ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ শুরু অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড মুখোমুখি আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বিশ্বকাপ শুরু  অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড মুখোমুখি আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অস্ট্রেলিয়া ‘হট’-ফেবারিট। ‘হট’ শব্দে সম্ভাবনা মাপা যায় না! ঘরের মাটিতে উন্মাদনার ১১তম বিশ্বকাপে অসিরা আসলেই কতটা প্রস্তুতÑ প্রথম দিনেই তার একটা পরীক্ষা হয়ে যাচ্ছে! মেলবোর্নে আজ কুলীন ইংলিশদের মুখোমুখি হচ্ছে জর্জ বেইলির অস্ট্রেলিয়া। যারা গত দশ আসরে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন, দুই বারের ফাইনালিস্ট! তার চেয়েও বড়, ২০১১ সর্বশেষ আয়োজনের ব্যর্থতা কাটিয়ে ইতোমধ্যে দারুণভাবে নিজেদের তৈরি করে নেয়া ...। চ্যাম্পিয়ন ভারত ও দুর্ধর্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাকে পেছনে ফেলে অবস্থান করছে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে। সব মিলিয়ে পঞ্চম শিরোপার লক্ষ্যে ময়দানী লড়াইটা শুরু হচ্ছে ডন ব্র্যাডম্যানের উত্তরসূরিদের। শক্তি-সামর্থ্য, র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান, সম্প্রতি নৈপুণ্য, প্রতিটি পজিশনে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত স্বক্ষমতা সব, সব বিচারেই আজ ফেবারিট অস্ট্রেলিয়া। তবে বিষয়টা মানতে রাজি নন জর্জ বেইলি। স্বাগতিক সেনাপতি যেমন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ফেবারিট। ঘরের মাটিতে এবার প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করবে তারাÑ লোকে যখন এমন কথা বলে, একজন অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে সেটি শুনতে আমারও ভাল লাগে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে আমি আবেগ দিয়ে বিচার করতে পছন্দ করি না। আমার মনে হয় ফেবারিট নয় বলেই ইংল্যান্ড বিপজ্জনক! হারানোর কিছু নেই, এই চিন্তা থেকে নিজেদের সেরাটা দিতে চাইবে তারা। উল্টো প্রত্যাশার চাপে পরিকল্পনায় ভুল করলে আমাদের জন্য সেটি বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে!’ প্রত্যাশার চাপ কি আসলেই ‘ফ্যাক্টর’ হবে? বিষয়টা নিয়ে ক্রিকেট বিশ্লেষকদেরও ভাবনার শেষ নেই। কারণ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) উপস্থিত থাকছে ৯০ হাজার দর্শক, যার নব্বই ভাগই যে অস্ট্রেলিয়ান! ইংল্যান্ডের তারকা পেসার জেমস এ্যান্ডারনসন যেমন বলেন, ‘আমাদের যে লাইনআপ তাতে যে কোন দলকে হারানোর ক্ষমতা ইংল্যান্ডেরও আছে। তার ওপর মাঠে প্রায় এক লাখ দর্শককে খুশি করার বাড়তি চাপ নেই! সুতরাং নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে সব সম্ভব। প্রতিপক্ষ নয়, আমরা বরং নিজেদের নিয়েই ভাবতে চাই। লক্ষ্য জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা।’ বিশ্বকাপের মতো একটি বড় টুর্নামেন্টে জয় দিয়ে শুরু করাটা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। যুগে যুগে ক্রিকেট প-িতরা তা বলে এসেছেন। আর সেটি যদি হয় সমশক্তির দুই বড় দলের মধ্যে তবে তো কথাই নেই। সে অর্থে আজকের ম্যাচের সাফল্য ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়াকে অনেক খানিই এগিয়ে দেবে। তবে ইংল্যান্ডের জন্য কাজটা কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে শেষ ১৫ ওয়ানডের ১৩টিতেই হারতে হয়েছে কুলীন ইংলিশদের। এটিকে অবশ্য খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চান না অধিনায়ক ইয়ন মরগান। তিনি বলেন, ‘এটা গত কয়েক মাসের পরিসংখ্যান। অস্ট্রেলিয়াকে আমরা তাদেরই মাটিতে টেস্ট সিরিজে ৪-০তে হোয়াইটওয়াশ করেছি। কদিন আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে ভারতকে টপকে খেলেছি ফাইনালে।’ খুব বাড়িয়েও বলেননি। কার্লটন মিড ত্রিদেশীয় সিরিজে ভারতকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে খেলে ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে ফর্মে ফিরেছেন অধিনায়ক মরগান, আছেন জো রুট, জেমস টেইলর, ইয়ান বেলরা। বল হাতে বিশ্বের অন্যতমসেরা পেসত্রয় এ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড ও স্টিভেন ফিন। অলরাউন্ডার মঈন আলীর কথা আলাদা করে না বললেই নয়। একাই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়ার সামর্থ্য রয়েছে যার। আছেন ক্রিস ওকস, রবি বোপারার মতো অলরাউন্ডার। আর অস্ট্রেলিয়ান স্কোয়াড? প্রত্যেকটি পজিশনে একেকটা ‘ডিনামাইট’! প্রতিপক্ষকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে তাদের। অবিশ্বাস্য এক কম্বিনেশন। ব্যাট হাতে ডেভিড ওয়ার্নার, এ্যারন ফিঞ্চ, শেন ওয়াটসন, স্টিভেন স্মিথ, জর্জ বেইলি, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নামগুলোই তা প্রমাণ করে। যাদের মধ্যে ওয়ার্নার, স্মিতের কথা আলাদা করে বলতে হবে। ব্যাট হাতে স্বপ্নের সময় যাচ্ছে তাদের। যদিও ইনজুরির জন্য আজ প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া পাচ্ছে না নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ককে। যা দলীয় সমন্বয় তাতে এটা কোন সমস্যাই নয়। ক্লার্কের অনুপস্থিতিতেই গত কয়েকটি সিরিজে দারুণ ক্রিকেট খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। বল হাতেও থাকছে ত্রাস সব নাম। পেস আক্রমণের নেতৃত্বে থাকবেন আইসিসির বর্ষসেরা মিচেল জনসন, যার কার্যকরিতা নিয়ে নতুন করে বলার নেই। সম্প্রতি বল হাতে আগুনের লল্কা ছোটাচ্ছেন মিচেল স্টার্ক। ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের পথে হয়েছেন সিরিজসেরা খেলোয়াড়। ক্লার্কের পাশাপাশি জেমস ফকনারকে পাচ্ছে না তারা। ইনজুরির জন্য বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে ম্যাচ উইনার এই অলরাউন্ডারের। তবে ব্যাটে-বলে দৃশ্যপট বদলে দিতে পারেন মিচেল মার্শ ও মিচেল জনসন। উইকেটের পেছনে অভিজ্ঞ ব্র্যাড হ্যাডিন।
×