ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ শেষে নেতৃত্ব ছাড়ার আহ্বান ক্লার্ককে

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিশ্বকাপ শেষে নেতৃত্ব ছাড়ার আহ্বান ক্লার্ককে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অভাবটা বোঝা যায়নি। বিশ্বকাপের ঠিক আগমুহূর্তে ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং সফরকারী ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তার অনুপস্থিতিতে তরুণ স্টিভেন স্মিথ আর জর্জ বেইলি বেশ ভালভাবেই সামলেছেন অস্ট্রেলিয়া দলকে। ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অসিরা নিয়মিত অধিনায়ক ক্লার্ককে ছাড়াই। গত ডিসেম্বরে পিঠের ইনজুরির কারণে অস্ত্রোপচারের শরণাপন্ন হওয়া অসি দলপতি এখন ফেরার সংগ্রাম করছেন। আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছেন তিনি। এরপরও বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্য্যান্ডের বিরুদ্ধে তার খেলা হচ্ছে না। হ্যামস্ট্রিং সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে না পারায় তাকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। বিষয়টা নিশ্চিত করেছেন দলের কোচ ড্যারেন লেহম্যান। ৩৪ ছুঁই ছুঁই এ নিউ সাউথ ওয়েলসের ক্রিকেটার দীর্ঘদিন ধরেই ইনজুরির সঙ্গে লড়ছেন। তাই সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বকাপ শেষেই ক্লার্ককে নেতৃত্ব ছেড়ে দিতে। সিএ’র প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড অবশ্য জানিয়েছেন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যন্ত ক্লার্ককেই অধিনায়ক হিসেবে পছন্দ বোর্ডের। তবে ক্লার্ক নিজেই জানিয়েছেন তরুণ স্মিথের অধীনে খেলতে তার কোন সমস্যা নেই। তরুণ একটি নেতৃত্ব দীর্ঘদিন থাকলে সেটা ভবিষ্যতে দলের উন্নয়নের জন্য অনেক বড় ভূমিকা রাখে। প্রচ- চাপের মধ্যে থেকেও ক্লার্কের নেতৃত্বগুণটা বিশ্বকাপে বেশ জরুরী অস্ট্রেলিয়ার জন্য। স্বাগতিক হিসেবে এমনিতেই প্রত্যাশার চাপ রয়েছে দলের ওপর। এখন ক্রিকেটার, কর্মকর্তা এবং কোচেরা একটা লক্ষ্যের দিকেই তাকিয়ে, সেটা হচ্ছে বিশ্বকাপ জয়। সে জন্য ক্লার্কের নেতৃত্ব অপরিহার্য। তবে একইভাবে তরুণ স্মিথ তার অনুপস্থিতিতে দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন দলকে টেস্ট সিরিজে। আবার বেইলি যখন খেলতে পারেননি, সে সময় ওয়ানডে দলকেও ভালভাবেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। সে কারণে পন্টিং মনে করছেন বিশ্বকাপ শেষে আর এত বেশি চাপ না নিয়ে ক্লার্কের উচিত অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়া। তার পরিবর্তে স্মিথের কাঁধেই এ ভার দেয়া উচিত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘টেস্ট ফরমেটে হয়ত আর বড়জোর ৩-৪ বছর খেলবেন ক্লার্ক। সেক্ষেত্রে টেস্টের নেতৃত্বটা নিজে রেখে ওয়ানডেরটা স্মিথের ওপর ন্যস্ত করা উচিত। এতে করে ক্লার্ক দলে থাকতেই দীর্ঘ সময় কিভাবে নেতৃত্ব দেয়া যায় এবং কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় সেটার ভাল পরীক্ষা হয়ে যাবে স্মিথের। তবে আপাতত এ বিশ্বকাপে আমার মনে হচ্ছে ক্লার্কই সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়াকে শেষ পর্যন্ত এ টুর্নামেন্টে জয়ী করা।’ এরপর পন্টিং নিজের নেতৃত্ব লাভের উদাহরণটা টেনে আনেন। ২০০২ সালে সিএ নির্বাচক চেয়ারম্যান ট্রেভর হনস ২০০৩ বিশ্বকাপের পরই স্টিভ ওয়াহকে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে আমাকে দিয়েছিলেন। দুই বছর পর স্টিভ অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময়টা পন্টিংয়ের খুবই কাজে লেগেছে কারণ স্টিভ দলে ছিলেন-এমনটাই দাবি পন্টিংয়ের। তিনি বলেন, ‘এখানে সেখানে হুটহাট করে দুয়েকটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করাটা কখনই ভাল নেতৃত্বগুণ তৈরি করতে পারে না। যখনই অস্ট্রেলিয়া দলের নিয়মিত অধিনায়ক হবে কেউ সবকিছুই পরিবর্তন হয়ে যাবে। কিছুটা স্বাদ স্মিথ ইতোমধ্যেই পেয়েছেন। কিন্তু একইসঙ্গে ওয়ানডে ও টেস্টের অধিনায়ক হওয়ার পর তিনি বুঝতে পারবেন সেটা কতখানি ব্যতিক্রম একটি জীবন।’ যে ক্লার্ককে নিয়ে পন্টিং এতকিছু বলছেন তিনি এবার বিশ্বকাপে অসিদের প্রথম ম্যাচেই নামতে পারছেন না। যদিও আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ইনিংস উদ্বোধন করে ৬৪ রানের ভাল একটি ইনিংস খেলেছেন, কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করছে তাঁকে না খেলানোই ভাল হবে। এ কারণে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে থাকবেন বেইলি। এ বিষয়ে লেহম্যান বলেন, ‘তিনি শনিবার খেলছেন না। আমরা তার যে উন্নতি ঘটেছে সে জন্য দারুণ আনন্দিত। আমরা আমাদের পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই পরবর্তী ম্যাচে ফিরবেন।’ তবে নিজেকে ফিট প্রমাণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন ক্লার্ক। প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে চেয়েছিলেন তিনি।
×