ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের বর্তমান সন্ত্রাসের চরিত্র

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশের বর্তমান সন্ত্রাসের চরিত্র

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে সন্ত্রাস চলছে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য বেশ বড় ধরনের হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে এর আগে, সিরাজ সিকদার, দেবেন-মতিন, আব্দুল হক, তোহা প্রভৃতি গ্রুপ এবং পরবর্তীতে জাসদের গণবাহিনী রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস চালিয়েছিল। সে সব সন্ত্রাস দমন হয়েছে বা পরবর্তী ’৭৫-এর পনেরো আগস্টে সন্ত্রাসের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করলে অনেক সন্ত্রাসী তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়। ওই সব সন্ত্রাসীকে এবং তাদের সন্ত্রাসের চরিত্র নিয়ে বাংলাদেশে খুব বেশি আলোচনা বা গবেষণা হয়নি। বিশেষ করে ওই সন্ত্রাসীদের বড় অংশ ’৭৫-এর পনেরো আগস্টের সন্ত্রাসের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের ধারাবাহিক ক্ষমতা দখলের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় তারা অনেকে সন্ত্রাস ছেড়ে দেয়। কেউ কেউ ক্ষমতা দখলকারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তথাকথিত রাজনীতিতে জড়িত হয়। কেউ কেউ তাদের তরুণ বেলার অবদানের জন্য সমাজে সম্মানিত হন। আর কেউ কেউ ভুল বুঝতে পেরে পরবর্তীতে সুস্থধারার রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। তাঁদের এই পরবর্তী অবস্থান থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়, তাঁদের সন্ত্রাসের একটি রাজনৈতিক ছদ্মাবরণ ছিল। কোন রাষ্ট্রের বা গোটা পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে যে সকল সন্ত্রাস দেখা যায় অধিকাংশেরই একটা রাজনৈতিক ছদ্মাবরণ থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে রাজনীতি ও ধর্ম এই দুইকে মিশিয়ে ওই সন্ত্রাসের ছদ্মাবরণ দেয়া হয়। সে ছদ্মাবরণগুলোও কিন্তু নানাভাবে ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। যেমন রবার্ট ফিস্কের সঙ্গে লাদেনের সাক্ষাতগুলোর সার্বিক আবহাওয়া ও তাদের কথোপকথন যদি বিশ্লেষণ করা যায় সেখান থেকেও বোঝা যায়। যাহোক, সারা পৃথিবীতে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায় যে সব সন্ত্রাস তার চরিত্র বিশ্লেষণ করা জরুরী হয়ে দাঁড়ায়। চরিত্র বিশ্লেষণ করে সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সেগুলো দমন করা জরুরী। বাংলাদেশের বর্তমান সন্ত্রাসের চরিত্র বিশ্লেষণ করার যোগ্য আমি নই। সাবজেক্টটাও আমার নয়। কারণ, সব দেশেরই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অনেক বড় বিষয়। এ সাবজেক্টের বাইরের মানুষের পক্ষে কখনও বিশ্লেষণ সম্ভব নয়। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যাঁরা প্রধান আছেন, তাঁরা সকলেই যোগ্য মানুষ। তবে কয়েকটি আলোচনায় একত্রে অংশগ্রহণ করার ফলে বর্তমানের র‌্যাবপ্রধান বেনজির আহমেদ সম্পর্কে যতটুকু বুঝেছি তাতে বলতে পারি, তিনি অনেক যোগ্য মানুষ, তিনি বর্তমানের যে সন্ত্রাস দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এর চরিত্র ও দমনের একটি রূপরেখা তৈরি করার যোগ্যতা রাখেন। বর্তমান বিশ্বে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা কিন্তু গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সরকারের কর্মকা-ের দিকে একটু গভীরভাবে নজর দিলে বোঝা যায়। যেমন ভারতে এই প্রথম একজন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এ্যাডভাইজার করা হয়েছে। ভারতের বর্তমান ন্যাশনাল সিকিউরিটি এ্যাডভাইজার অজিত ডোভালের সঙ্গে যাঁদের আলাপ আছে বা যাঁরা তাঁর সম্পর্কে জানেন, তাঁরা জানেন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর তিনি কী গভীর জ্ঞান রাখেন। ভারতের সেভেন সিস্টার, কাশ্মীর থেকে শুরু করে যতগুলো রাজ্যে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সঙ্কট আছে বা মাঝে মাঝে দেখা দেয় সবখানেই তিনি সাফল্যের সঙ্গে তাঁর যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। বর্তমানে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এ্যাডভাইজার হিসেবে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান ঘটনার পর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন এবং এ বিষয়ে তাঁর রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। কারণ ভারত ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অনেক সময়ই একই বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তাই বাংলাদেশে বর্তমানে যে সন্ত্রাস অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সন্ত্রাসের চরিত্র বিশ্লেষণের যোগ্য ব্যক্তি এ সাবজেক্টের এই মাপের ব্যক্তিরা। তারপরেও একজন সাংবাদিক হিসেবে সাধারণ চোখে এই সন্ত্রাসের যে চরিত্রগুলো দেখতে পাই তার ভিতর অন্যতম হলো, বাংলাদেশের এই সন্ত্রাসের চরিত্র সহায়ক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর মতো নয়। বরং বর্তমান বাংলাদেশের সন্ত্রাসী জোটের চরিত্র, আল কায়েদা (তালেবান), আইএস, ব্রাদারহুড, বোকো-হারাম এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর মতো। অর্থাৎ এদের সন্ত্রাসী কাজকে এরা রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মোড়ক দিয়ে আবৃত করে রাখছে। এদের উদ্দেশ্যও স্পষ্ট, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে তছনছ করে দিয়ে, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেÑ হয় রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা দখল না হয় রাষ্ট্রকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে বিভিন্ন এলাকা, বিভিন্ন গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে নেয়া। বাংলাদেশকে এই অবস্থায় নিয়ে যাবার একটা প্রচেষ্টা স্বাধীনতার পর থেকেই চলছে। লেখার শুরুতে ’৭৫ পূর্ববর্তী যে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর নাম উল্লেখ করেছি তাদেরও ইচ্ছে কিন্তু এমনটি ছিল। এ সব কিছুর পেছনে ছিল বেশ কয়েকটি বিদেশী শক্তি, যাদের মুখ হিসেবে কাজ করে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনী আইএসআই। ’৭৫ পূর্ববর্তী সময়ে যতগুলো দেশ এ কাজে সহায়তা করত বর্তমান পরিবর্তিত পৃথিবীতে তারা সকলে করে না। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে পাকিস্তানী সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর অর্থের পরিমাণ অঢেল হয়েছে। অন্যদিকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ সময়ে সন্ত্রাসীরা নামে-বেনামে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে থাকায় তাদের হাতে এখন প্রচুর অর্থ। এই দুই অর্থই কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান সন্ত্রাস পরিচালনা করছে। এই সন্ত্রাস যারা পরিচালনা করছে তাদের সব থেকে বড় সাফল্য তারা মিডিয়ার বড় অংশকে দিয়ে বলাতে সমর্থ হচ্ছে এটা রাজনৈতিক আন্দোলন। মিডিয়া বার বার এ কথা বলাতে বর্তমান সন্ত্রাস যে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে ধ্বংস করে আইএস, বোকো-হারাম প্রভৃতি সন্ত্রাসী গ্রুপের মতো তারাও দেশকে তছনছ করে দেশের বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় এই বিষয়টি আদৌ সামনে আসছে না বা মানুষকে বুঝতে দেয়া হচ্ছে না। এখানে অবশ্য একটি বড় ভূমিকা পালন করছে তথাকথিত সুশীল নামক একটি শ্রেণী যারা বার বার মিডিয়ায় এই সন্ত্রাসকে গণতান্ত্রিক আন্দোলন বলছে। এই সুশীল বেশ ধরে যারা এ কথাগুলো বলছে তাদের অতীত পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ নিলে জানা যাবে, এদের কেউ কেউ কোন না কোনভাবে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো (যাদের নাম লেখার শুরুতে উল্লেখ করেছি) তাদের সঙ্গে জড়িত ছিল। আর একটি অংশ ১৫ আগস্ট সন্ত্রাসের মাধ্যমে যারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে পরবর্তীতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাদের সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন প্রশ্ন আসতে পারে মিডিয়ার এই বড় অংশ কেন সন্ত্রাসী কর্মকা-কে রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে প্রচার করার সুযোগ দিচ্ছে, এমনকি অতিরিক্ত সুযোগ দিচ্ছে। এর উত্তর দিয়েছিলেন জুনিয়র বুশ তাঁর ইউনিয়ন ভাষণে। সেখানে তিনি বলেছিলেন, মানি ইজ দি ব্লাড অফ টেররিজম। আসলে অর্থই কিন্তু সন্ত্রাসের মূল রক্ত। অর্থই সন্ত্রাসকে বাঁচিয়ে রাখে। এরও কারণ আছে, সন্ত্রাস পৃথিবীতে সব থেকে লাভজনক ব্যবসার ভিতর একটি। কারণ, প্রতিটি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকে অস্ত্র চোরাচালান, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচারের মতো বিশাল অঙ্কের লাভের অবৈধ ব্যবসা। আর এ কারণেই কিন্তু সন্ত্রাসীরা রাজনৈতিক দলের নামে বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করতে চায় এবং আন্তর্জাতিক অস্ত্র চোরাচালানি, মাদক চোরাচালানি এই সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে অঢেল অর্থ ব্যয় করে। যার প্রমাণ এ দেশের মানুষ দেখেছে ২০০১-এ জামায়াত-বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে কী বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছিল। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বড় অংশ এবং প্রশাসনের একটি অংশকে কিনে ফেলা হয়েছিল। তারপরে পুরো টেররিজমের মাধ্যমে নির্বাচন করে জামায়াত-বিএনপি জোটকে ক্ষমতায় বসানো হয়। তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরে চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার ও বগুড়ায় আড়াই লাখ পিস গুলি উদ্ধার থেকে প্রমাণিত হয় তখন দেশটা অস্ত্র চোরাচালানের অভয়ারণ্য হয়েছিল এবং সেগুলো যে হাওয়া ভবন থেকে তারেক জিয়া নিয়ন্ত্রণ করত তার প্রমাণ এখন মিলছে দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিতর দিয়ে। এছাড়া যদি কোনদিন বাংলাদেশে শক্তিশালী সরকার আসে তারা তখন তদন্ত করে দেশবাসীকে জানাতে পারবে ওই একই ভবনের নেতৃত্বে কী পরিমাণ মাদক তখন পাচার হয়েছে বাংলাদেশের পথে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, আফগানিস্তান প্রভৃতি জায়গায়। তাই বর্তমানে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ধ্বংসের জন্যে যে সন্ত্রাসীরা কাজ করছে এদের অর্থের পরিমাণ বিপুল। এই অর্থের একটি বড় অংশ তারা বিনিয়োগ করেছে মিডিয়ায়। তাছাড়া ভারতীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ আলফাও (যা বাংলাদেশে উলফা নামে পরিচিত) বাংলাদেশের মিডিয়ায় বিনিয়োগ করেছে যা আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। বাংলাদেশের মিডিয়ার একটি অংশ যে সন্ত্রাসকে রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে প্রচার করার এবং এ বিষয়ে অপপ্রচার করার সুযোগ দিচ্ছে, এটাও তার একটি বড় কারণ। এ ছাড়া আর যে বিষয়টি কাজ করছে তা হলো মনোজগত গঠন। বাংলাদেশ ১৯৭৫-এর পনেরো আগস্টের পর থেকে একটি বিভ্রান্তির ভিতর দিয়ে এগিয়ে চলছে, শিক্ষা, সংস্কৃতি সবখানে বিভ্রান্তিটাকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। তাই বিভ্রান্তিকবলিত মানুষের সংখ্যাও কম নয়। বাংলাদেশে এই উপাদানগুলো বর্তমানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ধ্বংসকারী সন্ত্রাসে সহায়তা করছে। অন্যদিকে দেশের মিডিয়ার একটি অংশ, তথাকথিত সুশীলদের একটি অংশ এবং আন্তর্জাতিক চোরাচালানিসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এই সন্ত্রাসকে রাজনৈতিক মোড়ক দেবার জন্য চেষ্টা করছে। কিন্তু তারপরেও গত দুই সপ্তাহের বেশি সময়ে কিছুটা হলেও সাধারণ মানুষ এ সত্য বুঝতে পেরেছে, যে কাজগুলো চলছে সবই সন্ত্রাসী কাজ। এ কাজগুলোর ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে, বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা অবধি হুমকির মুখে পড়ে গেছে। পোড়া মানুষের গন্ধে দেশের বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। কিন্তু দেশের এ অবস্থায় কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তার প্রথমটি হলো, এ ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের যে মাপে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত তা দেশের মানুষ এখনও দেখতে পায়নি। প্রধানমন্ত্রী সংসদে তাঁর ভাষণে বলেছেন, খালেদা জিয়া মানুষ খুন করছেন, খুনীর মতোই তাঁর বিচার হবে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে যা চলছে তা শুধু মানুষ খুন নয়, দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা। সরকারের বিবেচনায় খালেদা জিয়ার কাজ যদি শুধু মানুষ খুন হয়, তাহলে ধরে নেয়া হবে খালেদা যা করছেন সরকার তা এখনও উপলব্ধি করতে পারেনি। সরকার এখনও বর্তমানে খালেদার নেতৃত্বে যে সন্ত্রাস চলছে তার চরিত্র উপলব্ধি করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান সরকারকে মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীর বিচার এই দুটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসের বিচার তারা করেছেন (কিছু বিচার চলছে)। তাই ঐতিহাসিকভাবে তাদের ঘাড়ে এখন বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করে সুস্থ রাজনীতি প্রতিষ্ঠা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ নিশ্চিত করার দায়িত্ব। এ কাজ তারা কিভাবে করবেন, যেহেতু তারা রাজনীতিবিদ, অতএব আমাদের থেকে তারা ভাল বোঝেন। তবে, একটি বিষয়ে এখন তাদের তরফ থেকে জাতিকে সজাগ করার সময় এসে গেছে তাহলো, বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করে একটি সুস্থ দেশে পরিণত করার শেষ যুদ্ধে এখন বাংলাদেশ। তাই মুক্তিযুদ্ধে যদি নয় মাস এ দেশের মানুষ কষ্ট স্বীকার করে থাকে তাহলে এই সন্ত্রাস মুক্তির যুদ্ধে দেশের মানুষকে অন্তত কিছুদিনের জন্য হলেও কষ্ট স্বীকার করতে হবে। অন্যদিকে সকল সমালোচনাকে পায়ে ঠেলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, রাজনৈতিক দলের নামে যারা সন্ত্রাস করছে, মানুষ পুড়িয়ে কাবাব খাচ্ছে তাদের রাজনৈতিক অধিকার থাকতে পারে না। রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতেই হবে। শুধু সন্ত্রাসী বিবেচনায় তাদের আইনের পথে মোকাবেলা করতে হবে। তখন এই সন্ত্রাসীদের দমনের কাজটি আরও সহজ হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সমাজকে ভাবতে হবে, যারা বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে তাদের সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত হবে? [email protected]
×