ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদাকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

খালেদাকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক  শাস্তি দাবি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধ এবং ছাত্রদলের ডাকা হরতালের বিরুদ্ধে বুধবার রাজধানীর রাজপথে সরব ছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগরের পাড়া-মহল্লা, থানা-ওয়ার্ডে দিনভর সতর্ক অবস্থানে থেকে অবরোধ-হরতালবিরোধী মিছিল-সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে তারা। এসব কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, মানুষের রক্তে হাত থেকে মাথা পর্যন্ত রঞ্জিত হয়েছেন খালেদা জিয়া। অবরোধ ও হরতালের নামে সব নাশকতা-সন্ত্রাস এবং মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার জন্য বিএনপি চেয়ার্পারসন খালেদা জিয়া দায়ী। হুকুমের আসামি হিসেবে খালেদা জিয়াকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য তাঁরা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। বরাবরের মতো হরতাল-অবরোধবিরোধী এসব অবস্থানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কসহ আশপাশের এলাকা। সকাল থেকে সেখানে আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন মিছিল-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। বিভিন্ন সংগঠনের হরতালবিরোধী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাও ছিল উল্লেখ করার মতো। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সম্মিলিত আওয়ামী সমর্থক জোট আয়োজিত হরতাল-অবরোধবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, হরতাল-অবরোধের নামে মানুষের রক্তে খালেদার পা থেকে মাথা পর্যন্ত রঞ্জিত হয়ে গেছে। তাঁকে গ্রেফতার ছাড়া কোন উপায় নেই। অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এটি জনগণের দাবি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ‘বোমা মারার নেত্রী ও বোমার কারিগর। তাঁর নির্দেশে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা বোমা বানিয়ে মানুষের ওপর মারে। টাকা চুরি থেকে শুরু করে সব মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা অপেক্ষা করছে। এ সাজা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া বলেন তিনি না-কি ‘অবরুদ্ধ’। কেমন অবরুদ্ধ? সোনারগাঁ হোটেল থেকে তিনি খাবার নিয়ে খান। খাট-বালিশ নিয়ে ঘুমান, আর ফাঁকা আওয়াজ দেন। এভাবে চলতে দেয়া যায় না। তাঁকে সাজা দিতে হবে। পাড়া-মহল্লায় পাহারা দিয়ে ও বোমাবাজদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে পুরস্কার নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, অবরোধ-হরতালের নামে সন্ত্রাস-নাশকতার প্রতিটি ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়াই দায়ী। লন্ডন থেকে আইএস জঙ্গী কানেকশনে হরতাল-অবরোধের নামে বর্বরতা চলছে। এ বর্বরতা দমনে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। মানুষ হত্যা করে দাবি আদায়ের যে সংস্কৃতি চালু করার চেষ্টা হচ্ছে, আমরা তা করতে দেব না। তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান তামাশা করতে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে গিয়েছিলেন। এভাবে যারা তামাশা করতে বার্ন ইউনিটে যাবেন তাদের শায়েস্তা করতে হবে। সংগঠনের চেয়ারম্যান আবদুল হক সবুজের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- এম এ আজিজ, ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, আওলাদ হোসেন, শাহে আলম মুরাদ, সহিদুল ইসলাম মিলন প্রমুখ। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করতেই খালেদা জিয়ার নাশকতা- সাহারা ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করার জন্যই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করছে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জঙ্গীদের মদদদাতা। খালেদা জিয়া এখন আতঙ্কের নেত্রী- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি চেয়ার্পারসন খালেদা জিয়া এখন জনসাধারণের কাছে আতঙ্ক ও ভয়ের নেত্রী হিসেবে পরিণত হয়েছেন। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। অযৌক্তিক হরতাল ও অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’ শীর্ষক এই মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ। হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার অবরোধে জনগণ সাড়া দেয়নি। এখন আবার হরতাল ডেকে জনগণকে তারা ভয় দেখাতে চান।
×