ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিবির জড়িত

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

প্রশ্নপত্র ফাঁসে শিবির জড়িত

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তথা নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টা বহুদিন ধরেই চালিয়ে আসছে বাংলাদেশে বোকো হারামপন্থী দল বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সহযোগীরা। ওরা চায় না শিশু-কিশোর-তরুণরা শিক্ষিত হয়ে উঠুক, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক অবহিত হোক। কারণ তারা বিশ্বাস করে, শিক্ষিত হয়ে ওঠা মানেই ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, কূপম-ূকতা, রগকাটা ও কুসংস্কারমুক্ত হয়ে মুক্তমনা স্বাধীন মানুষে পরিণত হওয়া। আর তা হয়ে উঠলে ধর্ম ব্যবসায়ী ও একাত্তরের জল্লাদ এবং পঁচাত্তর-পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধের নীতিকে ভূলুণ্ঠিত করার ঘটনা জেনে যাবে। ধর্মের নামে, মানুষকে পদাবনত করে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করা কঠিন হবে। তাই দেখা যাচ্ছে, হরতাল-অবরোধ নামে পেট্রোলবোমা ও আগুনে মানুষ হত্যার কর্মসূচী দিয়ে কোমলমতিদের পরীক্ষার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। হরতালমুক্ত দিনে পরীক্ষা গ্রহণকালে অবরোধের নামে বোমাবাজি করছে। এমনকি স্কুলগামী শিশুদের ব্যাগে ভরে অস্ত্র পাচার করছে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে শৈশবেই জঙ্গী সন্ত্রাসী হিসেবে তৈরি করার পথটি তারা বেছে নিয়েছে। যে কারণে অনায়াসে বিএনপির নেতা হাফিজউদ্দিন বলতে পারেন, কিসের পরীক্ষা? অনুমান করা কঠিন হয় না এই বাক্যে যে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে তারা পঙ্গু করে দিতে চায়। জাতি অশিক্ষিত থাকলে তাদের শাসন, শোষণ করা যেমন সহজ তেমনি ত্রাস বজায় রেখে তাদের জীবনকে সন্ত্রস্ত রাখা যায়। দেশের শিক্ষা তথা পরীক্ষাব্যবস্থাকে পঙ্গু করার জন্য বিএনপির দোসর জামায়াত-শিবির বহুদিন ধরে তৎপরতা চালানো শুধু নয়, এ নিয়ে বিশাল বাণিজ্যও ফেঁদে বসে। দেশজুড়ে জামায়াত-শিবির পরিচালিত কোচিং সেন্টারগুলো ৩২ হাজার কোটি টাকা বছরে আয় করে বলে শিক্ষামন্ত্রী বহু আগেই তথ্য দিয়েছেন। এই সেন্টারগুলোতে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই চলে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্বন্ধে মিথ্যাচার সূক্ষ্মভাবেই শিক্ষার্থীদের মনে প্রবিষ্ট করানো হয়। শিবিরের হাজার হাজার কর্মী এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। এই কোচিং সেন্টারগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের নিশ্চয়তা শুধু দেয় না, তা কার্যকর করার জন্য প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছে বহু বছর ধরে। পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি, বিসিএস, এমবিবিএস, প্রকৌশলী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং তা বিক্রি করে বিপুল অর্থ আয় করছে এই কোচিং সেন্টারগুলো। পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের পকেট থেকে লুটে নেয়, অর্থকড়ি, জামায়াত-শিবির দেশ ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার করে আসছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গত ক’বছর ধরে বহু ঘটনা ঘটছে। এজন্য পরীক্ষা বাতিলও করতে হয়েছে। অনেক সময় জামায়াত-শিবির ভুয়া প্রশ্নপত্র বাজারজাত করে আসছে। বহুবার অভিযান চালিয়েও এদের ধরা সম্ভব হয়নি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে শিবিরকর্মীকে ধরা সম্ভব হয়েছে। প্রতারণাই যার পেশা। ভুয়া প্রশ্নপত্র বানিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২ হাজার টাকা করে প্রশ্নপ্রতি নিয়েছে সে। ফেসবুকের মাধ্যমে সে সংযোগ স্থাপন করে আসছে। তাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও বাণিজ্যের বিশাল সাম্রাজ্যের সন্ধান পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা যায়। উচিত হবে এই সাম্রাজ্যটির চির বিনাশ সাধন করা। একাত্তরের পরাজিত শক্তির দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার প্রক্রিয়া সর্বাগ্রে সমূলে উৎপাটন করাই এখন দেশবাসীর প্রধান কর্তব্য।
×