ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাবেক পাক তারকা ক্রিকেটার ইনজামাম

ভারতের কাছে হেরেও ট্রফি জিতলে দুঃখ থাকবে না

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ভারতের কাছে হেরেও ট্রফি জিতলে দুঃখ থাকবে না

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান-ভারত ম্যাচ নিয়ে চলছে আগাম উন্মাদনা। এ যেন বিশ্বকাপের ভেতর অন্য উত্তাপ। অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক বলেছেন, এবার ইতিহাস বদলে দিয়ে চিরশত্রুর বিপক্ষে জয় পেতে মরিয়া তারা। সাবেক তারকা শোয়েব আখতারের মতে, সাম্প্রতিক নৈপুণ্যের বিচারে এগিয়ে থাকছে ভারতই। ইনজামাম-উল হক করলেন ব্যতিক্রম মন্তব্য। সাবেক অধিনায়ক ও পাকিস্তানের একমাত্র বিশ্বজয়ের (১৯৯২) অন্যতম সারথি, বিশ্বকাপ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বললেন, শেষ পর্যন্ত আফ্রিদিরা যদি বিশ্বকাপ জয় করে তবে, ভারতের কাছে হারলেও দুঃখ থাকবে না তার! বিশ্বকাপের ‘হাইপ্রোফাইল’ এই ম্যাচ ঘিরে বইছে পারদ-উত্তেজনা। অনলাইনের টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে মাত্র ২০ মিনিটে। মাঠ ও মাঠের বাইরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্রিকেট পরাশক্তির ম্যাচটি উপভোগ করবেন প্রায় ১.৩ বিলিয়ন (১শ’ ৩০ কোটি) সমর্থক! ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যন্ড-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শুরু শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। পরদিন এ্যাডিলেড ওভালে উন্মাদনার পাক-ভারত ম্যাচ। ‘বিশ্বকাপের শুরুতেই এবার ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে পাকিস্তান। উভয়ের জন্য ম্যাচটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল, যে ম্যাচ নিয়ে আগাম মন্তব্য করা কঠিন। তবে ভারতের কাছে হারলেও দুঃখ থাকবে না, যদি মিসবাহ-আফ্রিদিরা শেষ পর্যন্ত ট্রফি জয় করতে পারে!’ বলেন ইনজামাম। ভারত, পাকিস্তান দুই দলেরই সাম্প্রতিক অবস্থা ভাল নয়। ভারত গত আড়াই মাস অস্ট্রেলিয়া সফরে এখন পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি। অপরদিকে নিউজিল্যান্ডের কাছে দুই ম্যাচের ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ দিয়ে শুরু পাকিদের। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত পাঁচবার মুখোমুখি (১৯৯২, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩ ও ২০১১) হয়ে প্রতিবারই হেরেছে পাকিস্তান! এবার কী বদলাবে ইতিহাস? অধিনায়ক মিসবাহ যতই আত্মবিশ্বাস দেখাক, এ নিয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করেননি ‘বিগ ম্যান’ ইনজামাম। যিনি ১৯৯২-এ জীবনের প্রথম বিশ্বকাপেই সফলতা দেখেছেন খুব কাছে থেকে এবং সেটি এই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে! সেবারও পাকিস্তান ফেবারিট ছিল না। অতীত স্মৃতি স্মরণ করে ৪৫ বছর বয়সী ইনজামাম বলেন, ‘সেটি ছিল আমার প্রথম বিশ্বকাপ। স্পষ্ট মনে আছে এক মাস আগে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ৬ প্রস্তুতি ম্যাচের সবই হেরেছিলাম! কেউ ভাবতেই পারেনি মূল মঞ্চের গল্পটা ওভাবে লেখা হবে। একের পর এক ম্যাচে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমার মনে হয় ইমরান খান ও ওয়াসিম আকরামের মতো পেসাররাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছিল। রিভার্স সুইং, ইয়র্কারের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছিল তারা। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে সুইং ডেলিভারি দেয়াটা একদমই কঠিন নয়।’ কিন্তু এই দলে সুইং বা ইয়র্ক ডেলিভারি দেয়ার মতো পরীক্ষিত পেসার কোথায়? এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কারণ নেই বলে মনে করেন ইনজামাম। তিনি যোগ করেন, ‘ঝড় তোলা দ্রুতগতির চেয়ে বরং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বোলিং করাটা হবে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আগেই বলেছি অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে যে কোন পেসারই ভাল করতে পারবে। মোহাম্মদ ইরফান দারুণ কার্যকর হতে পারে। তবে কিছুটা দুঃখজনক ইনজুরির জন্য উমর গুল ও জুনায়েদ খান নেই।’ ছোট-বড় যেমন হোক, বিশ্বকাপের মতো আসরে প্রতিটি দলের জন্য প্রথম ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নকআউট বা ফাইনাল না হলেও তাই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটি দু-দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু হবে দুই পরাশক্তির। ‘বি’ গ্রুপের অপর পাঁচ দল দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে, আয়ারল্যান্ড ও আরব আমিরাত। সুতরাং বড় কোন অঘটন না ঘটলে ভারত-পাকিস্তান দু’দল অনায়াসেই শেষ আটে জায়গা করে নেবে। মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো অধিনায়ক আছে বলেই ভারতকে আলাদা সমহী ইনজামামের, ‘আমার মনে হয় ধোনির মতো অধিনায়ক আছে বলেই ভারত অসাধারণ কিছু করে বসবে। মাথা ঠা-া রেখে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া, কঠিন চাপের মধ্যে ব্যাট হাতে পারফর্ম করার গুণ ওকে ব্যতিক্রম করে তুলেছে। অস্ট্রেলিয়ায় ওদের সময়টা ভাল কাটেনি, তবে বিশ্বকাপ বড় মঞ্চ। বড় মঞ্চের বড় দল ভারত, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভালভাবেই সম্ভাবনার তালিকায় থাকবে।’
×