ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সহিংসতার ভিডিও তৈরি হচ্ছ- বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হবে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সহিংসতার ভিডিও তৈরি  হচ্ছ- বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশজুড়ে বিএনপির সহিংসতার ভিডিও চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা হবে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরীহ মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর ইত্যাদির ভিডিও চিত্র তুলে ধরবে সরকার। এই ভিডিও চিত্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিদেশে বাংলাদেশের ৬৯ দূতাবাস, উপদূতাবাস ও মিশনের মাধ্যমে এসব ভিডিও আয়োজকদের পক্ষে মূল বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এ টি এম শামসুল হুদা। আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখার জন্য সংবাদ সম্মেলনে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক’দের ১৩ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক এ টি এম শামসুল হুদা। অন্য সদস্যরা হলেন-সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, এ এস এম শাহজাহান, ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, ড. আকবর আলি খান, সি এম শফি সামি, রাশেদা কে চৌধুরী, রোকেয়া আফজাল রহমান, কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, অর্থনীতিবিদ আহসান মঞ্জুর ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নির্বাহী সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। কমিটিকে ‘অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের’ কমিটি দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগের কমিটিতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ কয়েক রাজনীতিবিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তাদের এই উদ্যোগের বাইরে রাখা হয়েছে। নবগঠিত কমিটির সদস্যদের সম্মতিক্রমে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সংখ্যা আরও বাড়ানো তবে। তবে কমিটির আনুষ্ঠানিক কোন নাম দেয়া হয়নি। এই কমিটির কাজ কী হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুল হুদা বলেন, আমরা জনসাধারণকে জানান দিতে চাই যে, আমরা তাদের পাশে রয়েছি। কমিটি বর্তমান পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা প্রত্যক্ষ করবে এবং জনগণের সামনে তা তুলে ধরবে। তাছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখার জন্য অন্যান্য পেশাজীবী ও অরাজনৈতিক সংগঠনকে পাশে নিয়ে কাজ করবে। সংলাপের কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের কাছে কমিটি যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংলাপের উদ্যোগ রাজনীতিবিদদেরই নিতে হবে। কমিটি স্বেচ্ছায় কারও কাছে যাবে না। তবে কোন পক্ষ যদি মনে করে সঙ্কট নিরসনে আমাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ কাজে আসবে, কমিটি তাতে সাড়া দেবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সহিংসতা বন্ধ ও আলোচনার উদ্যোগ সমান্তরালভাবে চালানো উচিত। জামায়াতের সঙ্গে সরকার সংলাপ করবে কিনা এটা সরকারের বিষয়, এক্ষেত্রে কমিটির কোন সুপারিশ নেই বলেও তিনি জানান। বর্তমান পরিস্থিতিকে অমানবিক মন্তব্য করে সাবেক এই সিইসি বলেন, সৃষ্ট পরিস্থিতির মূল কারণ- সরকার ও তাদের প্রতিপক্ষের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ। এর থেকে উত্তরণে অবিলম্বে মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো অমানবিক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। এখানে উপস্থিত সবাই পেশাজীবী। কারও কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। দেশের নাগরিক হিসেবে ও নৈতিক অবস্থান থেকে আমরা দুটি কথা বলছি- সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করতে হবে ও আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তাই সংলাপের সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এর আগে সংলাপের জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনকে গত সোমবার পাঠানো চিঠির সঙ্গে যুক্ত পর্যালোচনার বিষয়বস্তু পড়ে শোনান শামসুল হুদা। এতে বলা হয়, সাংবিধানিকভাবে সেই অর্থে কোন ক্ষমতা না থাকলেও সংবিধান ও রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে চলমান সঙ্কট নিরসনে রাষ্ট্রপতির একটি নৈতিক ভূমিকা রয়েছে। সেই নৈতিক দায়িত্ব থেকে রাষ্ট্রপতি চলমান সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেবেন। বিবদমান দুই দলসহ সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলো পেশাজীবীদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন বলে নাগরিকরা আশা করে।
×