ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেইমারের জোড়া গোলে সেমিতে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

নেইমারের জোড়া গোলে সেমিতে বার্সিলোনা

স্প্যানিশ কোপা ডেল’রে, লালকার্ড এ্যাটলেটিকোর দুই ফুটবলারকে, লাইন্সম্যানকে বুট ছুড়ে মারেন টুরান, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ২-৩ বার্সিলোনা (দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলে জয়ী বার্সা) স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কলঙ্কিত, ঘটনাবহুল, বারুদে ঠাসা ম্যাচে কি ছিল না! পরতে পরতে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ৩-২ গোলে হারিয়ে স্প্যানিশ কোপা ডেল’রে ফুটবলের সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছে বার্সিলোনা। বুধবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে কাতালানদের জয়ের নায়ক ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার। সেলেসাও অধিনায়ক একাই করেন দুই গোল। অপর গোলটি আসে স্বাগতিক ফুটবলার মিরান্ডার আত্মঘাতীর সৌজন্যে। ভিসেন্টে ক্যালডেরনে স্বাগতিক এ্যাটলেটিকোর হয়ে গোল করেন ফার্নান্ডো টোরেস ও রাউল গার্সিয়া। এর আগে ২১ জানুয়ারি ন্যুক্যাম্পে শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে বার্সা জয় পেয়েছিল ১-০ গোলে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে লুইস এনরিকের দলের জয় ৪-২ গোলে। চলতি মাসে এ্যাটলেটিকোর বিরুদ্ধে এটা তৃতীয় জয় বার্সিলোনার। এর আগে গত ১১ জানুয়ারি লা লিগায় ৩-১ গোলে জিতেছিলেন মেসি-নেইমাররা। কিক অফ থেকেই উত্তেজনার শুরু। ৪০ সেকেন্ডেই গোল করে এ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে নেন ফার্নান্ডো টোরেস। নিজেদের ডি বক্সের সামনে থেকে মাঝমাঠ বরাবর লম্বা করে বল বাড়িয়ে ছিলেন অতিথি ডিফেন্ডার মাশ্চেরানো। কিন্তু বল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। মুহূর্তের মধ্যে ব্রাজিলের ডিফেন্ডার গিলেরমে সিকুইরার পা ঘুরে বার্সিলোনার ডি বক্সের সামনে বল পান টোরেস। স্প্যানিশ স্ট্রাইকার একজনকে বোকা বানিয়ে দারুণ প্লেসিং শটে গোল করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে চলতি মাসে এ্যাটলেটিকোয় যোগ দেয়া টোরেসের এটা তৃতীয় গোল। শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেছিলেন তিনি। সমতা ফেরাতে দেরি করেনি দারুণ ফর্মে থাকা বার্সিলোনা। লিওনেল মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে লুইস সুয়ারেজের বাড়ানো বলে দারুণ ফিনিশিংয়ে গোল করেন নেইমার। ম্যাচের ২৯ মিনিটে জুয়ানফ্রানকে ডি বক্সের মাথায় বাধা দেন মাশ্চেরানো। পেনাল্টি পায় স্বাগতিকরা। অবশ্য রেফারির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকে। স্পট কিক থেকে গোল করে আবারও এ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে নেন রাউল গার্সিয়া। ৩৮ মিনিটে আরেক নাটক। ইভান রাকিটিচের কর্নার ফ্লিক করেছিলেন সার্জিও বসকুয়েটস। কিন্তু ক্লিয়ার করতে যেয়ে নিজেদের জালেই বল জড়ান এ্যাটলেটিকোর মিরান্ডা। তার শারীরিকভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল, নিজেদের জালে বল পাঠানোর জন্যই প্রস্তুত ছিলেন! ৪১ মিনিটে বার্সার ডি বক্সে এ্যাটলেটিকোর এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যানের শট লাগে জর্ডি এ্যালবার হাতে। কিন্তু রেফারির চোখ এড়িয়ে যাওয়ায় পেনাল্টি পায়নি স্বাগতিকরা। উল্টো পাল্টা আক্রমণে অসাধারণ গোল করেন নেইমার। এই গোলেই এ্যাটলেটিকোর বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। মেসির ক্রস আলত টোকায় নেইমারকে বাড়িয়ে দেন এ্যালবা। গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে গোল করেন নেইমার। ৩-২ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সা। প্রথমার্ধ শেষে মাঠ ছাড়ার সময় ঘটে আরেক কা-। কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন টোরেস ও নেইমার। রাউল গার্সিয়ার সঙ্গে বিবাদে জড়ান বার্সার কোচিং স্টাফরা। রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। যে কারণে তখনই লালকার্ড দেখানো হয় এ্যাটলেটিকো অধিনায়ক গাবিকে। ফলে ১০ জন নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা এ্যাটলেটিকো ম্যাচে ফেরার চেয়ে যেন ফাউলেই বেশি মনোযোগী হয়! এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে আরডা তুরান সহকারী রেফারির দিকে বুট ছুড়ে মারেন। এরপরও অবশ্য বেঁচে যান তুর্কী ফুটবলার। রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখাননি, হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন। একটা পর্যায়ে অবস্থার আরও অবনতি হয়। এ্যাটলেটিকোর জুয়ানফ্রান নেইমারকে সাত আঙ্গুল দেখিয়ে বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের ৭-১ গোলে হারটিকে মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। স্বাগতিকদের মারিও সুয়ারেজ ৮৪ মিনিটে মেসিকে দৌড়ে গিয়ে লাথি মারার চেষ্টা করেন। এই অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পান তিনি এবং লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। ফলে এ্যাটলেটিকো পরিণত হয় নয়জনের দলে। এর আগে অবস্থা আরও খারাপ দেখে ৭৭ মিনিটে নেইমারকে মাঠ থেকে তুলে নেন এনরিকে। শেষ পর্যন্ত ঘটনাবহুল ম্যাচ শেষ হয় প্রথমার্ধের ফলাফলেই। ম্যাচে ১০ হলুদ কার্ডের সাতটিই এ্যাটলেটিকোর।
×