ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অস্থিরতায় ৫শ’ কোটি টাকার পোশাকের অর্ডার বাতিল

প্রকাশিত: ০২:৫৪, ২০ জানুয়ারি ২০১৫

অস্থিরতায় ৫শ’ কোটি টাকার  পোশাকের অর্ডার বাতিল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বর্তমানে চলমান রাজনৈতিক অবরোধে দেশের পোশাক শিল্প থেকে প্রায় সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকার কার্যাদেশ বাতিল করেছেন আন্তর্জাতিক ক্রেতারা। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারিং এ্যান্ড ইমপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) এক পরিচালক বলেন, “কিছুদিন আগেই অর্ডার এসেছিলো প্রায় ২৭ লাখ ডলারের। এজন্য সব কাঁচামাল আমদানি শেষ হয়ে যাওয়ার পর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ১৩ জানুয়ারি ক্রেতা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে অর্ডার বাতিল করেছে। শুধু আমার কোম্পানিই নয়, রফতানি করছে এমন অধিকাংশ কারখানারই কিছু না কিছু কার্যাদেশ বাতিল করেছেন ক্রেতারা। বাতিল করা কার্যাদেশে টাকার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকার মতো হবে।” এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। যে সকল কারখানার কার্যাদেশ বাতিল হয়েছে তার তালিকায় মোহাম্মদ হাতেমের এমবি নিট ফ্যাশনের নামও রয়েছে। এমবি নিট ফ্যাশনে ক্যাশিও ও কেইলার নামক দুটি ক্রেতা তাদের কার্যাদেশ বাতিল করেছে। এর পরিমাণ প্রায় ৩৮ লাখ ডলার বলে জানান মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, আমার স্পেন ও ফ্রান্সের দুটি ক্রেতা ক্যাশিও ও কেইলার তাদের কার্যাদেশ তুলে নিয়েছে। দুটি ক্রেতার মোট ৩৮ লাখ ডলারের কাজ পেয়েছিলাম। পণ্য তৈরির কাজও কারখানায় শুরু হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এরই মধ্যে অবরোধের জ্বালাও পোড়াও বিশ্ব মিডিয়ার মাধ্যমে তারা দেখে এ দেশে থেকে এখন কোন পণ্য নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। আমার কিছুই করার নেই। প্রতিদিনই আমরা কোন না কোন উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে কার্যাদেশ বাতিল হয়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছি। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ক্রেতা ম্যাগপাই বাংলাদেশের কয়েকটি কারখানা থেকে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করেছে বলে জানা যায় পোশাক প্রস্তুতকারী ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ থেকে। বিজিএমইএ এর তথ্য মতে, ম্যাগপাই একটি কারখানা থেকেই প্রায় ৩৬ লাখ ডলার মূল্যের কার্যাদেশ বাতিল করেছে। এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম বলেন, উদ্যোক্তারা যে কার্যাদেশ পেয়েছিলো তা কেবল মাত্র রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাতিল হয়ে যাওয়া ভাল লক্ষণ নয়। এসব কারণে চলতি অর্থবছরে পোশাক রফতানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে তা অর্জন নাও সম্ভব হতে পারে। তিনি বলেন, “২০১৪-১৫ অর্থবছরের পোশাক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন কার্যাদেশ পাওয়া তো দূরের কথা আগের কার্যাদেশই বাতিল হয়ে যাচ্ছে।” অনেক ক্রেতাই বাংলাদেশকে কার্যাদেশ দেয়ার জন্য আসার কথা থাকলেও তারা তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করছে। এরই মধ্যে জারা জিন্সের সঙ্গে জার্মানির ক্রেতা আলডির বৈঠকের কথা থাকলেও তা বাতিল হয়েছে। কার্যাদেশ চাইলে জারা জিন্সের প্রতিনিধি দলকে জার্মানি যেতে হবে বলে জানিয়েছে আলডির কর্মকর্তারা।
×