয় ঘটলে সাফল্য এসে ধরা দেয়। নানা প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা ও বাধাকে উপড়ে ফেলে তবে সফলতা বিকশিত হয়। পাল্লাটা সাফল্যের দিকেই ছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের দ্বিতীয় দফা শাসনের প্রথম বছরটিতে। আলোর অপর পিঠে অন্ধকারের মতো, সাফল্যের মুদ্রার অপর পিঠে ব্যর্থতাও কিছুটা ছিলো। যদিও তা ব্যাপক নয়, তবু ক্ষাণিকটা অদক্ষতা, অযোগ্যতার প্রমাণ রেখে গেছে। পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের শাসনের শেষ বছরটিতে বহু ষড়যন্ত্র ও জঙ্গী তৎপরতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। দ্বিতীয় দফার প্রথম বছরটিতে নির্বাচন ও তাতে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের কাজ সুসম্পন্ন করতে হয়েছে দেশী-বিদেশী নানা অপতৎপরতা ও সংঘাতময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই। দশম সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চরম রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বর্তমান সরকার। গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষায় শত প্রতিকূলতা ও বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৫ জানুয়ারির নির্বাচন। বর্জন ও প্রতিহতের ডাক দিয়ে দেশজুড়ে অভাবনীয় সহিংসতা চালায় জামায়াত-বিএনপি। গত বছরের ১২ জানুয়ারি দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্ত হাতে হাল ধরেন সরকারের। ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটে গেলেও হম্বি-তম্বি বহাল রেখেছিল। এই এক বছরে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রনায়কোচিত আচরণের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গেছেন। অর্থনীতিক্ষেত্রে বাংলাদেশের মূল্যসূচক অনেক এগিয়ে গেছে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত এখন। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ব্যাহত করতে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের প্রচেষ্টায় যে গোষ্ঠী, সম্প্রদায় ও দল সচেষ্ট, তাদের কঠোর হস্তে দমন করা যায়নি অবশ্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তিদানের ক্ষেত্রে দেশী-বিদেশী রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলছে। ২০১৪ সাল বাংলাদেশের জন্য অগ্রগতির সোপান হয়ে থাকছে। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাকে সামনে নিয়ে সরকার উন্নয়নের ধারাকে ত্বরান্বিত করেছে। পদ্মা সেতু নিয়ে সকল ষড়যন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ কাজ শুরু করে সরকার সাহসী ভূমিকা নিয়েছে। সব সেক্টরে উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকলেও কোথাও কোথাও তা ব্যাহত হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পুরোপুরি সফল হয়নি দুর্নীতি, সন্ত্রাস; জঙ্গীবাদ নির্মূলে। ঘোষণা দিয়ে সরকার বিরোধীরা মানুষ হত্যা করছে, সম্পদ নষ্ট করছে। বিভিন্ন সেক্টরে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অনুপ্রবেশও রোধ করা যায়নি। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি সরকারী দলের সহযোগী সংগঠনের রাজনৈতিক বহির্ভূত কর্মকা-কে। তবুও সব কিছুকে ছাপিয়ে দেশ-বিদেশে শেখ হাসিনা সরকার তাঁর গ্রহণযোগ্যতাকে প্রমাণ করতে পেরেছেন। কৃষি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ সার্বিক প্রেক্ষাপটে দেশ এগিয়েছে। তবে রাজনীতি পিছিয়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও পাকিস্তানী চেতনাধারীদের সহিংসতায়। এসব দমন করে জনজীবনে আরও শান্তি, স্বস্তি ফিরিয়ে আনাই হোক সরকারের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় বছরটাতেÑ দেশ ও জাতি এমনটাই প্রত্যাশা করে।
×