ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্য অবশ্যই কোয়ার্টার ফাইনাল ॥ মাহমুদুল্লাহ

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২০ জানুয়ারি ২০১৫

লক্ষ্য অবশ্যই কোয়ার্টার ফাইনাল ॥ মাহমুদুল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আসন্ন বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবনার একমাত্র বিষয় শুধু কন্ডিশন। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের পরিবেশ ও উইকেটের পরিস্থিতি সম্পূর্ণই আলাদা বাংলাদেশের চেয়ে। কিন্তু এবার সেখানেই সেই বৈরী পরিবেশে বিশ্বকাপ মঞ্চে লড়াইয়ে নামতে হবে মাশরাফি বিন মর্তুজা শিবিরের। কিন্তু কন্ডিশন নিয়ে বেশ চিন্তা করতে চান না বাংলাদেশ দলের মিডলঅর্ডারের নির্ভরতা সাবেক সহঅধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি মনে করেন ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মক থাকলে ভাল করা সম্ভব হবে। আর এর চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে প্রতিটি ক্রিকেটারকে নিজ নিজ দায়িত্বটা পালন করতে হবে। নিজেদের যোগ্যতা অনুসারে খেলতে পারলে সফলতা পাওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন মাহমুদুল্লাহ। বর্তমানে দলের ব্যাটিং শক্তিটাও অন্য যে কোন বিভাগের চেয়ে এগিয়ে। তবে ফিল্ডিংয়ে উন্নতি করতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দক্ষতা বৃদ্ধির অনুশীলনে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে দুপুরে এসব কথা বলেন তিনি। প্রস্তুতি জোরেশোরে চলছে। দিনব্যাপী কয়েক সেশনে অনুশীলন চালিয়ে গেছেন ক্রিকেটাররা প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহের অধীনে। সোমবার সকাল থেকেই কুয়াশা, তীব্র শীত আর মাঠ ভেজা ছিল। তবে থেমে থাকেনি অনুশীলন। ক্রিকেটাররা জিমনেসিয়ামে সময় কাটিয়েছেন। দুপুরে শেরেবাংলার সবুজ ঘাসে নেমে পড়েন অনুশীলনে। সব বড় দলগুলোই বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত। আর বাংলাদেশের প্রস্তুতি বলতে অনুশীলনের গ-িতেই আবদ্ধ। এ বিষয়ে মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচের কথা বলেন আমরা শেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেললাম। আমরা সবাই ব্যস্ত ছিলাম প্রিমিয়ার লীগ নিয়ে। আমার মনে হয় না এটা কোন প্রভাব ফেলবে। কারণ এখানে আমরা যথেষ্ট সময় নিয়ে অনুশীলন করছি। এছাড়া ওখানে আমরা আগেভাগে গিয়ে দুটি অনুশীলন ম্যাচ খেলব। এরপর অফিসিয়িাল প্র্যাকটিস ম্যাচ আছে। আশা করি প্রস্তুতি ভাল হবে।’ এর পাশাপাশি কন্ডিশন নিয়েও খুব বেশি ভাবতে নারাজ মাহমুদুল্লাহ। অনুশীলন করেই সেটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘আমরা গ্রানাইটে ব্যাটিং করার চেষ্টা করছি। বোলিং মেশিন আছে, পিচগুলোয় ঘাস দেয়া হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি এখানে বসেই ওখানকার মতো কন্ডিশনের পরিস্থিতিটা তৈরি করতে। এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে কন্ডিশন খুব কঠিন হতে পারে। দুই নতুন বলে প্রথম ১০-১৫ ওভার একটু খাঁড়া বাউন্স থাকবে। মনে হয় না এটা এতটা চিন্তার বিষয় আমাদের জন্য। যদি আমরা ইতিবাচক ও আক্রমণাত্মক থাকি, আমরা যদি ভাল ক্রিকেট খেলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি মনে হয় আমরা পারব।’ কিন্তু বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপ কি করার লক্ষ্য নিয়ে যাবে? এর আগে কোচ হাতুরাসিংহে জানিয়েছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার কথা। একই কথা জানালেন মাহমুদুল্লাহও। তিনি বলেন, ‘লক্ষ্যটা আমাদের অবশ্যই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছানো। আমার মনে হয় এটা তখনই সম্ভব যখন আমরা পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে ভাল ক্রিকেট খেলতে পারব।’ তবে এ লক্ষ্য অর্জনের পথে আফগানিস্তান ও স্কটল্যান্ডের মতো দুটি সহযোগী দেশের হুমকি আছে। তবে এজন্য আলাদাভাবে কিছু ভাবছে না বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘ওই রকম বিশেষ টার্গেট নেই। আমরা আমাদের স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব। এই মুহূর্তে সবাই খুব আত্মবিশ্বাসী। আমার মনে হয় প্রথম ম্যাচটা আমরা ইতিবাচক ফল দিয়ে শুরু করতে পারি আমাদের যে লক্ষ্যটা সেখানে পৌঁছতে পারব।’ ২০১২ সালটা ব্যাটিংয়ে দারুণ কাটলেও ২০১৩ ও ২০১৪ সালটা একেবারেই খারাপ যাচ্ছিল মাহমুদুল্লাহর। তবে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে কিছুটা ওপরে ব্যাট করতে নেমে (৪ ও ৫ নম্বরে) রানে ফিরেছেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘মাঝে একটা বছর হয়ত খুব বাজে সময় গেছে। গত জিম্বাবুয়ে সিরিজে আত্মবিশ্বাস পর্যায়টা একটু বেড়েছে। চেষ্টা করব এর ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দলের জন্য বড় কিছু করার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকেই চেষ্টা করছিলাম ফিজিক্যাল ফিটনেসটা একটু বাড়ানোর। আমি ট্রেনারের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর আমার পারফরম্যান্সে ইতিবাচক ফল পাচ্ছি আমি। এই সিরিজে (জিম্বাবুয়ে সিরিজ) ৪ নম্বরে ব্যাটিং করলাম। আমাকে যেখানে দেয়া হবে সেখানেই আমি ব্যাটিং করার জন্য প্রস্তুত আছি।’ নিজের বোলিং নিয়ে পরিকল্পনা আঁটসাঁট বোলিং করা। সাকিবসহ তিনজন বাঁহাতি স্পিনার থাকায় তিনিসহ নাসির হোসেনের ওপর কিছুটা দায়িত্ব বর্তাবে ডানহাতি অফস্পিন করে দলকে সহায়তা দেয়ার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শক্তি ও দুবর্লতা নিয়ে কাজ করতে পারি। যদি আমার আমাদের যোগ্যতা অনুযায়ী খেলতে পারি তাহলে আমাদের ফল আমাদের পক্ষেই আসবে। স্পিন বিভাগে আমি বলব কম্বিনেশনটা ভালই। আমার মনে হয় পেস বোলারদের দায়িত্বটা থাকবে বেশি নতুন দুই বলে। পেসাররা যদি ভাল একটা শুরু এনে দিতে পারে তবে আমরা স্পিনাররা রানের চাকাটা আটকে রাখতে পারব। আমার মনে হয় ব্যাটিংটা আমাদের এই মুহূর্তে খুব ভাল হচ্ছে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা যদি ভাল পারফরমেন্স করে এটা আমাদের দলের জন্য অনেক ভাল। আমার মনে হয় আমাদের ফিল্ডিংটা আরও ভাল করতে হবে।’
×