ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাকিস্তানে সৌদিদের বিরল পাখি শিকার নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

পাকিস্তানে সৌদিদের বিরল পাখি শিকার নিয়ে তোলপাড়

কয়েক দশক ধরে আরব রাজ পরিবারের শিকার অভিযানগুলো হুবারা বাসটাড্ পাখির খোঁজে পাকিস্তানের সুদূর প্রান্তে ভ্রমণ করেছে। হুবারা হেলেদুলে চলা একটি পরিযায়ী পাখি, যার মাংসে যৌন উদ্দীপক শক্তি রয়েছে বলে শিকারীদের ধারণা। শীতকালীন এ এলাহি শিকার আয়োজনের জন্য অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে কোন কার্পণ্য করা হয় না। কার্গো বিমানগুলো মরুভূমির শুল্কবিভাগ নির্মিত এয়ারস্ট্রিপগুলোতে তাঁবু ও বিলাসবহুল জিপ বহন করে নিয়ে যায়। এরপর উপসাগরীয় দেশগুলোর রাজা ও রাজপুত্রদের নিয়ে প্রাইভেট জেটগুলো সেখানে অবতরণ করে। তারা সঙ্গে নেন আরেকটি মূল্যবান উপকরণÑ শিকার করার বহুমূল্য বাজপাখি যাদের সাদা পালকের হুবারা নিধনের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। অবশ্য এ বছরের শিকার অভিযান বাধার মুখে পড়ে গেছে। প্রকা- ও অস্থির পাকিস্তানী প্রদেশ বেলুচিস্তানের হাইকোর্ট গত নবেম্বরে সংরক্ষণবাদীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সকল বিদেশী শিকার পারমিট বাতিল করে দিয়েছে। প্রদেশটি শিকারীদের একটি প্রিয় স্থান। পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, হুবারার আবাস এবং সম্ভবত এ প্রজাতির দীর্ঘমেয়াদি অস্তিত্ব; যা ইতোমধ্যে শিকারীদের জন্য হুমকির মুখে পড়েছে। গত সপ্তাহে একজন সিনিয়র সৌদি প্রিন্স ও তার সফরসঙ্গীরা বেলুচিস্তানে অবতরণ করলে ওই আদালতের আদেশ একটি ছোটখাটো রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্ম দেয়। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয় এবং আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্কিত একটি আইনী লড়াই দেশের সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত গড়াতে পারে। সংরক্ষণবাদীদের ক্ষোভ চরমে ওঠে যখন প্রকাশ পায় যে, সৌদি আরবের তাবুক প্রদেশের গবর্নর ফাহদ বিন সুলতান বিন আবদুল আজিজ তার দলবল নিয়ে গত বছর ২১ দিনের শিকারাভিযানে দু’হাজার একশ’ হুবারা নিধন করেন। পাকিস্তানী গণমাধ্যমে ফাঁস হওয়া এক সরকারী রিপোর্টে বলা হয়, তিনি তার বরাদ্দ কোটার চেয়ে ২০ গুণ বেশি হুবারা শিকার করেছেন। তবুও প্রিন্স ফাহদ বুধবার আফগান সীমান্তের কাছে ধূলিধূসর শহর ডালবান্দিনে অবতরণ করলে কমই বিরুদ্ধ সমালোচনার সম্মুখীন হন। বরং একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল যেখানে প্রাদেশিক সিনিয়র কর্মকর্তারাও ছিলেনÑ তাকে স্বাগত জানান। উল্লেখ্য, স্থানীয় লোকজনকে খুশি করতে আরব শিকারীরা স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ এবং সেইসঙ্গে অভাবনীয় সব জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের এয়ারস্ট্রিপ (বিমান অবতরণের স্থান) নির্মাণ করে থাকে।
×