ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অতিথি পাখি শিকার

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

অতিথি পাখি শিকার

প্রতিবছরের মতো এ বছরও গোপালগঞ্জের বৃহত্তম জলাভূমি চান্দারবিল, বড়বিল, মোল্লারবিল, টুঙ্গিপাড়াবিলসহ অন্যান্য জলাভূমিতে এসেছে বিভিন্ন প্রজাতির শীতের দেশের অতিথি পাখি, এসেছে দেশীয় নানা জাতের পাখিও। আর এই সুযোগে একশ্রেণীর পেশাদার শিকারিরা জালের ফাঁদ, বড়শি, বিষটোপসহ বিভিন্ন কৌশলে এসব পাখি নিধনে মেতে উঠেছে আর তা বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছে উচ্চমূল্যে। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে চেগা, জলচি, হটটিটি, বালিহাঁস, কাইম, ওয়াক, বক জাতীয় পাখি শিকারিরা অবাধে বিক্রি করছে। গোপালগঞ্জের সাতপাড়, বৌলতলী, পাটিকেলবাড়ী, সিংগা, রাহুথড়, কালীগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে এসব পাখি বিক্রি হচ্ছে। বাইরে থেকে আসা পাইকার, এলাকার লোকজন ও হোটেল মালিকরা এসব পাখির ক্রেতা। সাতপাড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন চেগা প্রতিহালি দুই থেকে আড়াই শ’, প্রতিটি হটটিটি একশ’ টাকা, প্রতিটি বালিহাঁস দুই থেকে আড়াই শ’ টাকা, প্রতিটি ওয়াক দুই শ’ থেকে আড়াইশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অতিরিক্ত শীতের কারণে সুদূর সাইবেরিয়া, চীন, হিমালয় পার্বতাঞ্চল থেকে উষ্ণতার টানে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এদেশে শীত মৌসুমে এসব অতিথি পাখির আগমন ঘটে, শীতের পরে আবার তারা এসব অঞ্চলে ফিরে যায়। এসব পাখির আগমন পরিবেশের জন্য উপকারী, এরা জলাভূমির কীটপতঙ্গ, ছোট মাছ খেয়ে থাকে আর তাদের মলমূত্রে জলাভূমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। নৃপেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রাজৈর, মাদারীপুর। সড়ক যেন মৃত্যুর ফাঁদ! প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক যেন একটা মৃত্যুফাঁদ। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সূত্রে বলা হয়েছে, ‘চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণেই বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। চালকের দক্ষতার অভাব, যানবাহনের যান্ত্রিক ত্রুটি, ট্রাফিক আইন না মানা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা, যেখানে সেখানে রাস্তা পার হওয়া, ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করা, ডিভাইডারের অভাবও দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী। এসবের সর্বশেষ যে কারণটি উল্লেখ করা হয়েছে, তাই আমার কাছে মনে হয় মুখোমুখি সংঘর্ষের প্রধান কারণ। লক্ষণীয় বিষয়, মুুখোমুখি সংঘর্ষের যত ঘটনা ঘটে এর অধিকাংশই ঘটে ওভারটেক করতে গিয়ে অথচ সড়কে ডিভাইডার থাকলে ওভারটেক করার কোন প্রয়োজনই হয় না। উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই ডিভাইডার ছাড়া কোন সড়ক খুঁজে পেতে কষ্ট হবে অথচ বাংলাদেশে এই প্রথম মাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম ডিভাইডারযুক্ত করা হচ্ছে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের সব মহাসড়কে যতদিন ডিভাইডার না হবে ততদিন যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষের জন্য যেসব কারণকে দায়ী করা হয় সেসব একেবারে গৌণ। সড়ক পরিবহন বিভাগ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে কিনা তা তারাই জানে। আমমদ নূর রোকনপুর, লক্ষ্মীপুর। জনগণ এবং গণতন্ত্র রাজনীতিবিদরা তো নানা ধরনের কঠোর সমালোচনা করেই যাচ্ছেন। গণতন্ত্র না থাকলে তারা বিরূপ সমালোচনা করার সুযোগ পেতেন না। তাহলে তারা কেন বলছেন, গণতন্ত্র নেই? তাদের কথা বার্তায় প্রমাণিত হয় দেশে গণতন্ত্র আছে। গণতন্ত্র আছে বলেই তো রাজনীতিবিদরা শুধু নয়; বাসে, ট্রেনে, লঞ্চে উঠলে; রাস্তাঘাটে, হোটেল রেস্টুরেন্টে বসলেই শুনতে পাইÑ যার যা মুখে আসে, কত না বেফাঁস কথাবার্তা বলেই চলছে পাবলিক। সরকারের নানা সমালোচনাও তাদের মুখে মুখে। ভোটের কথা আর কী বলবেন, এ দেশের শতকরা ৪০ ভাগ লোক ভোট দেয়া পছন্দই করে না। তারা মনে করেন, ভোট দিয়ে আমার কী লাভ। টাইম নাই, টাইম নাই, টাইম নাই বলে ভোটকে তারা এভয়েড করেন। বাকি ৬০ ভাগ লোক না হলেও শতকরা ৫৫ ভাগ লোক ভোট দিতে যান ভোটকেন্দ্রে। আবার এদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ ভাগ লোক টাকা খেয়ে গডফাদার নয়ত কলাগাছকে ভোট দিয়ে দেয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশে ছিল না কোন গণতন্ত্র। জেনারেল জিয়াÑ১৪৪ ধারা আর দিনের পর দিন কারফিউ দিয়ে দেশ শাসন করেছিলেন। সে অবস্থা যাঁরা দেখেছেন, তাঁরাই বলতে বাধ্য হবেনÑ গণতন্ত্র ছিল না শুধু দুই জেনারেলের শাসনামলে। সে কথা বাঙালী তো আজ বেমালুম ভুলে গেছে। তবে অনেকের স্মৃতিতে তা এখনও জ্বল জ্বল করছে। আসলে যাঁরা বলছেন ‘গণতন্ত্র নাই’Ñ তাঁরা জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে তুলতেই এ কথা বলে যাচ্ছেন। এ দিকে জনগণ ভাল করে বুঝে গেছে দেশে রয়েছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতার ছড়াছড়ি। তাই জনগণ কারও ছলনায় পড়ে রাজপথে আর নামছে না। নেমে কী ফল হয় তা তারা ভাল করেই জানে ও বোঝে। লিয়াকত হোসেন খোকন রূপনগর, ঢাকা। এটা কি রাজনীতির হাল! আমাদের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট এক বা দুই বছরের সৃষ্টি নয়। পঁচাত্তরের পর থেকেই রাজনীতিতে সঙ্কট সৃষ্টি হতে শুরু করে যা আজ সমাধান করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয় এমন রাজনৈতিক দলকে রাজনীতিতে নিয়ে আসার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সঙ্কটের সূচনা করা হয়েছিল। এই অপশক্তির অপরাজনীতি দেশের বড় বড় রাজনৈতিক দলকেও সঠিক রাজনৈতিক ধারা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এই অপরাজনৈতিক শক্তিকে মোকাবেলা করতে পারে শুধু দেশের ছাত্র সমাজ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, ছাত্র সমাজের অমিত শক্তিকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন দেশের রাজনীতিবিদরা। গত বিশ-বাইশ বছর ধরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা দেশের সবচেয়ে সচেতন অংশ। আর ছাত্র সংসদগুলো হলো নেতা তৈরির কারখানা। দীর্ঘদিন ধরে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সঠিক ছাত্র রাজনীতি না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা রাজনীতির পথ হারিয়ে ফেলছে। বড় বড় দলে নেতার সঙ্কট দেখা যাচ্ছে। চরিত্রহীন অসৎ ব্যক্তিরা রাজনীতির মাঠে চলে আসছে। বর্তমানে যারা রাজনীতির মাঠে আছেন তাঁদের পক্ষে এই সঙ্কট সমাধান করা সম্ভব নয়। মনে রাখতে হবে, রাজনীতি ও নেতা ছাড়া দেশ চলতে পারে না। বড় বড় রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনেকেই আগামী নির্বাচন পর্যন্ত সুস্থ ও সক্রিয় থাকবেন না। তাই অবিলম্বে সকল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অন্তত এই একটি ব্যাপারে একমত হয়ে মতামত প্রকাশ করুন। মনে রাখতে হবে একমাত্র ছাত্র সমাজই দেশের সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম। দেশকে বাঁচাতে হলে, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হলে ছাত্র সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। দেশের প্রতিটি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিপ্লব ফরিদপুর। শিশুশ্রম আর নয় ‘শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে’Ñ এ কথাটি সুধীসমাজ বলে থাকেন। কিন্তু কিভাবে শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে, তা বিস্তারিতভাবে কেউ বলেন না। প্রথমে দেখতে হবে শিশুরা কেন লেখাপড়া না করে কাজে লেগে যায়। প্রধান কারণ দারিদ্র্য। সংসারে অভাব থাকলে এবং অভিভাবক সংসার চালাতে অসমর্থ হলে তখনই বাবা-মায়েরা শিশুদের বিভিন্ন কল-কারখানাসহ বাসাবাড়িতে কাজে লাগিয়ে দেন। শিশুদের যা আয় হয়, তা দিয়ে তাঁদের নিজেদের এবং সংসারে আর্থিক সহায়তা হয়। তাই শিশুশ্রম বন্ধ করতে হলে প্রথমে প্রত্যেক গরিব পরিবারকে আর্থিক সহায়তা বেষ্টনীতে আনতে হবে। পরিবারের সক্ষম অভিভাবককে এমন কাজে লাগাতে হবে সেখান থেকে সে যা আয় করবে তা যেন তার পরিবারের ভরণপোষণসহ সংসারের সকল চাহিদা মিটে যায়। আর যদি অভিভাবকের আয়ে সংসার না চলে তবে তাদের সরকার থেকে আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। নিম্ন আয়ের সংসারগুলোতে জনসংখ্যার চাপ অধিক। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষাকে প্রথম স্থান দিতে হবে। জনগণ যত শিক্ষিত হবে ততই বুঝতে পারবে আয়বিহীন সংসারে অধিক মানুষ কতটা বোঝা? শিশুশ্রম বন্ধের বিষয়টি আশা করি সরকার, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সামাজিক সংগঠনগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে। কবিতা চাক্্লাদার পাবনা। প্রতিবন্ধী জরিপ জরুরী কোন মানুষ নিজের ইচ্ছায় প্রতিবন্ধী হয়ে পৃথিবীতে জন্মায় না। এই ব্যাপারটা সম্পূর্ণ বিধাতার অধীনে। তাই সেই অনুসারে প্রতিবন্ধী মানুষ আমাদের সমাজেরই অংশ। কিন্তু মানুষ যদি মানুষের জন্য হয় তবে এ থেকে প্রতিবন্ধীরা কেন দূরে থাকবে। তারা কি সকল মানুষের সহায়তা পেতে পারে না। যদি তাই হয় তবে কেন প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজে আজও অবহেলিত। বর্তমান সরকার উপজেলা সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক প্রতিবন্ধীদের কিছু অর্থ সহায়তা করলেও তা পরিমাণে খুবই কম। আবার প্রতিবন্ধীদের সঠিক জরিপ না থাকায় এই সীমিত অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক প্রতিবন্ধী। আমার জানা মতে, আমি যে গ্রামে বাস করি, সেখানে মোট ৪ জন প্রতিবন্ধী আছে। দুইজন বাক প্রতিবন্ধী, একজন শারীরিক ও একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। খোঁজ নিয়ে জানলাম এদের কেউ সমাজসেবা অধিদফতরের তালিকাভুক্ত নয়। এমনকি আজ পর্যন্ত কোন সরকারী-বেসরকারী সহায়তা পায়নি। এই দরিদ্র্য পরিবারের অবহেলিত প্রতিবন্ধীরা অনেক কষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শুধু আমার গ্রামেই নয় এ রকম চিত্র সারাদেশেই আছে। তাই সরকার যদি নির্ভুলভাবে জরিপ করে একজন প্রতিবন্ধীর পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের জন্য মাসিক অর্থ সহায়তা করে, তবে এই প্রতিবন্ধী দরিদ্র পরিবারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসবে। দিলরুবা রিজওয়ান দিনা আয়েশ, সিংড়া, নাটোর। গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা শুনে ভোক্তা সাধারণ আবার চিন্তামগ্ন হয়েছেন। দাম বাড়ানো হলে দেশের সিংহভাগ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এই অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া বা চিন্তা করা উচিত। তবুও অন্তত ভর্তুকি দিয়ে হলেও গ্যাাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানো উচিত হবে না। গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর পক্ষে দেশের ৯৯ ভাগ মানুষের প্রাণের দাবি। যারা দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন তাঁরা আসলে সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য এবং জনপ্রিয়তায় ধস নামানোর অপ-কৌশলে লিপ্ত বলেই সাধারণ মানুষ মনে করেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গরিববান্ধব সরকার বলে সাধারণ মানুষ মনে করে। আশা করি সরকার সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে আগামী দিনে গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ানো থেকে বিরত থাকবেন। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিষয়টি আরও ভেবে দেখবেন এমনটাই আশা করি। রণজিত মজুমদার সোনাগাজী, ফেনী। পে-কমিশন রিপোর্ট নিয়ে অষ্টম জাতীয় পে-কমিশন রিপোর্ট পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি করা হয়। মূলত মেহনতী কর্মজীবী সরকারী কর্মচারীদের দুঃখ দুর্দশাগুলো এই সচিব কমিটিই বেশি উপলব্ধি করেন। প্রকাশিত রিপোর্টে শতভাগ বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হলেও বাস্তব হলো প্রতিটি গ্রেডে ১০০% বেতন বাড়েনি। যেমন কোন কোন ক্ষেত্রে ৯২.৯৪%ম ৯৪.৯৫% এবং ৯৫.৫৫%। পুরো রিপোর্ট এর দুইটি ভাগ যেমন ১নং গ্রেড থেকে ১০নং গ্রেড পর্যন্ত প্রজাতন্ত্রের ৪০% কর্মকর্তাদের জন্য এবং ১১নং গ্রেড থেকে ১৬নং গ্রেড পর্যন্ত প্রজাতন্ত্রের গরিব মেহনতী কর্মজীবী শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত। বিশ্লেষণে দেখা যায় সর্বনিম্ন দুই শ্রেণীর কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধির হার (৯২.৯৪%-১০০%) ২=৯৬.৪৭% এবং সর্বনিম্ন বেতনভুক্ত দুই শ্রেণীর কর্মকর্তার বেতন বৃদ্ধির হার + (১০০%১১২.৫০%) ২+১০৬%। আবার সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত দুই শ্রেণীর কর্মচারী পুরনো দুই গ্রেড মিলে= (৯৪.৯১%+১০৯.০৯%) ২=১০২% ও সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত ২ গ্রেডের কর্মকর্তার বেতন বৃদ্ধির হার= (১০০%+১০৮.৯৫%) ২=১০৪.৪৮% অর্থাৎ রিপোর্টের অন্তর্নিহিত বাস্তবতা হলো নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত কর্মচারী বেতন বৃদ্ধির হার (৯৬.৪৭%=১০২%) ২=৯৯.২৪% যা শতভাগের নিচে বটে। অপরদিকে উচ্চবিত্ত কর্মকর্তার বৃদ্ধির হার= (১০৬%+১০৪.৪৮%) ২=১০৫.২৪% যাহা শত ভাগেরও ওপরে সুপারিশকৃত। তাহলে প্রস্তাবিত রিপোর্টে কর্মজীবীর প্রতি নিম্নমানের মূল্যায়ন অর্থ গরিব আজীবন গরিব, ধনী আজীবন ধনী এ নিষ্ঠুর প্রক্রিয়া চলতে থাকলে কেন স্বাধীন হলাম প্রশ্নটা থেকেই যায়। এ দিকে টাইমস্কেল ও আপগ্রেডেশন বন্ধ ও গ্র্যাচুয়েটির উন্নয়ন নেই বলে সৃষ্ট বৈষম্যসমূহ দূর করা জরুরী। সাইফুদ্দিন ফারুকী আশুগঞ্জ, বি-বাড়ীয়া। বাঙালী না বাংলাদেশী? স্বাধীনতার তেতাল্লিশ বছর পর দেশের সম্মানিত বিজ্ঞ-প-িত, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ জনগণের কাছে একটি বিষয়ের সঠিক উত্তর জানতে ইচ্ছে করে। সেটি হচ্ছে ‘বাংলাদেশী’ কি কোন জাতি? বিশ্বের বিভিন্ন জাতি উপজাতি, নৃতাত্ত্বিক জাতি এমন কি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠী ইত্যাদির যে তালিকা, তাতে ‘বাংলাদেশী’ জাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারে কি? তাহলে সৌদি আরবী, কুয়েতী, পাকিস্তানী, ভারতীয় এরা কি এক একটি জাতি। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কয়েকশ’ গুণ বড় হয়েও কি যুক্তরাষ্ট্র একটি জাতি। নাকি আরবের অনেক দেশের সব লোকই আরব জাতি। আরব এক দেশ, পাকিস্তানের কিছু লোক পাঞ্জাবি জাতি, কিছু লোক পাঠান জাতি এবং অনেক লোকই বিভিন্ন উপজতি। ঠিক যেমন ইউরোপের ইংল্যান্ড বা যুক্তরাজ্যের লোকেরা ইংল্যান্ডিয়ান জাতি না। বরং ইংলিশ জাতি বা ইংরেজ জাতি, তেমন ইটালির লোকেরা ইটালিয়ান জাতি না বরং রোমান জাতি। তেমনি সুইডেনের লোকেরা সুইডেনিয়ান জাতি না, তারা সুইডিশ জাতি। অনুরূপ গ্রীসের লোকেরা গ্রীস জাতি নয়, গ্রীক জাতি। এই ব্যাখ্যায় স্পষ্ট বোঝা যায়, জাতিকে কোন দেশের কিংবা রাষ্ট্রের সীমারেখা দিয়ে বেঁধে নামকরণ করা যায় না, কারণ দেশ বা রাষ্ট্র গঠিত হয় যুদ্ধবিগ্রহ বা দখলদারির মাধ্যমে। যেমন আজকের বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে। তার মানে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি স্বাধীন দেশ বা রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। কিন্তু ‘বাংলাদেশী’ নামের কোন নতুন জাতি গঠিত হয়নি, কারণ হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যে ‘বাংলাদেশী’ নামের কোন জাতির উল্লেখ নেই, অস্তিত্বও নেই। বরং ‘বাঙালী’ নামের জাতি আছে বহু হাজার বছর থেকে। তাই মহান স্বাধীনতার তেতাল্লিশ বছর পর আমাদের সত্য উপলব্ধি করতে হবে। ভুল সংশোধন করতে হবে। বাংলাদেশে অনেক বিজ্ঞ-প-িতজন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী, ইতিহাসবিদ, শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী আছেন। বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ জানাই আপনারা-আপনাদের সকল মেধা ও প্রজ্ঞার নির্যাস থেকে বলুন, ‘বাংলাদেশী’ কোন জাতি হতে পারে কি-না। নাকি বাংলাদেশ নামক দেশে বা রাষ্ট্রে বসবাসকারী সকল নাগরিকই হচ্ছে ‘বাংলাদেশী’। যেমন ভারতে বসবাসকারী কিংবা পাকিস্তানে বসবাসকারী সকল নাগরিকই হচ্ছে ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানী। কিন্তু ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানী কোন জাতি নয় তেমনি রাষ্ট্রীয় বা দেশীয় কাঠামোতে ‘বাংলাদেশী’ও কোন জাতি নয় বরং বাংলাদেশে বসবাসকারী অধিকাংশ লোকই ‘বাঙালী’ জাতি। এছাড়া পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরা আসাম এবং মিয়ানমারেও অনেক ‘বাঙালী’ জাতির লোক আছে। তাই ‘বাংলাদেশী’ জাতি একটি উদ্ভট, অসত্য, অনৈতিহাসিক এবং অবৈজ্ঞানিক বক্তব্য চেতনা বা ধারণা। মোঃ হাবিবুল ইসলাম আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম।
×