ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রস্তুতি পর্ব শেষ, শনিবার অস্ট্রেলিয়া যাত্রা মাশরাফি বাহিনীর

তিনটি ম্যাচ জেতার সামর্থ্য রাখে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

তিনটি ম্যাচ জেতার সামর্থ্য রাখে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে হলে চারটি ম্যাচ জিততে হবে। তিনটি ম্যাচ জিতলেও আশা থাকবে। সেক্ষেত্রে পয়েন্ট, রানরেট হিসেবের মধ্যে পড়তে হবে। বাংলাদেশ কোচ হাতুরাসিংহে মনে করছেন, ‘তিনটি ম্যাচ জেতার সামর্থ্য আছে আমাদের।’ সেই সামর্থ্য নিয়েই শনিবার অস্ট্রেলিয়ার বিমানে চড়বেন বাংলাদেশ কোচ ও ক্রিকেটাররা। দেশের মাটিতে প্রস্তুতি ক্যাম্পের সমাপ্তি ঘটে গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ব্রিসবেনে শুরুতে প্রস্তুতি ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ। সেখানে অস্ট্রেলিয়া একাদশ নামে দলের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। এরপর সিডনিতে বিশ্বকাপের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপের মূল মিশনে নামবে মাশরাফিবাহিনী। শুরু হয়ে যাবে কোচের ভাবনার সঙ্গে সমন্বয় ঘটানোর পালাও। আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড যে বাংলাদেশের টার্গেটে আছে, তা বোঝাই যাচ্ছে। তাহলে আরেকটি দল কোনটি, ইংল্যান্ড কিংবা শ্রীলঙ্কা? হাতুরাসিংহে যখন কথাগুলো বৃহস্পতিবার দেশের মাটিতে সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, তখন উপস্থিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও। জবাবটি মাশরাফিই দিলেন, ‘সত্যি কথা বলতে জয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোন দলের দিকে তাকিয়ে নেই। নির্দিষ্ট কোন দলকে টার্গেট করলে দলটির উপর অনেক চাপ থাকবে। আমাদের গ্রুপে যারা আছে তাদের প্রত্যেককেই আমরা বিভিন্ন সময়ে হারিয়েছি। এমন না যে আমাদের কন্ডিশনে জিতেছি। ওদের কন্ডিশনেও আমরা জিতেছি। ইংল্যান্ডকে ওদের মাটিতে, অস্ট্রেলিয়াকে কার্ডিফে হারিয়েছি। কোন নির্দিষ্ট দল নিয়ে না প্রতিটি দলকে নিয়ে কাজ করছি। আমাদের বেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারলে সব দলকেই হারাতে পারব। তবে শুরুটা ভাল মতো করতে পারলে সব দলের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামতে পারব।’ হাতুরাসিংহে অবশ্য একটি একটি করে ম্যাচ নিয়েই ভাবতে চাইছেন। বলেছেন, ‘আমার তো ইচ্ছে করে শেষ পর্যন্ত যাওয়ার। কিন্তু আমি বাস্তবতা কি তা নিয়ে ভাবছি। আমরা প্রথমত একটি একটি করে ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করব, তারপর লক্ষ্য থাকবে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া; তারপর আবারও একটি একটি করে ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হবে। যে কোন দলের বিপক্ষে খেলা হতে পারে। আমরা জানি, দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জন্য আমাদের অন্তত চারটি ম্যাচ জিততে হবে। আমাদের অন্তত তিনটি ম্যাচ জয়ের সামর্থ্য আছে। তারপর যদি চারটি জিতে যাই, তবে আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠব। এখন আমাদের দৃষ্টি পুরোপুরি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের ওপর।’ বিশ্বকাপ উপলক্ষে প্রতিটি দলই এখন ম্যাচ খেলছে। কিন্তু জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্রিকেট খেলেনি বাংলাদেশ দল। তা কোন প্রভাব পড়বে? হাতুরাসিংহে উল্টো ভালই দেখছেন, ‘এটা একদিক থেকে ভালই হয়েছে। কারণ যারা অনেক দিন ধরে খেলছে তাদের তুলনায় ফ্রেশ হয়ে খেলতে পারব আমরা।’ প্রস্তুতিতেও খুশি কোচ, ‘যদি খেলোয়াড়ের সামর্থ্যরে কথা বলেন, তবে হ্যাঁ; আমি তাদের প্রতিভা এবং প্রয়োগ ক্ষমতা নিয়ে খুশি। গত ৬ মাসে তারা যে ধরনের উন্নতি করেছে এবং দক্ষতার উন্নয়নে কাজ করেছে তা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। সবার দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রতিজ্ঞা অনেক দৃঢ়। আমাদের স্কিল অনুশীলন নিয়ে আমি খুশি। খেলোয়াড়রাও তাদের অনুশীলন প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিবাচক।’ বিশ্বকাপ নিয়ে আত্মবিশ্বাসীও কোচ, ‘যে কোন দলের জন্য আত্মবিশ্বাসই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি, সেটা যে কোন সিরিজে এবং অবশ্যই বিশ্বকাপেও। টুর্নামেন্টে আমরা তখনই ভাল খেলব যখন আমাদের আত্মবিশ্বাসটা দৃঢ় হবে।’ আফগানিস্তান নিয়ে বিশেষভাবে ভাবছেন হাতুরাসিংহে। তবে প্রতিটি ম্যাচকেই সমান গুরুত্ব দিচ্ছেন, ‘প্রতিটি ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখনকার মনোযোগ প্রথম ম্যাচের উপর। তবে প্রতিপক্ষ নিয়ে নয়; আমরা ভাবছি আমাদের দক্ষতা, আমাদের খেলার পরিকল্পনা নিয়ে। আমরা যদি আমাদের সেরাটা খেলতে পারি তবে আমাদের চেয়ে দক্ষতায় পিছিয়ে থাকা দলকে আমরা হারাতে পারব। তবে যারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে তাদের হারাতে হলে তাদের বাজে সময়ের আশা করতে হবে এবং নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে। তামিমকে শুরু থেকেই পেতে চান কোচ, ‘তামিম ইনজুরি থেকে সুস্থ হচ্ছে। সে আমাদের পরিকল্পনায় আছে। আমরা প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার আগে সে হয় তো দুটি ম্যাচ খেলতে পারবে। (এনামুল হক) বিজয় এবং সৌম্যও (সরকার) খুব মেধাবী ক্রিকেটার। সুতরাং তারা যত দ্রুত কন্ডিশনের সঙ্গে মিলে যেতে পারবে, তত দ্রুত আমরা সাফল্যের আশা করতে পারব।’ তবে তামিম শতভাগ ফিট না হলে এ ওপেনারকে মাঠে নামানো হবে না বলেও জানিয়েছেন কোচ, ‘তামিম শতভাগ ফিট না হলে তাকে খেলানো হবে না।’ সবকিছুই যে কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে, ব্রিসবেন ক্যাম্পের পরিকল্পনা কী হবে? এমন প্রশ্নেই বুঝিয়ে দিয়েছেন কোচ, ‘সেখানে আমরা চেষ্টা করব কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য এবং কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য। ব্রিসবেনে দুটি ম্যাচ খেলব। তখনই বোঝা যাবে আমরা সেখান থেকে কতটা আত্মবিশ্বাস নিতে পারছি।’
×