ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রকৃতিতে রূপ বদলের ছোঁয়া

কৃষ্ণচূড়ার লালে রঙিন হবে ফাগুন, উড়ছে পাখি পলাশ-শিমুলে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

কৃষ্ণচূড়ার লালে রঙিন হবে ফাগুন, উড়ছে পাখি পলাশ-শিমুলে

মাকসুদ আহমদ কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে রঙিন হবে ফাগুন। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই লাল গালিচার ন্যায় রূপান্তরিত হবে প্রকৃতি। ইতোমধ্যে গাছে গাছে নতুন পাতা গজানো শুরু হয়েছে। বৃক্ষ ফিরে পাবে সতেজতা। শীতের শুরুতে যে প্রকৃতি নগ্নরূপ ধারণ করেছিল তাতে এখন পরিবর্তনের ছোঁয়া। মাঘের শীত পৌঁছেছে ক্রান্তিলগ্নে। ফাগুনের যাত্রা শুরু হলো বলে! প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ফাগুনকে বরণ করে নিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ আয়োজনে চট্টগ্রামের ডিসি হিলে প্রকৃতি ঘেরা পরিবেশে অনাবিল পরশের মধ্য দিয়ে মোহিত হবে আগতরা। যেখানে পাহাড়ের পাদদেশে গড়া মঞ্চে সাংস্কৃতিক কর্মীরা ফাগুনের জয়গানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে। শীত এলেই প্রকৃতি তার রূপ হারিয়ে ফেলে। সবুজের হাতছানি দেয়া অঙ্গে তখন শুষ্কতা ভর করে। ফলে গাছের পাতা যেমন ঝরে যায়, তেমনি নিস্তেজ হয়ে যায় পরিবেশ। ভারসাম্যহীনতা যেন প্রকৃতির গড়া পরিবেশকে এক কালো অধ্যায়ের দিকে ঢেলে দেয়। তখন ধুলোবালিপরিবেষ্টিত হয়ে পড়ে প্রকৃতি। প্রকৃতির এ পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয় ষড়ঋতুর এদেশে ৫ম ঋতুতেই, তথা শীতকাল। শীতের পরই শুরু বসন্তের। বসন্তের যাত্রা শুরু হয় ফাগুন মাসকে ঘিরে। এদেশে চোখে পড়া ফুলগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ রঙিন ফুলগুলো ফাগুনের অপেক্ষায় থাকে। শুধু যে ফাগুনেই ফোটে তা নয়। ফাগুনের সাড়া পেলেই গাছে গাছে তখন ফুটতে শুরু করে পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণচূড়া। চোখ ধাঁধানো এসব ফুলে মনোমুগ্ধকর কোন ঘ্রাণ না থাকলেও শোভা রয়েছে পরতে পরতে। এ শোভাই যেন আকর্ষণ করে তোলে প্রকৃতিপ্রেমীদের। ইতোমধ্যে পলাশ আর শিমুল ধরা দিয়েছে গাছে গাছে। শুরু হয়েছে প্রকৃতি রাঙানোর মুহূর্ত। কৃষ্ণচূড়াও উঁকিঝুঁকি মারছে নিজেকে মেলে ধরার প্রয়াসে। তাক লাগানো বসন্তের আগমনী বার্তা ফাগুনের মধ্য দিয়ে শুরু করতে গিয়ে কৃষ্ণচূড়াই সবচেয়ে বেশি রাঙিয়ে তোলে প্রকৃতি। দূর থেকে যেন বিশালাকায় ফুটে ওঠা ফুলের পাহাড় কৃষ্ণচূড়া। স্বভাবতই কৃষ্ণচূড়া গাছ অনেকটা বটবৃক্ষের মত মৃত্তিকার টানে ন্যুয়ে পড়ে। সেই কৃষ্ণচূড়াই ফুলের লাল আভায় ফুটিয়ে তোলে তার প্রতিটি অঙ্গন। এ যেন পৃথক অঞ্চলে গড়ে তোলা লাল পাহাড়ের সাদৃশ্য। প্রকৃতিপ্রেমীরা এমনও বলেছেন, যদি দশটি কৃষ্ণচূড়া গাছ একই অঙ্গনে লাগানো হয় তাহলে সেই স্থান শোভিত হবে লালিমায়। সুউচ্চ থেকে ফুলের এই সমাহার হবে লাল গালিচার মতো। পলাশ ও শিমুল ফুলকে ঘিরে কোকিলের কুহুতান শোনা যাচ্ছে শীতের শেষ লগ্নে। কাকডাকা ভোরে শীতের বিদায় ঘণ্টা যেন বেজে উঠছে কোকিলের সুরে। পলাশ, শিমুলকে বরণ করে নিচ্ছে কোকিল। শিমুলের গাছে গাছে কোকিল আর ঘুঘুর বিচরণ বাড়ছে। শালিক, ফিঙ্গি আর চড়ুইও পিছিয়ে নেই। ফুলের কলি থেকে শুরু করে ফুটন্ত ফুল থেকেও নিজেদের চাহিদা পূরণ করছে এসব পাখি। আলোকচিত্রীরা তাদের ক্যামেরায় বন্দী করছেন এসব চিত্র। ক্যামেরার ক্লিকে উঠে আসছে শিমুল ফুলে ফুলে ভর করা ঘুঘুর বিচরণ। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলে গেছেন ‘আহা আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোটে, কত পাখি গায়...।
×