ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গুলশান অফিসে খালেদার ৩০ দিন- মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

গুলশান অফিসে খালেদার ৩০ দিন- মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বাসা ছেড়ে গুলশান কার্যালয়ে ৩০ দিন পার করলেন। তবে ফোন, ইন্টারনেট ও ডিশলাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় স্বস্তিতে নেই তিনি। শনিবার সকাল থেকে এ নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকায় গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ফোন, ইন্টারনেট ও ডিশলাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে কার্যালয়ের কাছে মিছিল করেছে মহিলা দল। এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করে দিনভর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, তার দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান এবং বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানার সঙ্গে কথা বলে সময় পার করেন। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে তার প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ অন্যদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলেন। ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি হিসেবে ২ দিন আগেই অর্থাৎ ৩ জানুয়ারি রাতে গুলশানের বাসা ছেড়ে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান নেন খালেদা জিয়া। ওদিন মধ্যরাতে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে দেখার জন্য নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে দলের কিছু নেতাকর্মীকে নিয়ে তিনি গুলশান কার্যালয়েই রাত কাটান এবং এখন পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। এক পর্যায়ে ওদিন মধ্যরাতেই গুলশান কার্যালয়ে পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরদিন জলকামান, সাঁজোয়া যান ও মালবাহী ট্রাক দিয়ে খালেদা জিয়ার বাসার সামনে ব্যারিকেড দেয়া হয়। ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলেও এ বিষয়ে ডিএমপি থেকে অনুমতি পায়নি বিএনপি। তবে অনুমতি ছাড়াই সমাবেশ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ৫ জানুয়ারি বিকেলে গুলশান কার্যালয় থেকে বের হওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে বসেন খালেদা জিয়া। তবে দুপুর থেকেই পুলিশ গেট বন্ধ করে দেয়ায় তিনি ভেতর থেকে বের হতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা মহিলা দলের নেতাকর্মীরা গেটে লাথি মেরে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি পুলিশকে গেট খুলে দেয়ার জন্য চেঁচামেচি শুরু করেন। কিন্তু পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পিপার স্প্রে ছোড়ে। এর কিছুক্ষণ পর খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের এ আচরণের কঠোর সমালোচনা করে সরকারের বিরুদ্ধে টানা অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণা দেন। অবশ্য অবরোধ কর্মসূচীর ভেতর মাঝেমধ্যে হরতালও পালন করছে বিএনপি জোট। সর্বশেষ রবিবার থেকে টানা ৭২ ঘণ্টা হরতাল পালন করছে তারা। পুত্রশোকে কাতর খালেদা জিয়ার মানসিক অবস্থা এখনও ভাল নয়। এ ছাড়া তিনি কিছুটা অসুস্থও। তবে চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করছেন। আর আন্দোলনের ভবিষ্যত নিয়েও তিনি চিন্তিত। তবে যখনই আন্দোলন প্রসঙ্গ আসছে তখনই তিনি বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। রবিবার বিকেল পৌনে চারটায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় মিছিল করে ঢাকা মহানগর মহিলা দলের নেতাকর্মীরা। তারা ৮৬ নম্বর রোডের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে মিছিল বের করে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত যায়। এ সময় পুলিশ ছিল সতর্ক পাহারায়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সভাপতি সুলতানা আহমেদ। মিছিলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলামসহ প্রায় ৩০ নেতাকর্মী। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে টেলিফোন, ইন্টারনেট ও ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তারা এ মিছিল করেছে বলে ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সভাপতি সুলতানা আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
×