ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভারত-ইংল্যান্ডের ফাইনালে ওঠার লড়াই

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৫

ভারত-ইংল্যান্ডের ফাইনালে ওঠার লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচ নাটকীয় মোড় নিয়েছে। ভারত-ইংল্যান্ডের ম্যাচটি হয়ে উঠেছে অঘোষিত সেমিফাইনাল। এ ম্যাচের বিজয়ীরা ফাইনাল খেলবে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। তিনটি করে ম্যাচ খেলে অবশ্য ভারতের চেয়ে পয়েন্টে এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড। তাদের পয়েন্ট ৫ আর ভারতের মাত্র ২। কোন ম্যাচ না জিতলেও একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে এ পয়েন্ট পেয়েছে ভারতীয় দল। আর ভারতের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ জিতেছে ইংলিশরা। শেষ ম্যাচে তাই কোন নেট রানরেটের হিসেব কিংবা বোনাস পয়েন্ট অর্জনের বিষয় নিয়ে জটিল কোন সমীকরণ নেই। তবে কোনভাবে আজকের ম্যাচটি পরিত্যক্ত বা টাই হয়ে গেলে ইংল্যান্ড সরাসরিই ফাইনালে পা রাখবে। সে কারণে আজ জিততেই হবে ভারতীয় দলকে। ম্যাচটি পার্থে বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ২০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। গাবায় আগের ম্যাচটায় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একেবারেই বিপর্যস্ত ছিল ভারতীয় দল। মাত্র ১৫৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে ইংল্যান্ড। কোন ম্যাচ না জিতেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার সুবাদে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে আছে ভারতীয় দল। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র ১৫ দিন আগে দু’দলেরই দারুণ সুযোগ নিজেদের দারুণভাবে প্রস্তুত করার। কারণ ফাইনালে ওঠার লড়াই জন্য বাড়তি একটি উত্তেজনা এবং স্নায়ুচাপ আছে উভয় দলের জন্য। তবে ভারতীয় দলকে আগের ম্যাচে পুরোপুরি বিধ্বস্ত করে বাড়তি একটা আত্মবিশ্বাস ইংলিশ শিবিরে। আজকের ম্যাচে জয় পেয়ে গেলে তাদের জন্য বিশ্বকাপ অনুপ্রেরণা হিসেবে দারুণ কার্যকর হবে। কারণ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হতে পারলে সেটি হবে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের জন্য একটি ড্রেস রিহার্সেল। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে। আর সে লড়াইয়ের আগে ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগান চান আরেকবার কোন বড় ম্যাচে অসিদের বিরুদ্ধে দারুণ কিছু করতে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী রবিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাওয়াটা অনেক বড় বিষয় হবে। এরপর আমরা বিশ্বকাপে নামার আগে যত বেশি সময় পাব অনুশীলনের সেটা খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আর সে কারণে আমরা পুরোপুরি এ লড়াইয়ে নামার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছি।’ ইংলিশদের জন্য এ ম্যাচে বড় শক্তি পেসার স্টিভেন ফিন। আগের দুই ম্যাচ খেলে তিনি শিকার করেছেন ৭ উইকেট। পার্থের বাউন্সি উইকেট তাকে আরও ভয়ঙ্কর করে তোলার জন্য যেন হাতছানি দিয়েই ডাকছে। আর ব্যাটিং-বোলিংয়ে চলতি সিরিজে বেশ ভালভাবেই নিজেদের সমন্বিত করতে পেরেছে। ওপেনার ইয়ান বেল দারুণ ফর্মে থেকে ৩ ম্যাচেই করেছেন ২২৯ রান। সে কারণে আজকের ম্যাচে কোন পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। ভারতীয় দলকে এ ম্যাচেও অবশ্য রোহিত শর্মাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হতে পারে। রোহিত গত ১৮ জানুয়ারি মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৩৮ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পর থেকেই অনুপস্থিত। ফিটনেসের সমস্যা থাকায় এ ম্যাচেও তিনি থাকছেন না সেটা প্রায় নিশ্চিত। যদিও পার্থে বৃহস্পতিবার তিনি দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন। আজকের ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠলে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিনি একাদশে ফিরতে পারেন। যদিও চলতি সিরিজে এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ থেকে জয়ের দেখা পায়নি ভারতীয় দল কিন্তু অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হারের পরও দলটা বেশ গুছিয়ে উঠেছে। এখন পর্যন্ত ওপেনার শিখর ধাওয়ান খুব বাজে একটি সফর কাটিয়েছেন। আজকের ম্যাচেই তাঁর একাদশে জায়গা ধরে রাখার জন্য নিজেকে প্রমাণের শেষ সুযোগ হতে পারে। ধোনি আশা করছেন আজকের ম্যাচেই ফর্মে ফিরবেন ধাওয়ান। তিনি বলেন, ‘ফর্ম এমন একটি বিষয় যা আসলে মানুষ সেভাবে দেখতে পায় না, এটা আপেক্ষিক। যে কেউ দারুণ ফর্মে থাকতে পারে আবার নিমিষেই ফর্মহীন হয়ে যেতে পারে। যা করার তার নিজের সামর্থ্য অনুসারেই করতে হবে। তাহলেই আমার মনে হয় সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।’ অপর টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান আজিঙ্কা রাহানে তিন ম্যাচেই কিছু রান পেয়েছেন। যদিও তার সর্বোচ্চ ৩৩। সিডনিতে পরিত্যক্ত হওয়া ম্যাচেও ২৮ রানে ব্যাট করছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশে তিনি মানিয়ে নিতে সক্ষম সেটার প্রমাণ টেস্ট সিরিজেই দিয়েছেন। এবার আজকের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার দিকে তাকিয়ে আছে ভারতীয় দল। আর অন্যতম ভরসা বিরাট কোহলির আরেকটা দিন জ্বলে ওঠাটাও বেশ জরুরী। তবে ইংল্যান্ড পেস এ্যাটাকের বিরুদ্ধে আজ পার্থের বাড়তি বাউন্স ও গতিময় উইকেট এবং প্রায় ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভারতীয় দলের ব্যাটসম্যানরা কতদূর কি করতে পারবে সেটা সময়ই বলে দেবে। এর আগে একবারই মাত্র ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে পার্থের এ মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সে ম্যাচে ইংল্যান্ড জিতেছিল ৯ রানে।
×