ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ, র্যাব বিজিবির সতর্ক প্রহরা

সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচী থাকায় সিরাজগঞ্জে নৈরাজ্য কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচী থাকায় সিরাজগঞ্জে নৈরাজ্য কম

বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ চলমান সহিংসতায় সিরাজগঞ্জে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার বাহিনী সময়ে সময়ে কৌশল পরিবর্তন করেও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের তেমন বিস্তৃতি ঘটাতে পারেনি। রাজনৈতিক কর্মসূচীর আড়ালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের পেট্রোলবোমা মেরে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার ঘটনায় সাধারণ মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে। ১শ’ ৫০ কিলোমিটার মহাসড়কসহ প্রায় আড়াই শ’ কিলোমিটার সড়ক মহাসড়কে হরতাল অবরোধের গত ৩২ দিনে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘটিত ৫টি পেট্রোলবোমার ঘটনায় গণেশ নামের একজন সিএনজি যাত্রী নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছে। সন্ত্রাসীরা তিনটি ট্রাকে এবং ২ সিএনজিতে পেট্রোলবোমা ছুড়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ, র্যাব ও বিজেবির সতর্ক পাহারা, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচী এবং মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় ও প্রশাসনের তৎপরতায় অন্য যে কোন জেলার তুলনায় সিরাজগঞ্জে সন্ত্রাস নৈরাজ্য কম হয়েছে। পুলিশ জনতার প্রতিরোধে নাশকতা চলাকালে হাতেনাতে বিএনপি শিবিরের ৬ বোমাবাজসহ প্রায় দেড় শ’ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পালানোর সময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জামায়াত কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। তবে আটককৃতদের মধ্যে প্রায় অর্ধশত সরকারী দলের আইনজীবীদের সহায়তায় জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও অনেকেই নাশকতায় জড়িয়েছে। ২০১৩ সালে ২৫ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে হত্যাকা-সহ নাশকতা হয়েছে। সে সময় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চ-িদাসগাতি, খোকসাবাড়ি, বহুলী, বেলকুচি উপজেলার কল্যাণপুর, মবুপুর, গাবগাছি ও উল্লাপাড়া উপজেলার শ্রীকোলা এলাকায় বিএনপি জামায়াত শিবিরের তা-বে মোট সাতজন নিহত হয়েছিল। বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। নিত্যদিন হামলা ভাংচুরের ঘটনায় সাধারণ মানুষসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও হামলার শিকার হয়েছিলেন। তবে বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল অবরোধের নামে দেশব্যাপী সন্ত্রাস, নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের প্রতিরোধে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ এখন অনেক সংগঠিত এবং শক্তিশালী। রাজপথে তাদের সরব উপস্থিতি তারই প্রমাণ। রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে রাজপথে যে কোন নাশকতা মোকাবেলায় দলীয় নেতাকর্মীরা একযোগে মাঠে থাকছে। শুধু জেলা সদর নয়- কাজীপুর, বেলকুচি, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর এবং তাড়াশসহ দলের ১২ সাংগঠনিক থানার নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দলে এবং প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি সন্ত্রাস নৈরাজ্য প্রতিরোধের কর্মসূচী তদারকি করছেন। সিরাজগঞ্জ সদর আসনের এমপি অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুনাকে আহ্বায়ক করে জেলা নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার পর নিজে উপস্থিত থেকে পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ শহরে ৫ পয়েন্টে হরতাল অবরোধের সময়ে সতর্ক পাহারায় থাকছে দলের নেতাকর্মীরা। ৩০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টা। সিরাজগঞ্জ- বেলকুচি সড়ক পথে ৫ জন যাত্রী নিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা শহর থেকে কড্ডায় যাচ্ছিল। হঠাৎ শহরতলীর রামগাতিতে বিপরীতমুখী একটি মোটরসাইকেলযোগে ২ যুবক অটোরিক্সায় পেট্রোলবোমা ছুড়ে দেয়। তৎক্ষণাৎ চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের একটি বাউন্ডারি ওয়ালে ছিটকে পড়ে যাত্রী গণেশ মাথায় আঘাতজনিত কারণে নিহত হয়। পেট্রোলবোমায় অগ্নিদগ্ধ হয় সিএনজি চালক আলহাজ। এছাড়াও অটোরিক্সার যাত্রী আবু সাইদসহ আরও চারজন আগুনে পুড়ে যায়।
×