ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের সঙ্গীতের সুরে নৃত্য

বর্ণিল উদ্বোধনী ॥ উত্তাপ শুরু বিশ্বকাপ ক্রিকেটের

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বর্ণিল উদ্বোধনী ॥ উত্তাপ শুরু বিশ্বকাপ ক্রিকেটের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ রাত পোহালেই বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখার ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে যাবে। এর দুই দিন আগেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠল বিশ্বকাপ ক্রিকেটের। একসঙ্গে দুই স্থানে হলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এবার বিশ্বকাপের স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। তাই নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের নর্থ হ্যাগলি পার্কে ও অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের মায়ের মিউজিক বোলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধন ঘোষণা করেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন কি। মেলবোর্নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের একদল পারফর্মারও বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিয়ে পারফর্ম করেন। সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গীতও পরিবেশন হয়, ‘চলো বাংলাদেশ, চলো বিশ্ব উঠোনে।’ যদিও দুই স্থানে বিশ্বকাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়, সবার দৃষ্টি থাকে মেলবোর্নের অনুষ্ঠানের দিকেই। সেখানেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আসল আমেজ মিলে। বড় সব ক্রিকেট তারকা যে মেলবোর্নের অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকেন। সবার আগে মেলবোর্নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ভারত ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এক এক করে পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ উল হক, বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক, ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগান, আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড অনুষ্ঠানে যোগ দেন। টেলিভিশন চ্যানেলের কল্যাণে মূলত অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিই দেখতে পেয়েছেন বিশ্বের কোটি কোটি ক্রিকেপ্রেমী। নিউজিল্যান্ডের অনুষ্ঠানটি দেখা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার নিজস্ব শিল্প-সংস্কৃতি উপস্থানের পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সংস্কৃতিরও হাল্কা পরিবেশনা হয়েছে সিডনি মায়ার মিউজিকে বোলের বিশাল মঞ্চে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জার্সি পরে ‘চলো বাংলাদেশ, চলো বিশ্ব উঠোনে’ শিরোনামের গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন বাংলাদেশের একদল পারফর্মার। আর মঞ্চের সামনে উপস্থিত অজস্র বাংলাদেশীও নেচেছে সেই গানের তালে তালে। এ সময় পিছনের জায়ান্ট স্ক্রিনে শোভা পেয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাও। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পক্ষেও পরিবেশিত হয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতির পারফর্মেন্স। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কি কি থাকছে তা অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছিল আইসিসি। তবে একটা বিষয় গোপন রাখা হয়েছিল; বলা হচ্ছিল- গোপন বিষয়টিই হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় চমক। শেষ অবধি মেলেবোর্নের অনুষ্ঠানে সেই চমকও দেখানো হয়েছে। তা একটি বড় রোবট, যে ব্যাটসম্যানদের মতো হেলমেট আর প্যাড পরে ব্যাট হাতে দেখিয়েছে নানান কসরত। একটু একটু করে এগিয়ে গিয়ে রান নিয়েছেন। মেরেছেন ছক্কাও। অনুষ্ঠানটিতে ১৪ দলের অধিনায়ক ও সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের সাবেক ক্রিকেটাররাও। সুরের মূর্ছনা আর আতশবাজির ঝলকের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান উপজাতিদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, পপ তারকা জেসিকা হিলডা মাওবো ও টিনা এরেনাদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা মেলবোর্নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিকে করেছে মনোমুগ্ধকর। নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটিতে আতশবাজির ঝলকানির মধ্যে সোল থ্রি মায়ো (নিউজিল্যান্ডের গায়ক ত্রয়ী), জিনি ব্ল্যাকমোর, হেইলে ওয়েস্টেনের মতো তারকা শিল্পীদের পরিবেশনা ছিল। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের ৩ প্রজন্মের তিন তারকা স্যার রিচার্ড হ্যাডলি, স্টিফেন ফ্লেমিং ও ব্র্যান্ডন ম্যাককুলামের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে দিয়েছে বাড়তি মাত্রা। পর্দা উঠে গেল বিশ্বকাপের। এখন মাঠের লড়াইয়ে নামার পালা। আজ দিনটি শেষ হয়ে রাত পোহাতেই ভোরে নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়ে যাবে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। যা চলবে ৪৪ দিন। শেষ হবে ২৯ মার্চ। সেদিন ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপের পর্দা নামবে।
×