ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আবারও সেই ওমানেই আশাভঙ্গ

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

আবারও সেই ওমানেই আশাভঙ্গ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আশাভঙ্গের বেদনা যে কেমন, সেটি বৃহস্পতিবার মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন জিমি-চয়ন-অসীম-ক্ষিসা-খোরশেদরা। জয়ের একেবারে কাছাকাছি এসে টাইব্রেকারে হার। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে হেরে ওয়ার্ল্ড হকি লীগের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন ছত্রখান হয়ে গেল বাংলাদেশের। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ওমান টাইব্রেকারে ২-০ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ৩-৩ গোলে। এই ম্যাচে জিতলে বাংলাদেশ সেমির চারদলের মধ্যে সেরা তিনদলের একটিতে পরিণত হয়ে তৃতীয় পর্বে খেলার সুযোগ পেত। সেখানে আরও বেশকিছু ম্যাচ সুযোগ পেত তারা। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তৃতীয় পর্বে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করল তারা। উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড হকি লীগের প্রথম রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। এ আসরে কখনই দ্বিতীয় পর্বের গ-ি পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার এ আসরের জন্য বাংলাদেশ দল সাভারের বিকেএসপিতে ৪৫ দিন অনুশীলন করে। বাংলাদেশই ম্যাচে প্রথমে এগিয়ে যায় গোল করে। ৪ মিনিটে ফরহাদ শিটুলের গোল (১-০)। ১২ মিনিটে সমতা আনেন ওমানের জান্দাল (১-১)। ২৮ মিনিটে আনোয়ারের গোলে এগিয়ে যায় ওমান (২-১)। তবে বেশি সময় পিছিয়ে ছিল না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ৩০ মিনিটে পুস্কর ক্ষিসা মিমো সমতায় ফেরান বাংলাদেশকে (২-২)। ম্যাচের তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত ম্যাচের স্কোর ছিল ২-২। ৪৯ মিনিটে বাংলাদেশকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন যুবায়ের হোসেন নিলয়। এরপরই খেলার মোড় ঘুরে যায়। সর্বনাশ হয়ে যায় বাংলাদেশের। ৪৪ মিনিটে শিটুল এবং ৫২ মিনিটে সারোয়ার হলুদ কার্ড পেলে বাংলাদেশ বাকি সময় খেলে ৯ জন নিয়ে! সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৫৭ মিনিটে ম্যাচে ফিরে আসে ওমান। নির্ধারিত সময়ে হারতে যাওয়া ওমানকে বাঁচান আল হাসানি (৩-৩)। তার ওই গোল ম্যাচ টেনে নেয় পেনাল্টি শূটআউটে। ভাগ্য নির্ধারণী ওই পর্বে জয়ী দল হয় তারাই। এ হারে শুক্রবার বাংলাদেশকে খেলতে হবে অষ্টম থেকে অষ্টম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের মধ্যকার চতুর্থ কোয়ার্টার ফাইনালের পরাজিত দল। এর আগে একই দিন প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে মালয়েশিয়া ১০-১ গোলে মেক্সিকোকে এবং দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে জাপান ৫-০ গোলে ইউক্রেনকে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে। শনিবার প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে মালয়েশিয়া ও জাপান। বৃহস্পতিবারের কোয়ার্টারের তৃতীয় ম্যাচে ওমানের বিরুদ্ধে জয়ের আশা নিয়েই মাঠে নেমিছিল কৃষ্ণ কুমার বাহিনী। কেননা, ওয়ার্ল্ড হকি র‌্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের র‌্যাঙ্কিং অনেকটাই কাছাকাছি। ওমান ২২, বাংলাদেশ ৩০। হেড টু হেডে সাম্প্রতিক দ্বৈরথে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সঙ্গে লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল অবশ্য ওমানই। তাদের কাছে ২০১৪ এশিয়ান গেমসের সপ্তম স্থান নির্ধারণী খেলায় ৩-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ, ২০১৩ এশিয়া কাপেও হেরেছিল ৪-২ গোলে। তবে ২০১৪ মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমস হকির বাছাইপর্বের ফাইনালে ওমানকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত জুনিয়র এএইচএফ কাপ হকিতে গ্রুপ পর্বে ওমানকে ৭-০ এবং ফাইনালে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই দলের একাধিক খেলোয়াড় আছেন বর্তমান জাতীয় দলে। কাজেই সে ম্যাচের দুই জয়ের অনুপ্রেরণা নিয়েই কৃষ্ণরা বৃহস্পতিবার মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু টাইব্রেকারে হেরে গিয়ে গিয়ে ‘বৃহস্পতি তুঙ্গে’ হলো না তাদের! এই আসরে এর আগে পুল ‘বি’ তে নিজেদের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ০-৫ গোলে শোচনীয়ভাবে হারে বাংলাদেশ। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী জাপানের কাছে ১-৫ গোলে হেরে শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোকে ৬-১ গোলে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল।
×