ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সন্ত্রাসীদের সাহায্য করছে সুশীল সমাজ ॥ জয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সন্ত্রাসীদের সাহায্য  করছে সুশীল  সমাজ ॥ জয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, যাঁরা সংলাপের কথা বলেন তাঁদের উচিত প্রথমে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটগুলো দেখে আসা। নাগরিক সমাজকে উদ্দেশ করে জয় বলেন, আপনারা হয় পুড়ে যাওয়া নিরীহ মানুষগুলোর পক্ষে, বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে দাবি করেন, এই সন্ত্রাস বন্ধ করো নতুবা আপনি সন্ত্রাসীদের পক্ষে। এখানে মধ্যপন্থা অবলম্বনের কিছু নেই। যখন একটি শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় তখন মধ্যপন্থা বলে কিছু থাকে না। শুক্রবার বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধ-হরতালের মধ্যে নাগরিক সমাজের সংলাপের উদ্যোগ প্রসঙ্গে জয় এসব কথা বলেন। আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের ‘সন্ত্রাসের’ প্রতিবাদ করতে না পারলে নাগরিক সমাজকে মুখ বন্ধ রাখার পরামর্শও দেন তিনি। স্ট্যাটাসে জয় বলেন, আমি সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০১৩ সালে আমরা অব্যাহত চেষ্টা করেছি বিএনপিকে সংলাপে আনতে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ তাদের যে কোন মন্ত্রণালয় দিতে রাজি হয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী নিজে খালেদা জিয়াকে ফোন দিয়েছিলেন। বিএনপি কি তখনও মানুষ পোড়ানো বন্ধ করেছিল? তারা করেনি। এইবারও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলেন যখন তার পুত্র মারা যায়, কিন্তু তাঁকে ঢুকতেই দেয়া হলো না। এরপরও আমাদের তাদের বলতে হবে যে, ‘আসো আলোচনা করি’, যখন তারা মানুষ পুড়িয়েই যাচ্ছে? এরপরও বিএনপির সঙ্গে কোন ধরনের সংলাপ বা আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হতে পারে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয়। তিনি বলেন, যারা সংলাপের কথা বলে তাদের বলছি, তোমরা যদি আসলেই মানুষের কথা ভাব তাহলে যাও হাসপাতালের বার্ন ইউনিটগুলো দেখে আসো। দেখো কীভাবে একটা ছোট শিশুকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপর প্রথমেই যারা দায়ী তাদের নাম বলো এবং নিঃশর্তভাবে দাবি জানাও ‘খালেদা জিয়া, মানুষ জীবন্ত পুড়িয়ে মারা বন্ধ করুন।’ তিনি আরও বলেন, যদি তোমাদের সেটা বলার সাহস না হয়, তবে তোমাদের মুখ বন্ধ রাখ। সংলাপের দাবি করে তোমরা ওইসব সন্ত্রাসীদের আশা দিচ্ছ যে তাদের অপকৌশল কাজে দিতেও পারে। উভয়পক্ষে দোষারোপ করে তোমরা মূলত তাদের দোষটিকে আড়াল করতে চাইছ। তাদের নাম না বলে, তাদের নিঃশর্তভাবে থামার দাবি না করে, তোমরা তাদের নাশকতা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিচ্ছ। এসব করে আমাদের তথাকথিত সুশীল সমাজ পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসীদের সাহায্য করছে। জয় বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুসহ নিরীহ নাগরিকদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারছে। এটা এমন একটি জঘন্য এবং নৃশংস কাজ যে যুদ্ধের সময়ও জেনেভা কনভেশন দ্বারা একে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে নিষিদ্ধ করা রয়েছে। আপনি এই বিষয়ে বলতে গেলে সবার আগে যারা দায়ী তাদের নাম বলতেই হবে এবং এই জঘন্য কাজ বন্ধে নিঃশর্তভাবে দাবি জানাতে হবে। এখনও আমাদের তথাকথিত ‘সুশীল সমাজ’ সেটি করেনি। তার পরিবর্তে তারা প্রথম দিন থেকে এর নাম দিয়েছে রাজনৈতিক বিরোধ এবং দায়ী করছে উভয়পক্ষকে। আবার কেউ কেউ আছেন যে বিএনপি জামায়াতের এসব দুষ্কর্মের যৌক্তিতা ব্যাখ্যা করছেন। তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে এমন কিছুই নাই যা মহিলা ও শিশুদের পুড়িয়ে মারাকে যথার্থ বলতে পারে। এমনকি যদি বিএনপি মনে করে তাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে তবুও সেটা যথার্থ বলতে পারে না, কোন অযুহাতেই না। এমনকি যদি তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় এবং আর কোন উপায় নাও থাকে তবুও মানুষ পুড়িয়ে মারা যথার্থ হতে পারে না। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে দোষারোপ করে আমাদের ‘সুশীল সমাজ’ মানুষ জীবন্ত পুড়িয়ে মারাকে চূড়ান্তভাবে বৈধতা দিচ্ছেন। বিএনপি-জামায়াত তাদের দাবি আদায়ের কৌশল হিসেবে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
×