ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বেঙ্গলে তিন শিল্পীর প্রদর্শনী ‘দ্য প্যারাডক্সিক্যাল নাও’

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বেঙ্গলে তিন শিল্পীর প্রদর্শনী ‘দ্য প্যারাডক্সিক্যাল নাও’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেয়ালে শোভা পাচ্ছে উপনিবেশকালীন নবাবদের প্রতিকৃতি, কোথাও ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধরত যোদ্ধা, প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের মধ্যে রয়েছে দরজা, জানালায় খচিত কারুকাজ আবার কোথাও রয়েছে প্রাচীন স্বর্ণমুদ্রা ও যাপিত জীবনের নানা উপকরণের ছবি। এমনি সব ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে ধানম-ির বেঙ্গল গ্যালারিতে শুরু হয়েছে ‘দ্য প্যারাডক্সিক্যাল নাও’ শীর্ষক দলীয় চিত্রকলা প্রদর্শনী। এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে দেশের প্রতিভাবান তিন শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম। শিল্পীরা হলেনÑ ফিরোজ মাহমুদ, আনিসুজ্জামান সোহেল ও ইয়াসমিন জাহান নূপুর। শনিবার সন্ধ্যায় বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস আয়োজিত ষোলো দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চিত্রশিল্পী অধ্যাপক নিসার হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, এ প্রদর্শনী প্রাচীন ঐতিহ্যকে তুলে ধরার এক বিশেষ প্রয়াস। এর মাঝে আমরা খুঁজে পাচ্ছি সমসাময়িক প্রেক্ষাপট। আমাদের দেশে এখনও চলছে যুদ্ধ, মানুষে-মানুষে হানাহানি। এই তিন শিল্পী তাঁদের শিল্পকর্মের মধ্যে বর্তমানকেও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর অতিথিরা ঘুরে ঘুরে গ্যালারির বিভিন্ন ছবি দেখেন। উপনিবেশকালীন যুদ্ধবিগ্রহ, বিদ্রোহ, সংঘাত এবং প্রাসাদ স্বড়যন্ত্রের প্রতীকায়িত উপস্থাপনা দেখা যায় ফিরোজ মাহমুদের চিত্রকর্মে। বাংলার নবাবদের দুর্ভাগ্য ও স্বাধীনতা হারানোর বেদনা শিল্পীর চিন্তাকে প্রভাবিত করে। উজ্জ্বল রং এবং বিভিন্ন মোটিফের ব্যবহার তাঁর ড্রইংকে করেছে ঋদ্ধ। মর্মবেদনা, সামাজিক বিকৃতি, ক্ষয়িষ্ণু মূল্যবোধ, সাম্প্রদায়িক ও অর্থনৈতিক নিষ্পেষণ, অবদমিত নৈতিকতা আনিসুজ্জামান সোহেলের চিত্রকলায় প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের নিত্য যাপিত জীবনে ব্যবহৃত নানা মোটিফ তাঁর চিত্রকর্মের অন্যতম অনুষঙ্গ। ধারণাগতভাবে কিছুটা বিমূর্ত হলেও সোহেলের চিত্রকর্মে প্রকাশবাদিতার নিগূঢ় ভূমিকা আছে। বিভিন্ন প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপনার নির্মাণশৈলী নূপুরের চিত্রকর্মে অনুপ্রেরণার জোগান দেয়। বিশেষত মোগল আমলের এসব স্থাপত্যকর্মের বিভিন্ন অংশ যেমন দরজা, জানালা, স্তম্ভ, গম্বুজশীর্ষ ইত্যাদির বৈচিত্র্যধর্মী এবং অন্যান্য সৌন্দর্য নূপুরের চিন্তার জগতে নুতন ক্ষেত্র তৈরি করে। অঙ্কনরীতির সরলীকরণ, বিচিত্র প্রতীকের ব্যবহার, অতীতের অবগাহন, সত্যের ধাঁধাময় উপস্থিতি- নানাভাবেই এই তিন শিল্পীর চিন্তার জগত বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। প্রতিটি চিত্রকর্মের মধ্যে যেন প্রতীয়মান হয় শিল্পীরা সমকালীন শিল্পচর্চায় নতুন ভাবনা, উপাদান এবং সংলাপের বিস্তার ঘটাতে আগ্রহী। প্রদর্শনীতে ৯টি স্থাপনাকর্মসহ মোট শিল্পকর্মের সংখ্যা প্রায় ৪০টি। প্রদর্শনী চলবে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। ১১তম বঙ্গীয় শিল্পকলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন ॥ প্রাচীন ও মধ্যযুগের বঙ্গীয় শিল্পকলা অধ্যয়ন ও চর্চায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠান বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্র। এটি বর্তমান সরকারের আমল থেকে প্রায় সম্পূর্ণ সরকারী অনুদানে পরিচালিত। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ১১তম বঙ্গীয় শিল্পকলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন-২০১৫। রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইন মিলনায়তনে সকালে চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশের দুইজন ও ভারতের একজন শিল্পকলাবিদকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশের দুইজন হলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক হিস্ট্রি এ্যান্ড কালচার বিভাগের প্রফেসর নাজমা খান মজলিশ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সুদিপা রায় বন্দ্যোপাধ্যায়। শিশিরে কবিতার স্পন্দন শীর্ষক কবিতা পাঠের আসর ॥ প্রাণবন্ত এক কবিতা পাঠের আসর বসে রাজধানীর পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে শনিবার বিকেলে। ‘শিশিরে কবিতার স্পন্দন’ শীর্ষক এ আসরের আয়োজন করে গণমাধ্যম সংস্থা ঘাসফুল। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেনÑ কবি আনোয়ারা সৈয়দ হক, আসাদ চৌধুরী, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, মুহম্মদ নূরুল হুদা প্রমুখ।
×