ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সর্বশেষ ১ বারের ফিফা বর্ষসেরা

জয় পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডোর

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

জয় পর্তুগীজ তারকা রোনাল্ডোর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনুমিত ধারণাই সত্যি হয়েছে। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি ও ম্যানুয়েল নিউয়েরকে স্পষ্ট ব্যবধানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফিফা ব্যালন ডি’অর এ্যাওয়ার্ড জয় করেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সোমবার রাতে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টারের হাতে বর্ষসেরার এ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হয়। রোনাল্ডোর হাতে শ্রেষ্ঠত্বের স্মারক তুলে দেন ফিফা সভাপতি সেপ ব্লাটার। এবারসহ তিনবার ফিফা সেরা হওয়ার গৌরবে ভেসেছেন রোনাল্ডো। এর আগে ২০০৮ সালে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকাকালীন সময়ে প্রথমবার ফিফা সেরা হয়েছিলেন সি আর সেভেন। মেয়েদের বিভাগে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন জার্মানির নাদিন কেসার। বছরের সেরা গোলের পুসকাস এ্যাওয়ার্ড জয় করেছেন ব্রাজিল বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটজয়ী তারকা জেমস রড্রিগুজে। সেরা কোচ নির্বাচিত হয়েছেন জার্মানিকে দুই যুগ পর বিশ্বকাপ উপহার দেয়া জোয়াকিম লো। প্রেসিডেন্সিয়াল এ্যাওয়ার্ড জিতেছেন জাপানের সাবেক ফুটবলার ও বর্তমানে ক্রীড়া সাংবদিক হিরোশি কাগাওয়া। ফেয়ার প্লে এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ব্রাজিল বিশ্বকাপে ফিফার স্বেচ্ছাসেবকরা। সম্মানসূচক পুরস্কারটি নিজের করে নিতে রোনাল্ডো পেয়েছেন মোট ৩৭.৬৬ শতাংশ ভোট। মেসি ও নিউয়েরকে কোন রকম পাত্তা না দিয়েই শ্রেষ্ঠত্ব নিজের করে নিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী সুপারস্টার। অবশ্য জার্মান ও আর্জেন্টাইন তারকার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। ন্যূনতম ব্যবধানে নিউয়েরকে হারিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন মেসি। দ্বিতীয় হওয়া মেসি পেয়েছেন ১৫.৭৬ শতাংশ ভোট আর তৃতীয় হওয়া নিউয়েরের বাক্সে জমা পড়েছে ১৫.৭২ শতাংশ ভোট। তৃতীয়বারের মতো বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রোনাল্ডো বলেন, আমাকে যারা ভোট দিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। ২০১৩ সালেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসিকে হারিয়ে সেরা হয়েছিলেন রোনাল্ডো। সেবার বার্সিলোনা তারকার চার বছরের একচ্ছত্র আধিপত্য ভেঙ্গেছিলেন সি আর সেভেন। এবার আরেকবার আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে হতাশায় ডুবিয়েছেন তিনি। গত বছরজুড়ে ধারাবাহিক নজরকাড়া নৈপুণ্যের স্বীকৃতি হিসেবে ফিফা সেরার পুরস্কার পেয়েছেন রোনাল্ডো। রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড গেল বছর প্রদর্শন করেন তুখোড় ধারাবাহিক পারফর্মেন্স। ব্রাজিল বিশ্বকাপে তেমন ভাল করতে না পারলেও ক্লাব দল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে নিয়মিত আলো ছড়িয়েছেন। গ্যালাক্টিকোদের চ্যাম্পিয়ন্স লীগের দশম শিরোপা জিততে রাখেন অগ্রণী ভূমিকা। করেন রেকর্ড ১৭ গোল। চলমান মৌসুমেও আছেন দারুণ ছন্দে। এবার নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ও সর্বমোট তিনবার তিনি এ কৃতিত্ব দেখালেন। এর আগে ২০০৮ ও ২০১৩ সালে ফিফা বর্ষসেরা হয়েছিলেন সি আর সেভেন। ২০১০ সালে ফিফা বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি’অর একীভূত করার পর এবার দ্বিতীয়বার এই পুরস্কার পেলেন পর্তুগাল জাতীয় দলের অধিনায়ক। ফের ফিফা সেরা হওয়ার পর গোটা ফুটবলবিশ্বের প্রশংসা ও অভিনন্দনের স্রোতে ভাসছেন সাবেক ম্যানইউ তারকা। ফিফার বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার পেয়েছেন রড্রিগুয়েজ। হল্যান্ডের রবিন ভ্যান পার্সি ও আয়ারল্যান্ডের নারী ফুটবলার স্টেফানি রোচকে হারিয়ে ২০১৪ সালের ফিফা পুসকাস পুরস্কার জেতেন কলম্বিয়ান তারকা। সেরা গোলের পুরস্কার জিততে ৪২ শতাংশ ভোট পান রিয়াল মাদ্রিদ তারক। রোচ ৩৩ শতাংশ ও পের্সি ১১ শতাংশ ভোট পান। বর্ষসেরার পুরস্কার পেয়ে রড্রিগুয়েজ বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানায়। আমার জন্য এবং কলম্বিয়ার সবার জন্য এটা বিশেষ একটা মুহূর্ত। আমার অসম্ভব ভাল লাগছে। ব্রাজিল বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচে সতীর্থের হেড থেকে বল কাঁধের একপ্রান্ত দিয়ে নামিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের দুরন্ত ভলিতে গোলটি করেন রড্রিগুয়েজ। ফিফা বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার পেয়েছেন জার্মানির জোয়াকিম লো। রিয়াল মাদ্রিদের কার্লো আনচেলত্তি ও এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের দিয়াগো সিমিওনেকে পেছনে ফেরে সেরার সম্মান অর্জন করেন বিশ্বকাপ জয়ী এই কোচ। সেরা হতে ৩৬.২৩ শতাংশ ভোট পান লো। ২২.০৬ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন আনচেলত্তি। আর তৃতীয় হওয়া সিমেওনে ১৯.০২ শতাংশ ভোট পান। মহিলা ফুটবলের সেরা কোচের পুরস্কার পেয়েছেন জার্মানির রালফ কেলেরম্যান। গত বছরের বর্ষসেরা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন জার্মানির মহিলা ফুটবলার নাদিন কেসার, ব্রাজিলের মার্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাবি ওয়ামব্যাচ। তবে, ব্রাজিল আর যুক্তরাষ্ট্রের তারকাদের পেছনে ফেলে ফিফা মহিলা বর্ষসেরার পুরস্কার নিজের করে নিয়েছেন নাদিন কেসার। জার্মানির নারী এ তারকা ফুটবলার খেলেন উলফসবার্গের হয়ে। পুরস্কার জয়ের পর নাদিন বলেন, এটা আমার জীবনের জন্য অসাধারণ একটি মুহূর্ত।
×