ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সব ম্যাচেই ভাল খেলতে চাই

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

সব ম্যাচেই ভাল খেলতে চাই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দেশের মাটিতে প্রস্তুতি ক্যাম্প শেষ। শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনও। এবার শনিবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার বিমানে চড়ে বসার পালা। উদ্দেশ্য, মিশন; বিশ্বকাপ ক্রিকেট। এবারের মিশনেও বাংলাদেশ দল থেকে চাওয়া, দল যেন দ্বিতীয় রাউন্ডে অর্থাৎ কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। বাংলাদেশ অধিনায়কও বলে দিয়েছেন, ‘চেষ্টা করব দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার।’ বিশ্বকাপ উপলক্ষে দেশের মাটিতে বৃহস্পতিবার সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাশরাফি যে লক্ষ্য, পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তার সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো। প্রশ্ন ॥ চার বছর আগে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ হয়েছে। খেলতে পারেননি ... মাশরাফি বিন মর্তুজা ॥ চার বছর আগের কথা বলে লাভ নেই। এখন নতুন বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। শুরুটা ভাল করতে চাই। আগেরটা নিয়ে কোন চিন্তা নেই। এবারেরটা ভাল করতে চাই। প্রশ্ন ॥ লক্ষ্য কী? মাশরাফি ॥ আশার তো শেষ নেই। পারলে তো শেষ পর্যন্ত যেতে চাই। আমরা চেষ্টা করব দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। এটাও অনেক কঠিন কাজ। আমাদের ভাল করতে হবে। শুরুটা ভাল করতে হবে। তাহলে সবাই একটা প্লাটফর্ম পাবে। এরপর থেকে বড় ম্যাচগুলো আসবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ। শুরুটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন ॥ সামর্থ্য কতটুকু? মাশরাফি ॥ দলের সামর্থ্য খুবই ভাল। এ ধরনের টুর্নামেন্টে মানসিক শক্তির খুব প্রয়োজন হয়। আমার মনে হয় না স্কিলের দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। আসলে এই পর্যায়ে যে সবচেয়ে বেশি চাপ নিতে পারবে সে তত বেশি উপকারী হবে। আমাদের সামর্থ্য আছে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার এবং ভাল খেললে তা সম্ভব। প্রশ্ন ॥ কোন কোন দলকে হারানোর টার্গেট আছে? মাশরাফি ॥ সত্যি কথা বলতে জয়ের জন্যে আমি নির্দিষ্ট কোন দলের দিকে তাকিয়ে নেই। নির্দিষ্ট কোন দলকে টার্গেট করলে দলের উপর অনেক চাপ থাকবে। আমাদের গ্রুপে যারা আছে তাদের প্রত্যেককেই আমরা বিভিন্ন সময়ে হারিয়েছি। এমন না যে আমাদের কন্ডিশনে জিতেছি। ওদের কন্ডিশনেও আমরা জিতেছি। ইংল্যান্ডকে ওদের মাটিতে, অস্ট্রেলিয়াকে কার্ডিফে হারিয়েছি। কোন নির্দিষ্ট দল নিয়ে না, প্রতিটি দলকে নিয়ে কাজ করছি। আমাদের বেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারলে সব দলকেই হারাতে পারব। তবে শুরুটা ভাল মতো করতে পারলে সব দলের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামতে পারব। প্রশ্ন ॥ নেতৃত্ব দেয়া কতটা চ্যালেঞ্জের? মাশরাফি ॥ বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেয়া সব সময়ই কঠিন। ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে না পারলে অধিনায়কত্ব করা কঠিন হয়ে যায়। আমি শেষ পাঁচটি ম্যাচ করেছি এবং জিতেছি। কিন্তু এখনও ওই জায়গা তৈরি হয়নি। অবশ্যই বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে ভাল না হলে খারাপ লাগবে। প্রশ্ন ॥ ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে জিতবই, এমন আত্মবিশ্বাস ছিল। এবার আছে? মাশরাফি ॥ আসলে ওটা আপনারা কার কাছ থেকে শুনছেন তা তো জানি না। আসলে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে কোন দলকে হারানোর। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড তাদের মাটিতে খেলছে বলে তা না। আসলে ওদেরকেও হারানো সম্ভব। আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেকটি ম্যাচেই জয় পাওয়া সম্ভব। এ জন্য কিছুটা ভাগ্যেরও দরকার। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। প্রশ্ন ॥ ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে আশা? মাশরাফি ॥ আসলে একটা আশার কথা যে অস্ট্রেলিয়াতে খেলা এখন সবাই দেখছে। টেস্টে এখন প্রায় ৪৫০ রানের মতো হচ্ছে এবং ওয়ানডেতে ২৬০-৭০ হচ্ছে। এটা ভাল বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে। বোঝা যায় গ্রীষ্মের সময়ও অস্ট্রেলিয়ার উইকেট বেশ ভাল। আমাদের ব্যাটসম্যানদের প্রথম দিকে একটু কষ্ট হবে। তবে উইকেটে থাকলে যে পরে রান হবে, সেটা বোঝা যায়। প্রশ্ন ॥ আপনার দৃষ্টিতে বিশ্বকাপের মঞ্চে বাংলাদেশের কারা ভাল খেলতে পারে? মাশরাফি ॥ ব্যাটিংয়ের কথা বললেও বলব মুশফিক আছে। তার ক্ষমতা আছে। সে বেশকিছুদিন ধরে ভাল পারফর্মেন্স করে একটা জায়গা করে নিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি বিশ্বের ভাল ভাল ব্যাটসম্যানের সঙ্গে মুশফিকের লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে। সাকিবের বোলিংয়ের কথা অবশ্যই বলতে হয়। আমার বিশ্বাস পৃথিবীর যে কোন উইকেটেই সাকিব ভাল বল করতে পারে। তার কাছে এটা কোন বিষয় নয়, উইকেটে স্পিন হয় কিনা। এছাড়া রিয়াদ ফর্মে আসছে। কেউ সেরা দশে আসবে এটা তার ব্যক্তিগত গোল থাকতে পারে। ওই রকম চিন্তা ভাবনা নিয়ে সে যেতে পারে। আমার ভাবনা কেউ ২০ এর বেশি না আসুক কিন্তু দলটা ভাল জায়গায় যাক এটা আমি চাই। এতে আমাদের দেশের মানুষও খুশি হবে; আমরাও খুশি হব। কোন নির্দিষ্ট খেলোয়াড় দশে আছে, আমার মনে হয় না এটা তার ক্যারিয়ারেও সাহায্য করবে। কারণ পারফর্মেন্স এমন একটা জিনিস, সেটা ‘আপ-ডাউন’ করবেই। হয় তো দেখা যাবে বিশ্বকাপে সে সেরা পারফর্মার। কিন্তু পরবর্তী ৬ মাসে আর কিছুই করতে পারল না। কিন্তু আমরা দলটাকে যদি একটা স্টেজে নিতে পারি সেটা আজীবন মানুষ বলবে এবং ইতিহাস হয়ে থাকবে। আমার কাছে মনে হয় এটাই গুরুত্বপূর্ণ, কোন নির্দিষ্ট খেলোয়াড়দের বিশেষ কিছু করার চেয়ে দলের ভাল ফল করা। প্রশ্ন ॥ স্কটল্যান্ড নিয়ে ভাবনা? মাশরাফি ॥ আমাদের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের খেলা পঞ্চম ম্যাচে। তার আগে ওরা ৪টা ম্যাচ খেলবে। তখন ওদের দেখার সুযোগ হবে। বিশ্বকাপের শুরুতে আমাদের পরিকল্পনাগুলো আফগানিস্তানকে নিয়ে করা উচিত। প্রত্যেকটা ম্যাচে আমরা ৩ থেকে ৪ দিন করে সময় পাব। এর মাধ্যমে প্রত্যেকটা দলকে নিয়ে ভাবনা চিন্তার সময় পাব। স্কটল্যান্ডকে নিয়ে অবশ্যই একটা পরিকল্পনা আছে, যেটা ম্যানেজমেন্ট করছে। আমাদের দিকে সেই পরিকল্পনাগুলো এখনও আসেনি। কেননা আমাদের প্রথম ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে; আমরা এগুলো নিয়েই আসলে ভাবছি। অবশ্যই স্কটল্যান্ডের সঙ্গে মাঠে নামার আগে তাদের নিয়ে পরিকল্পনা করব।
×