ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাড়া-মহল্লায় দ্রুত সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

পাড়া-মহল্লায় দ্রুত সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সন্ত্রাসীদের শক্ত হাতে দমন করে দ্রুত দেশে শান্তি ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ। ধারাবাহিকভাবে ঢাকা মহানগরীতে সভা-সমাবেশ ও শান্তি মিছিলের মাধ্যমে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-সহিংসতা প্রতিরোধে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় দ্রুত সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। রবিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর ১৪ দলের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে জোটের নেতারা বলেন, সারাবিশ্বে যেভাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় বাংলাদেশেও একইভাবে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে হবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশবাসীর রুখে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। হরতাল অবরোধ নামে জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে পাড়া-মহল্লায় সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, বোমাবাজ ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে হবে। ঢাকা মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, খাদ্যমন্ত্রী ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাভোকেট কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী, শাহে আলম মুরাদ, আবদুল হক সবুজ, সহিদুল ইসলাম মিলন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা কামরুল আহসান প্রমুখ। সভার শুরুতে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর জ্যেষ্ঠ পুত্র ও আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিম-লীর সদস্য প্রয়াত ড. মোহাম্মদ সেলিম ও ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ-হরতালের নামে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে ১৪ দলের উদ্যোগে আগামী বুধবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর পল্লবী এবং বৃহস্পতিবার একই সময়ে মোহাম্মদপুরে শান্তি মিছিল ও সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ধারাবাহিকভাবে সব নির্বাচনী এলাকাতেই সভা-সমাবেশ ও শান্তি মিছিল করারও সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় পুরানা পল্টনের পিকিং গার্ডেন এবং আগামীকাল সোমবার সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউর জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর ১৪ দলের পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে নগর চৌদ্দ দলের সমন্বয়ক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিএনপি পাকিস্তানের শ্যাডো দল, আইএসআইয়ের নতুন সংস্করণ। খালেদা জিয়া এর নেত্রী ও তারেক রহমান এর মূল নেতা। তারা দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে, আর বিদেশে বসে সংবিধান ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ করছে। এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। যারা বোমা মারে তাদের প্রতিরোধ করতে দলীয় নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একাত্তরে ইয়াহিয়া যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে একই কায়দায় বর্তমানে খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা করছে। মানুষ হত্যা করে খালেদা জিয়া ‘সন্ত্রাসী’ রূপ ধারণ করেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে রাজনীতি থেকে চিরদিনের জন্য বিদায় করতে হবে। তিনি বলেন, রওশনের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি এখন বিরোধী দল, আর খালেদার নেতৃত্বে বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী-জঙ্গী দল। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের নির্মূলে সারা পৃথিবীতে যে আচরণ করা হয়, বাংলাদেশে যারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী কর্মকা- করছে তাদের বিরুদ্ধেও সেই আচরণ করা হচ্ছে এবং করা হবে। কথা পরিষ্কার; সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা ছাড়া কোন পথ নেই। কারণ, দেশবাসীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোন আলোচনা নেই। তারা মানুষ হত্যা করে দাবি আদায় করতে চায়। এটা মেনে নেয়া যায় না। সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও মানুষ হত্যা বন্ধ করলে বিএনপির ‘শুভবুদ্ধি সম্পন্ন’ নেতাদের সঙ্গে কথা হলেও হতে পারে। দেশের বিভিন্নস্থানে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ীতে যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
×