ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিষ্ঠুর নাশকতায় নির্বাক শহিদুলের পরিবার

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

নিষ্ঠুর নাশকতায় নির্বাক শহিদুলের পরিবার

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ মেয়ের বিয়ের জন্য এনজিও থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন শহিদুল ইসলাম বিশু (৪০)। সেই ঋণের কিস্তির চাপে ট্রাক নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আর ফেরা হয়নি। নাশকতার আগুনে দগ্ধ হয়ে টানা সাতদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হেরে গেছেন। এখন উপার্জনক্ষম পরিবারের একমাত্র মানুষটিকে হারিয়ে চরম হতাশার সাগরে পুরো পরিবার। তার অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পর ২ ফেব্রুয়ারি থেকেই পরিবারে নেমে আসে হতাশা। আর সাতদিন পর সেই পরিবার এখন পুরো দিশেহারা। স্বামীর মৃত্যুতে এখনও প্রলাপ করছেন স্ত্রী মানসুরা। ছেলে-মেয়েদের চিৎকার দিয়ে কান্না, নির্বাক স্বজনরা। সান্ত¡নার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না কেউ। ছেলে হৃদয় (১৫), মেয়ে তাজমিরা (১৮) ও ছোট বোন নিশা (১২) ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন। ছেলে হৃদয় কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, সে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। বাবার উপার্জনেই তাদের সংসার চলত। তার প্রশ্ন এখন কে দাঁড়াবে আমাদের পাশে, আমাদের সংসার চলবে কিভাবে? ছোট বোন ও তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা। বড় বোনের বিয়ের সময় বাবার নেয়া ঋণের বোঝা আমরা কিভাবে পরিশোধ করব। এদিকে মঙ্গলবার শহীদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা শেষে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আজ এক শহিদুলের জানাজা হলো। এমন সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে না পারলেও আগামীতে আরও অনেক শহিদুলের জানাজায় অংশ নিতে হবে আমাদের। এমন সহিংসতা আমরা চাই কি না- প্রশ্ন রাখতেই হাজারো মানুষ সহিংসতা রুখে দিতে শপথ নেন। প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর নওদাপাড়া এলাকায় লিলি সিনেমা হলের সামনে অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়েছিলেন ট্রাকের হেলপার শহিদুল। সোমবার বিকেলে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
×