ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মির্জা আব্বাস কোথায়? গুঞ্জন আছে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মির্জা আব্বাস কোথায়? গুঞ্জন আছে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস এখন কোথায়? এমন প্রশ্ন খোদ বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যেই। টানা অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণার পর একদিন রাজপথে নামার চেষ্টা করলেও পুলিশের ধাওয়া খেয়ে দ্রুত সটকে পড়েন মির্জা আব্বাস। এর পর থেকে তাকে আর দেখা যাচ্ছে না। কেউ বলছেন পুলিশের হাতে গ্রেফতার এড়াতে তিনি ঢাকায়ই পালিয়ে আছেন। আবার কেউ বলছেন তিনি গ্রেফতারের ভয়ে গোপনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে নিশ্চিত করে কেউই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না। ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক হওয়ার আগে মির্জা আব্বাস হাঁকডাক দিয়ে বলতেন তিনি মহানগরের দায়িত্বে থাকলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ হতো না। আন্দোলন কাকে বলে তিনি দেখিয়ে দিতেন। এ পরিস্থিতিতে গত বছর জুলাই মাসে মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করে দেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। কিন্তু এর পর থেকে কোন কর্মসূচীতেই তেমন সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারছেন না মির্জা আব্বাস। বিশেষ করে সরকার পতনের লক্ষ্য নিয়ে টানা অবরোধ কর্মসূচী পালন করা হলেও বিএনপির এ আন্দোলনে মাঠে নেই মির্জা আব্বাস। মাঝে দু’একদিন বিবৃতি দিলেও এখন তার পক্ষ থেকে কোন বিবৃতিও আসছে না। আর এ কারণেই গুঞ্জন উঠেছে মির্জা আব্বাস বিদেশে পালিয়ে গেছেন। প্রসঙ্গত: ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা যান। ২৭ জানুয়ারি তার লাশ ঢাকায় আনা হয়। এ সময় দলের অধিকাংশ নেতা গুলশান কার্যালয়ে গেলেও মির্জা আব্বাসকে দেখা যায়নি। এমনকি কোকোর জানাজায়ও মির্জা আব্বাস যাননি। তাই মির্জা আব্বাস এখন দেশে আছেন নাকি বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন, তা নিয়ে জোর গুঞ্জন উঠেছে। কেউ-কেউ বলছেন তিনি দেশেই আত্মগোপনে আছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, আব্বাস ইতোমধ্যে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে আব্বাসের ‘বিদেশ পাড়ি’ দেয়ার গুঞ্জনই দিনে-দিনে ডালপালা মেলেছে। কারও কারও কাছে বিদেশী নম্বর থেকে মির্জা আব্বাস ফোনে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। তবে এ কথার পুরোপুরি সত্যতা মেলেনি । জানা যায় ৫ জানুয়ারি মির্জা আব্বাসের এলাকা শাজাহানপুরে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি করে। ওই রাতেই আব্বাসের শাজাহানপুরের বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার খোঁজে যায়। কিন্তু তিনি তখন বাসায় ছিলেন না। ওই ঘটনার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে যান। ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফিরে যাওয়ার ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সমালোচনা করে ওইদিন অজ্ঞাত স্থান থেকে ভাইবারের মাধ্যমে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের আচরণকে তিনি অর্বাচীনের মতো আচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সদস্যসচিব সোহেলের সঙ্গে যৌথ বিবৃতি দিয়ে যার যার অবস্থানে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তারপর থেকে আব্বাসের আরও কোন বক্তব্য-বিববৃতি নেই। এখন তিনি কোথায় আছেন তাও কেউ বলতে পারছেন না। তার মুঠোফোনেও রিং হচ্ছে না। তবে মির্জা আব্বাসের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে এমন একটি সূত্র জনকণ্ঠকে জানান, মির্জা আব্বাস দেশেই রয়েছেন এবং ঢাকায়ই আছেন। তিনি বাংলাদেশে বসেই মাঝেমধ্যে বিদেশী রোমিং করা নম্বর ব্যবহার করছেন, যাতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তার অবস্থান নিশ্চিত হতে না পারে। এজন্যই তিনি কাউকে কল দিলে বিদেশী নম্বর প্রদর্শিত হচ্ছে। আপাাতত আত্মগোপনে থাকার ব্যাপারে বিএনপি হাইকমান্ডেরও নির্দেশনা রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
×