ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে ১৯ দিনে ১৭ গাড়ি পোড়াল বিএনপি-জামায়াত

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

রাজশাহীতে ১৯ দিনে ১৭ গাড়ি পোড়াল বিএনপি-জামায়াত

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের টানা অবরোধের মধ্যে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে রাজশাহীতে যানবাহন চলাচল। শনিবার সকাল থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। তবে সতর্ক থেকে যানবাহন চালাতে এবং গাড়িতে বালু রাখার জন্য গাড়ির চালক-হেলপারকে পরামর্শ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এদিকে অবরোধের ১৯ দিনে রাজশাহীতে চারটি বাস ও ১৩টি ট্রাকে পেট্রোলবোমা মেরে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এ সময় ভাংচুর করা হয় অর্ধশত যানবাহন। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে অবরোধকারীরা পুড়িয়েছে তিনটি বাস ও দুইটি ট্রাক। গাড়িতে মারা পেট্রোলবোমার আগুনে দগ্ধ হয়েছে শিশু ও নারীসহ ১০ জন। বাসে পেট্রোলবোমা মেরে পালানোর সময় হাতনাতে ধরা খেয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুই কর্মী। আগুন দিতে গিয়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছে এক যুবদল কর্মী। আর যানবাহনে হামলার সময় শিবির কর্মীদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন তিন সাধারণ মানুষ। রাজশাহী পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন রবি বলেন, জীবন-জীবিকার টানেই তারা ঝুঁকির মধ্যে যানবাহন নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। যতই হামলা আসুক তারা গাড়ি চালাবে বলে জানান তিনি। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহাকারী কমিশনার (এসি) ইফতে খায়ের আলম বলেন, শনিবার সকাল থেকেই রাজশাহীতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় যানবাহন চলাচল করলেও নিরাপত্তা ছাড়াই আন্তঃজেলার সকল রুটে যানবাহন চলাচল করছে। তিনি বলেন, সতর্ক থেকে গাড়ি চালাতে চালক-হেলপারকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও হেলমেট পরে গাড়ি চালানোসহ গাড়িতে কমপক্ষে দুই বস্তা বালু রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে তাদের। আর নাশকতাকারীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চিরুনি অভিযান অব্যাহত বলে জানান এসি। পুলিশ ও পরিবহন সংগঠনের তথ্য মতে, অবরোধের ১৯ দিনে রাজশাহীতে চারটি বাস ও ১৩টি ট্রাকে পেট্রোলবোমা মেরে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এর মধ্যে শুক্রবার রাতেই তানোর উপজেলার ব্র্যাকের মোড়, পবা উপজেলার তেঘর ও নগরীর মতিহার থানা কাজলা ও কাপাশিয়া এলাকায় তিনটি বাস ও দুইটি ট্রাকে আগুন দেয় ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এতে শিশু ও নারীসহ ৯ জন দগ্ধসহ কয়েকজন আহত হন। এ সময় জনতা পবা উপজেলার ছাত্রশিবিরের সভাপতি মশিউর রহমানসহ দুই শিবির কর্মীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে গণপিটুনি দিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে পুলিশে দেয়। এর দুই-তিনদিন আগে নগরীর ভদ্রা এলাকায় ঢাকাগামী বাসে পেট্রোলবোমা মেরে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। এতে এক নারী দগ্ধ হন। এর আগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা এলাকায় ২টি, পবায় ২টি, চারঘাট উপজেলা এলাকায় ৩টি ও নগরীতে চারটি ট্রাকে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। গাড়িতে আগুন দিতে গিয়ে গোদাগাড়ীতে এসলাম নামের এক যুবদল কর্মী ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যায়। এছাড়াও বৃহস্পতিবার নগরীতে নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িবহরে হামলার সময় এক শিবির কর্মীকে ধরে ফেলে জনতা। এ সময় তারা বোমা হামলা চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এতে বোমার আঘাতে তিন সাধারণ মানুষ আহত হন।
×