ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুই তো রাজনীতি করো না ॥ কারা কিসোক পুড়ি মারলো

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মুই তো রাজনীতি করো না ॥ কারা কিসোক পুড়ি মারলো

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ১০ ফেব্রুয়ারি ॥ কি অপরাধ ছিল! সাত বছরের ছোট্ট শিশু তানজিনার। গাইবান্ধার তুলসীঘাটের বুড়িঘর এলাকায় পেট্রোল বোমা হামলায় মা ও ভাইকে হারিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতাল বেডে এখন যন্ত্রণা কাতর এ শিশুটি। নিষ্পাপ এ ছোট্ট মেয়েটি মানুষরুপী পশুদের পাশবিকতা ও ভয়াবহতা দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছে। পেট্রোলবোমার আগুনে ছোট মেয়ে তানজিনার কাধ, হাত-পাসহ শরীরের প্রায় ৮ ভাগ অংশ পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এখন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তার বাবা মোহাম্মদ তারা মিয়া (৪৫) নিজে অগ্নিদগ্ধ হয়ে স্ত্রী-ছেলেকে হারিয়ে এবং অগ্নিদগ্ধ ছোট মেয়েটিকে নিয়ে এখন চরম দুঃখে মুহ্যমান। তারা মিয়ারও দু’হাতের কব্জি ও মাথার ডান পাশসহ শরীরের ৭ ভাগ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। তার বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা চ-িপুর ইউনিয়নের চ-িপুর পাইকপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত ফিকির আলাইয়ের ছেলে। পেশায় তারা মিয়া রিক্সাচালক। স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকার এয়ারপোর্ট এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার তার। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এক মাস আগে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন আর ঢাকায় ফিরে যাওয়ার পথেই এ দুর্ঘটনা। পেট্রোলবোমায় দগ্ধ হয়ে স্ত্রী সোনাভান ও ১০ বছরের শিশু সন্তান সুজন মারা গেছে। তারা মিয়া আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘একদিন কাম না করলে মোর খাওয়া-পরা জোটে না। মুই তো কোন রাজনীতি করোম না। কোন দোষও করম নাই। কারা কিশোক মোর সকলকে পুড়ি মারলো। এখন মাহারা ছোট্ট মেয়েটাক মুই কেমন করি মানুষ করিম।’
×