ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মন্ত্রী পরিষদে প্রধানমন্ত্রী

সমবেদনা জানাতে গিয়ে অপমানিত হয়ে ফিরে এসেছি

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ২৭ জানুয়ারি ২০১৫

সমবেদনা জানাতে গিয়ে অপমানিত হয়ে ফিরে এসেছি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ছোট ছেলের মৃত্যুতে খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে ফিরে আসায় অপমানবোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে উপস্থিত দলের নেতারাও এ সময় কথা বলতে পারতেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর দিন ২৪ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু খালেদা জিয়া দেখা দেননি। এমনকি সেখানে উপস্থিত বিএনপির সিনিয়র নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোন প্রকার সৌজন্যতা দেখাননি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু গুলশান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আপনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, এতে সারা দেশের মানুষ আপনার প্রশংসা করেছে। মুজিবুল হক চুন্নুর এ কথা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যোগাযোগ করে গিয়েছিলাম, গিয়ে দেখলাম গেট বন্ধ। ছোট গেট দিয়ে ঢুকতে চেয়েছিলাম, ছোট গেটটিও তালাবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, একজন মা হয়ে আরেকজন মায়ের জন্য সমব্যথী হয়ে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে চলে এলাম, ঢুকতে দিল না। এটা অপমানের ব্যাপার। সামান্যতম সৌজন্যটুকুও তো দেখলাম না। সেখানে বিএনপির অন্য নেতারাও ছিলেন। আমরা তাদের দেখিনি, তা নয়। তারাও তো আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারতেন। সব কিছু ভুলেই সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে অপমান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ দেখা করতে যাওয়াকে রাজনীতিতে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হলেও ‘পুত্রশোকে’ কাতর খালেদা জিয়াকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করছে বিএনপি। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ‘সৌজন্যতা না দেখানো ঠিক হয়নি’ বলে যে মন্তব্য করেছেন সেই কথার প্রসঙ্গ টেনে একাধিক মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, আপনার যাওয়া যথার্থ ছিল। আপনি অপমানিত হননি। ময়মনসিংহকে দেশের অষ্টম প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার প্রস্তাবে সায় দিয়ে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) পাঠাতে বলেছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘নির্দেশনামূলক এই সিদ্ধান্ত’ হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা জানান। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভার সম্মতি পাওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এখন এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবে। কয়টি জেলা ও কত আয়তন নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হবে তা নিকার বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে। সচিব বলেন, ময়মনসিংহ ছাড়াও বৃহত্তর ফরিদপুর এবং বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালীকে নিয়ে আরও দুটি বিভাগ করার উপযোগিতা আছে কিনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে তা দেখতে বলেছে মন্ত্রিসভা। ময়মনসিংহ বিভাগের কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যৌক্তিক সময়ের’ মধ্যেই সব কাজ শেষ করা হবে। আগের দিনই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে ঢাকাকে ভেঙে তিনটি বিভাগ করার পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানুষকে সত্যিকারভাবে সেবা দিতে গেলে, উন্নয়ন করতে গেলে, সবচেয়ে ভাল হবে যদি আমরা ঢাকাকে তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রশাসনিক নতুন বিভাগ করতে প্রধানমন্ত্রী নিজেই আগগ্র প্রকাশ করেছেন, নতুন বিভাগ, থানা বা জেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নিকার বৈঠকে। মন্ত্রিসভায় ‘নির্দেশনামূলক সিদ্ধান্ত’ হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। সচিব জানান, ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনে এখন একটি কমিটি করা হবে। এই কমিটি বিস্তারিত সব কিছু তৈরি করে নিকার বৈঠকে তুলবে। কোন্ কোন্ জেলা নিয়ে বিভাগ হবে, সেখানে কোন্ কোন্ দপ্তর থাকবে তা নিকারেই চূড়ান্ত হবে।
×