ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পপতি ও উদ্যোক্তা কর্মশালা

ভোলায় স্পেশাল ইকোনমি জোন স্থাপন করা হবে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ভোলায় স্পেশাল ইকোনমি জোন স্থাপন করা হবে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

হাসিব রহমান, ভোলা থেকে ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ দেশের শীর্ষ শিল্পপতিদের কর্মশালায় ভোলায় স্পেশাল ইকোনমি জোন স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অবরোধের নামে নাশকতা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, সোমবার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেবে। অথচ রবিবার থেকে ৭২ ঘণ্টা হরতাল। এটা কোন সুচিন্তিত বিবেকবান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। কোমলমতি শিশুরা পরীক্ষা দিতে যাবে হয়ত কোথাও কোন গাড়িতে পেট্রোলবোমা মেরে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। তিনি পাকিস্তানের মতো দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাচ্ছেন। তা না হলে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে অনেক আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু অবরোধের নামে এক নাগাড়ে ২৭ দিন গাড়ি পোড়ানো, মানুষকে হত্যা করা, মা-বোনের কোল খালি কারো এর আগে হয়নি। এগুলো করে যদি দাবি আদায় করা যেত তাহলে আল কায়েদা ইরাক দখল করে নিত, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়াসহ বহু জায়গা দখল করে নিতে পারত। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। খালেদা জিয়াও সফল হতে পারবেন না। বেগম জিয়াকে উদ্দেশ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে হরতাল প্রত্যাহার করুন। শনিবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের আয়োজনে ভোলাকে শিল্প নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও উদ্যোক্তাদের নিয়ে ‘লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড অটো মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিরিয়াল টাউন এট ভোলা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ৩টি হেলিকপ্টারযোগে মন্ত্রীসহ শীর্ষ শিল্পপতি ব্যবসায়ীরা ভোলায় আসেন। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এসএ সামাদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, এফবিসিসিআই’র সভাপতি কাজী আকরাম হোসেন, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, দৈনিক সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, নিটল নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান মাতলুব আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মোঃ গাউস, এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, মনোয়ারা হামিক আলী, অতিরিক্ত সচিব নাভাস চন্দ্র ম-ল, যুগ্ম সচিব তৌহিদুর রহমান, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা, জেলা পরিষদ প্রশাসক আবদুল মমিট টুলু, পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির, ঢাকা চেম্বার এ্যান্ড কমার্সের সাবেক সভাপতি হাসিব ইব্রাহিম প্রমুখ। এছাড়াও দেশের শীর্ষ স্থানীয় অন্তত ২০টি গ্রুপ অব কোম্পানির মালিক ও প্রতিনিধিরাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভোলাকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নশীল আধুনিক জেলায় রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে আজ থেকে নতুন করে শিল্পায়নের বীজ বপন করা হলো। এখানে প্রচুর গ্যাস মজুদ রয়েছে। ভোলায় যদি এক ট্রিলিয়ন গ্যাস নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে একটি সারকারখানা করা হবে। ইতোমধ্যেই আড়াই শ’ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুত প্লান্ট স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরও আড়াই শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত প্লান্ট স্থাপন করা হবে। দেশে স্পেশাল ৯টি ইকোনমি জোন হতে যাচ্ছে। তার মধ্যে ভোলায় একটি ইকোনমি জোন স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোলা হবে দেশের মধ্যে সবচাইতে সম্পদশালী অঞ্চল। এখানে স্পেশাল ইকোনমি জোন হলে দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ভোলায় শিল্পকারখানা করবে। নৌপথে জাহাজের মাধ্যমে যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি পোর্ট নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও সারাদেশের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের জন্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। মাত্র ৪-৫ ঘণ্টায় ভোলা থেকে নদীপথে মালামাল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো সম্ভব। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোলা ছিল এক সময় ধান, সুপারি, ইলিশের জেলা। এখন ভোলা হয়েছে গ্যাস, বিদ্যুত আর নিশ্চিত নিরাপদ জেলা। এ জেলা শান্তির নগরী; যেটি শিল্পায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভোলাও এগিয়ে যাচ্ছে। ভোলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর, ভারতসহ বিভিন্ন দেশী বিদেশী কোম্পানি ভোলায় শিল্পকারখানা গড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. এসএ সামাদ সভাপতির বক্তব্যে বলেছেন, ‘ভোলা হবে সিঙ্গাপুরের চেয়েও উন্নত শিল্পনগরী। এখানেও আছে শিল্প কলকারখানা গড়ার সকল উপাদান।’ কর্মশালায় উপস্থিত বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেছেন, ‘ভোলার চরফ্যাশনকে পর্যটন এলাকা গড়তে ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।
×