ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চিনি কলের বর্জ্য

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

চিনি কলের বর্জ্য

বাংলাদেশের উত্তর-দক্ষিণ অঞ্চলের ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান বলতে শুধুমাত্র চিনি শিল্প, যার কাঁচামাল আখ। আখ চাষে উৎসাহিত করার জন্য জাতীয় বাজেটের কৃষিখাত থেকে আখ চাষে বীজ ও সেচ খাতে ভর্তুকি প্রদানসহ কৃষকদের অধিকতর সহায়তা দান করলে আখের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। আখের ফলন বৃদ্ধির জন্য লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার উচ্চ ফলনশীল স্বল্পমেয়াদি আখের জাত উদ্ভাবনসহ মিলগুলোকে সারাবছর চলমান রাখার স্বার্থে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্ট, র-সুগার প্রসেস প্ল্যান্ট, ডিস্ট্রিলারী স্থাপন ও বাস্তবায়ন করে চিনি কলগুলোর আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ বলতে হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বর্তমানে ৬০০ চিনিকলে সর্বমোট চিনি উৎপাদন করে ২৫ মিলিয়ন টন, যার সঙ্গে জড়িত ৫০ বিলিয়ন আখচাষী। তারা চিনিকলগুলোকে লাভবান করতে ১৮০টি চিনিকলে ঈড়-এবৎহবৎধঃরড়হ এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এবং ৩০৯টি উরংঃরষষবৎরবং এর মাধ্যমে চড়ঃধনষব ধষপড়যড়ষ উৎপাদন করে কোটি কোটি টাকা আর্থিকভাবে লাভ করতে সহায়তা করছে। পক্ষান্তরে ভারতের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করে চিনি শিল্পকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব, সেই সঙ্গে যুগোপযোগী চিনি বিক্রয় নীতিমালা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে। চিনি বিক্রয়ের স্থায়ী নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে, অথবা উৎপাদিত চিনি শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারকে ক্রয়করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিক্রয় করতে হবে। অন্যথায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত সরকারী চিনি কলের উৎপাদিত ও মজুতকৃত চিনি অবিক্রীত হয়ে পড়ে থাকলে বা নষ্ট হয়ে গেলে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুণতে হবে এবং ব্যাংকগুলোর ঋণের টাকা উঠাতে না পারলে দেউলিয়া হবে। অন্যদিকে আবার নতুন সমস্যার উদয় হয়েছে দেশ স্বাধীনের ৪৩ বৎসর পর। দেশীয় চিনি কলের উৎপাদন মৌসুমে বর্জ্য মিশ্রিত পানি বিভিন্ন নদ-নদীতে প্রবাহিত হয়ে ভারতের প্রবেশকরলে তাদের নদীর মাছসহ ফসলের ক্ষতিকর অজুহাত আনয়ন করে বিশাল জটিলতার সৃষ্টি করেছে। জটিলতা মিটাতে সরকার প্রতিটি চিনিকলে বর্জ্য শোধনাগার প্রস্তুতের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ বিষয়ে পরামর্শ, শুধুমাত্র পানি পরিশোধনাগার নির্মাণ না করে তার সঙ্গে সামান্য কিছু ব্যয় করে পানি শোধন করে পানীয়জলের বোতলজাত কারখানা প্রস্তুতের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে পারলে আর্থিকভাবে শিল্পটি সহায়ক হবে এবং বর্জ্যগুলো দিয়ে জৈব সার কারখানা করলে প্রাকৃতিক সার উৎপাদন সম্ভব। চাষীরাও রাসায়নিক সারের ব্যবহার বর্জন করবে এবং সেইসঙ্গে এই সারের প্রতি ঝুঁকে পড়বে। শিল্পগুলোও লাভবান হবে এবং বেকার যুবকদের শ্রেণী অনুসারে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। খন্দকার শহীদুল ইসলাম সভাপতি, বাংলাদেশ চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন
×