ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভারতকে হারানোর এটাই বড় সুযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ভারতকে হারানোর এটাই বড় সুযোগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে পেলেই জয় পায় ভারত। এটাকে যেন নিয়মেই পরিণত করে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। তবে এবার সেই অতীত ইতিহাসকে বদলাতে চায় পাকিস্তান। দেশটির সাবেক অধিনায়ক এবং বর্তমান প্রধান নির্বাচক মঈন খানও মনে করছেন ভারতকে হারানোর এটাই পাকিস্তানের সেরা সুযোগ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমরা যতবারই খেলি, ভারত সবসময়ই ভাল পারফর্ম করে। এবং সেই ম্যাচে জয় পায় তারা। তবে এবার আমাদের নবীন দলটির সামনে দারুণ সুযোগ। পাকিস্তানের এই দলটিই পারে অতীত রেকর্ডকে ভাঙ্গতে। তারাই পারে ইতিহাস গড়তে।’ বৃহস্পতিবার হয়ে গেল ক্রিকেট বিশ্বকাপের একাদশতম আসরের বর্ণিল উদ্বোধন। ব্যাটে-বলের লড়াই শুরু আজ। রবিবারই মাঠে নামবে ভারত-পাকিস্তান। এশিয়ার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দলের লড়াই দেখতে উন্মুখ হয়ে আছে ক্রিকেটপ্রেমীরাও। ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের কোন জয় না পাওয়ার কারণ হিসেবে মানসিক চাপটাকে দায়ী করেছেন ২০০৪ সালে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দেয়া মঈন খান। তবে এবার সেই চাপকেও জয় করতে হবে বলে খেলোয়াড়দের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে মঈন খান বলেন, ‘ইতোমধ্যেই দলের সকলের কাছেই আমার ধারণা কি তা জানিয়ে দিয়েছি। এটাও বলে দিয়েছি যে অস্ট্রেলিয়ায় কঠিন ক্রিকেট খেলাটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এখানে বড় চ্যালেঞ্জ নিতে না পারেন তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। শুধু শারীরিকভাবেই নয়: ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আপনাকে মানসিকভাবেও আগে থেকে ফিট থাকতে হবে। আর যদি এই পাকিস্তান দল এই চাপ এবং মানসিক চ্যালেঞ্জকে খাপ খাওয়াতে পারে তাহলে আমি দৃঢ়ভাবেই আত্মবিশ্বাসী যে পাকিস্তান ভারতকে হারাতে পারবে।’ অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতকে ফেবারিট হিসেবে দেখছেন কিংবদন্তি সুনিল গাভাস্কার ও ইয়ান চ্যাপেল। অতীত ইতিহাস এবং অস্ট্রেলিয়া কন্ডিশনের সঙ্গে আগে থেকেই নিজেদের ভালভাবে মানিয়ে নেয়ার কারণেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের দিকেই পাল্লা ভারি থাকবে। এ বিষয়ে গাভাস্কার বলেন, ‘দুই দলের কেউই খুব ভাল অবস্থায় থেকে বিশ্বকাপ শুরু করতে পারছে না। পাকিস্তানও ভাল ফর্মে নেই যে কারণে সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছে। তবে আমি মনে করি অতীত রেকর্ডের কারণে ভারত কিছুটা এগিয়ে থেকেই শুরু করবে। এছাড়া অবৈধ বোলিং এ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ থাকা (পরবর্তীতে আইসিসি কর্তৃক মুক্তি পেয়েছেন) তারকা অফ স্পিনার সাঈদ আজমলের অনুপস্থিতি ১৯৯২ চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান দলে বড় প্রভাব ফেলবে। কারণ নিঃসন্দেহে পাকিস্তান দলের অর্ধেক ছিলেন আজমল। একই সঙ্গে উইকেট শিকার করার পাশাপাশি রান দেয়ার ক্ষেত্রে কৃপণ সে। মুত্তিয়া মুরলিধরণ তার সেরা সময়ে যেমনটা শ্রীলঙ্কা দলের ছিলেন ঠিক তেমনি পাকিস্তানের আজমল।’ গাভাস্কারের সঙ্গে একমত পোষণ করে ইয়ান চ্যাপেল বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলছে ভারত। পাকিস্তানের চেয়ে এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে তাদের বুঝাপড়াটা বেশি ভাল। যে কারণে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে। তাছাড়া এই মুহূর্তে পাকিস্তান দলে ম্যাচ উইনারেরও অভাব রয়েছে। পাকিস্তান ১৯৯২ বিশ্বকাপ জিতেছিল। কারণ সে সময় তাদের দলে ইমরান খান, জাভেদ মিঁয়াদাদ, ওয়াসিম আকরাম এবং ইনজামাম-উল-হকের মতো ম্যাচ জয়ী অনেক খেলোয়াড় ছিলেন। ওই ধরনের ম্যাচ উইনার বর্তমান দলে নেই। জুনাইদ খানকে হারানোটাও তাদের জন্য বড় ক্ষতি।’ ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষণ মনে করছেন পাকিস্তানীদের চেয়ে ভারতীয় খেলোয়াড়রা চাপ ভালভাবে সামাল দিতে পারে। এ কারণেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত সবসময়ই জিতে, ‘পাকিস্তান একটি বিপজ্জনক দল তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তাদের ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। সম্প্রতি তাদের সহায়ক কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে তারা। সতরাং বর্তমান ফর্ম না থাকলেও ভারত ফেবারিট। অধিকাংশ হাইভোল্টেজ ম্যাচের চাপও ভারত তাদের চেয়ে ভাল মানিয়ে নিতে পারে। যে কারণেই পাঁচটি বিশ্বকাপের ম্যাচসহ আইসিসির সব ইভেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারত বেশি ম্যাচ জিতেছে।’
×