ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রস্তুতি সম্পন্ন বললেন অর্থমন্ত্রী, সিলেটে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া

কাল পর্দা উঠছে বঙ্গবন্ধু কাপ ফুটবলের

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ২৮ জানুয়ারি ২০১৫

কাল পর্দা উঠছে বঙ্গবন্ধু কাপ ফুটবলের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের পর্দা উঠছে বৃহস্পতিবার। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে স্বাগতিক বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হবে এ আন্তর্জাতিক ফুটবল আসরের। ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ এ আন্তর্জাতিক ফুটবল আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ ১৫ বছর পার করে আবারও যাত্রা শুরু করবে এ আসর। আগেই সিলেটে পৌঁছে বাংলাদেশ দল অনুশীলন শুরু করেছে। আর মঙ্গলবার সিলেটে পৌঁছে মালয়েশিয়া দল। আন্তর্জাতিক এ আসরকে ঘিরে সিলেট শহরজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সংস্কার কাজ শেষ করে এখন মোহনীয় সাজে সজ্জিত সিলেট স্টেডিয়ামও প্রস্তুত ম্যাচ আয়োজনের জন্য। এবার অপেক্ষা সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ১৯৯৭ আর ১৯৯৯ সালে দুটি আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার পর স্থগিত ছিল এ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আন্তর্জাতিক এ টুর্নামেন্ট। এবার আবারও ৬ দল নিয়ে বসছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবলের তৃতীয় আসর। দুটি ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে এবারের আসরের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। যদিও দেশের অন্যতম প্রধান ভেন্যু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম কিন্তু ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় উদ্বোধনী ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পেয়ে নতুন এক ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে যাচ্ছে সিলেট। মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে সিলেট পৌঁছে মালয়েশিয়া দল। কঠোর নিরাপত্তায় মালয়েশিয়ার জাতীয় ফুটবল দলকে সরাসরি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বিকেলে তারা অনুশীলনও করে। একই দিন সকালে বাংলাদেশ ফুটবল দলের সদস্যরা হযরত শাহজালাল (রহ) ও হযরত শাহ পরাণের (রহ) মাজার জিয়ারত করেন। এই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দল দীর্ঘ প্রায় দুই সপ্তাহ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবিড় অনুশীলন শেষে আগেই সিলেটে পৌঁছে। সিলেটে উদ্বোধনী ম্যাচ ছাড়াও শুক্রবার সিঙ্গাপুর-থাইল্যান্ড এবং শনিবার মালয়েশিয়া-শ্রীলঙ্কা এ দুটি ম্যাচও অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক কোন ফুটবল আসর বাংলাদেশে হয়নি অনেকদিন। ১৫ বছর পর এবার হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আসর। আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা (ফিফা) এ আসরের স্বীকৃতি দেয়াতে বাড়তি রং পেয়েছে আসরটি। আসন্ন গোল্ডকাপ আসরে শ্রীলঙ্কা ছাড়া স্বাগতিক বাংলাদেশের চেয়ে বাকি ৪ দলই অনেক বেশি শক্তিশালী। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে ১৫৪ র‌্যাঙ্কিংধারী মালয়েশিয়া এবং ১৭২ র‌্যাঙ্কিংধারী শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বর্তমান র‌্যাঙ্কিং ১৫৪। আর ‘বি’ গ্রুপে ১১০ র‌্যাঙ্কিংধারী বাহরাইন সবচেয়ে শক্তিশালী দল এবারের আসরে। আছে ১৫৭ র‌্যাঙ্কিংধারী সিঙ্গাপুর, ১৪৪ র‌্যাঙ্কিংধারী থাইল্যান্ড। ‘ফুটবল নিয়ে ঘণ্টাখানেক কথা বলার ইচ্ছে আছে আমার। কিন্তু হাতে সময় নেই। শুধু এতটুকু বলতে পারি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সফল করতে যত টাকা দরকার সরকার তার ব্যবস্থা করবে।’ কথাগুলো অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সাংগঠনিক কমিটির সভা ছিল হোটেল সোনারগাঁওয়ে। সভায় অর্থমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাফুফে সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান হামীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের। অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ও সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের কাজ শেষ পর্যায়ে। আশা করিছ ফ্লাডলাইট, মাঠ ও গ্যালারির সব কাজ ঠিক সময়েই শেষ হয়ে যাবে।’ এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি বাফুফে ভবনে সাংগঠনিক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে সালাউদ্দিন জানিয়েছিলেন, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের চাই প্রচুর অর্থ। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর ভাষ্য ছিল, ‘এ ধরনের আসর আয়োজনের জন্য প্রচুর টাকা দরকার, সেটা আমি বুঝি। সালাউদ্দিন আমাকে জানিয়েছেন তাদের ১৫ কোটি টাকা দরকার। আমরা বলেছি টাকার ব্যবস্থা সময় মতো হয়ে যাবে।’ অর্থমন্ত্রী ‘সিলেট ভেন্যুর দর্শক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। এর আগে এই স্টেডিয়ামে কয়েকমাস আগে একটি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ দেখতে অভাবনীয় দর্শক-ঢল নেমেছিল। তারা স্টেডিয়ামের গেট ভেঙ্গেই মাঠে ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু বিস্ময়করভাবে তারা মাঠে ঢুকে কোন প্রকার গ-গোল করেনি। বরং মাঠের দাগের ঠিক বাইরে শান্তভাবে বসে পড়ে। আসলে ওই ম্যাচে স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি টিকেট ছাপা হয়েছিল। এবার যেন এমনটা না ঘটে, তাই একটু কম সংখ্যক টিকেট ছাপা হবে। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার ক্রীড়াবান্ধব। ক্রীড়া উন্নয়নের ব্যাপারে সরকার সবসময়ই আগ্রহী ও আন্তরিক।’
×