ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রনকির নতুন ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

রনকির নতুন ইতিহাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাত নম্বরে নামা কাউকে কী পুরোপুরি ব্যাটসম্যান বলা যায়? বাস্তবতা বলে উকেটরক্ষক, অলরাউন্ডার বা বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে দু-চার ঘা মারতে পারেন, এমন কারও জায়গা এটি। অথচ সেখানেই ব্যাট হাতে অবিশ্বাস্য কা- করে বসলেন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার লুক রনকি। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ওয়ানডেতে খেললেন অপরাজিত ১৭০ রানে মহাকাব্যিক ইনিংস, সাত নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়লেন নতুন রেকর্ড। এতদিন যা ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দখলে (১৩৯), ভারত সেনাপতি ২০০৭ সালে আফ্রিকান একাদশের বিপক্ষে এশিয়ান একাদশের হয়ে গড়েছিলেন সেটি। সাত বছর পর সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে নিজের নামটি লেখালেন ৩৪ ছোঁয়া (শুক্রবার, ৩৩ বছর ২৭৫ দিন) কিউই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান! ডুনেডিনে ঘোরতর বিস্ময় উপহার দিয়েছেন রনকি। ২০০৮-এ অভিষেক হলেও দলে নিয়মিত হয়েছেন ২০১৩ সাল থেকে। এই ম্যাচ বাদে আগের ৩৫ ওয়ানডেতে ছিল না কোন সেঞ্চুরি। কাল ব্যাটিংয়ে নামলেন বিপর্যয়ের সময়, যখন ১শ’র মধ্যে শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ধুঁকছে নিউজিল্যান্ড। এক লহমায় তারকা হওয়ার জন্য আদর্শ সময়টাকেই বেছে নিলেন ডানহাতি ক্রিকেটার। আবির্ভূত হলেন খুনে মেজাজে, শ্রীলঙ্কান বোলারদের কচুকাটা করে গড়লেন নতুন রেকর্ড। ৩৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি, ৭৪ বলে জীবনের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি, আর ১৫০-এ পৌঁছাতে লাগল মোটে ৯২টি ডেলিভারি। শেষ পর্যন্ত ৯৯ বলে অপরাজিত থাকলেন ১৭০ রানে। চার ১৪ ও ছক্কা ৯টি। কেবল সাত নম্বরে নেমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ডই নয়, সঙ্গী হয়েছেন আরও অনেক অর্জনের। গ্রান্ট ইলিয়টকে নিয়ে গড়েছেন ষষ্ঠ উইকেট জুটির নতুন রেকর্ড (২৬৭*), ষষ্ঠ উইকেটে আগের সর্বোচ্চ রান ছিল মাহেলা জয়াবর্ধনে ও মহেন্দ্র সিং ধোনির ২১৮Ñ ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি এশিয়া একাদশের হয়ে আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে। ধোনি (১৮৩) ও এ্যাডাম গিলক্রিস্টের (১৭২) পর উইকেটরক্ষক হিসেবে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। বেভ কনডনের (৩৭ বছর, ১৯৭৫) পর নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে সেঞ্চুরিয়ান এখন রনকি। ৯৯ বলে ১৭০, স্ট্রাইক রেট ১৭১.৭১Ñ অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসনের পর (বনাম বাংলাদেশ) দেড় শ’র ওপরে ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেকট এটি। মজার বিষয় রেকর্ড নয়, খেলার আনন্দটাকেই বড় করে দেখছেন দুই রেকর্ডম্যান। ‘কখনও পরিকল্পনা করে এটা হয় না। অপরপক্ষে রনকি যখন চার-ছক্কা মারছিল, আমি বেশ আনন্দই পাচ্ছিলাম।’ বলেন সঙ্গী ইলিয়ট। রনকির বক্তব্যও প্রায় একই, ‘আসলে ওই সময়ে আমাদের লক্ষ্য ছিল ইনিংস মেরামত করা। কিন্তু কিভাবে যেন বল ব্যাটে আসছিল, দারুণ আনন্দ পেয়েছি! তার চেয়ে বড় দল জিতেছে।’
×