ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ২৩৪০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ২৩৪০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে প্রায় তিন হাজার ৩শ’ ৪০ কোটি টাকার (৩০ কোটি মার্কিন ডলার) ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও মায়েদের আর্থিক সেবা দিতে এবং স্থানীয় পর্যায়ে কমন ইম্পিমেন্টেশন প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। ফলে প্রায় পাঁচ লাখ দরিদ্র গর্ভবতী মহিলা ও শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী সন্তানের মা সরাসরি অর্থ সহায়তার আওতায় আসবে। ইনকাম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর দ্য পুওরেস্ট শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে এ সহায়তা দেয়া হবে। সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জোহানেস জাট চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ৩শ’ ৭৭ কোটি ৮০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার বাইরে সরকারী তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ৩৭ কোটি ৮০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্যাকেজ কার্যকর ও সমৃদ্ধ সমন্বিত উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে কমিউনিটি পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবাকে পুনরুজ্জীবিত করা, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হ্রাস করা এবং শিশু ও নারীদের পুষ্টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পের আওতায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের গর্ভকালীন চারবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রেক্ষিতে ২শ’ টাকা হারে নগদ ৮শ’ টাকা প্রদান করা হবে। শূন্য থেকে ৪২ মাস বয়সী শিশুদের প্রতি মাসে গ্রোথ পরীক্ষার প্রেক্ষিতে ৫শ’ টাকা হারে অর্থ প্রদান করা হবে। ২৫ থেকে ৬০ মাস বয়সী শিশুদের প্রতি তিন মাস অন্তর গ্রোথ পরীক্ষার প্রেক্ষিতে প্রতিবার এক হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও মায়েদের জন্য প্রতি মাসে শিশুপুষ্টি ও উন্নত শিক্ষাবিষয়ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ সাপেক্ষে প্রতিবার ৫শ’ টাকা হারে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। ুঅনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর এক-তৃতীয়াংশ সামাজিক কর্মসূচীর আওতায় রয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে অধিকাংশ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হওয়ায় নিরাপত্তা কর্মসূচীর সুবিধাদি প্রকৃত দরিদ্রদের মাঝে পৌঁছাচ্ছে না। সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানের জন্য উপকারভোগী শনাক্তকরণ, তালিকাভুক্তিকরণ, অর্থ প্রদান এবং অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ ইত্যাদি কার্যক্রম করার জন্য কমন ইম্পিøমেন্টেশন প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা গেলে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা দূর হবে। এ প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। ওই প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সাতটি জেলার ৪২ উপজেলার ৪৪৩ ইউনিয়নের ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন পরিবারের প্রায় পাঁচ লাখ দরিদ্র গর্ভবতী ুমহিলা ও শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী সন্তানের মায়েদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় আনা হবে। এ কর্মসূচীটি যেসব উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে সেগুলো হলোÑ গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সাদুল্যাপুর, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী, চররাজিবপুর, চিলমারী, কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, রাজারহাট, রৌমারী ও উলিপুর উপজেলা। লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা। নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলা। জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, জামালপুর সদর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা। ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা, ধোবাউড়া, ফুলবাড়িয়া, গফরগাঁও, গৌরীপুর, হালুয়াঘাট, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ সদর, মুক্তাগাছা, নান্দাইল, ফুলপুর ও ত্রিশাল উপজেলা। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী, নকলা, নালিতাবাড়ী, শেরপুর সদর ও শ্রীবর্দী উপজেলা।
×