ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কবিগুরুর প্রেমের গানে মুখরিত বসন্ত সন্ধ্যা

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

কবিগুরুর প্রেমের গানে মুখরিত বসন্ত সন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুরে সুরে ধ্বনিত হলো ভালবাসার বাণী। গানের কথা ধরে উঠে এলো প্রেমিক-প্রেমিকার হৃদয়ের আর্তি। আর সুরাশ্রিত সেই অনাবিল প্রেমময় উচ্চারণে একইসঙ্গে মুগ্ধ ও সিক্ত হলো শ্রোতাকুল। শনিবার বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো এমন মনছোঁয়া সঙ্গীতাসর। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একগুচ্ছ প্রেমের গান দিয়ে সাজানো হয় সুরেলা এ আয়োজন। শুধুই ভালবাসার গান শীর্ষক এ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে সঙ্গীত সংগঠন রবিরাগ। সঙ্গীতাসরের সূচনাতেই গীত হয় বৃন্দ কণ্ঠের গান। অনেক কণ্ঠ মিলে যায় এক সুরে। গাওয়া হয় কার চোখের চাওয়ার নীল দিগন্তে। এরপর মঞ্চে মায়াভরা কণ্ঠ নিয়ে শ্রোতার সামনে আসেন কণ্ঠশিল্পী ইকো। গেয়ে শোনান চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে, উছলে পড়ে আলো/ও রজনীগন্ধা, তোমার গন্ধসুধা ঢালো। দ্বৈতকণ্ঠে ইকো ও নিরূপম পরিবেশন করেন গানের ভেলায় বেলা অবেলায় প্রাণের আশা/তোমার মনের স্রোতে ভাসা। একক কণ্ঠে একটুকু ছোঁয়া লাগে গানটি শোনান নিরূপম। প্রণয়পিয়াসীর না বলা মনের কথা উঠে আসে এনাক্ষীর কণ্ঠে। গেয়ে শোনান আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল/শুধাইলো না কেহ/ সে তো এলো না, যারে সঁপিলাম/এই প্রাণ মন দেহ। এছাড়াও শ্রোতার অন্তরে স্নিগ্ধতার পরশ ছড়ানো এ গানের আসরে একক কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মাখনচন্দ্র হালদার, আমিনা আহমেদ, রঞ্জু রায়, নাজনীন, হায়দার, রণজিৎ কুমার রায়, সুশান্ত কুমার, ইন্দ্রানী কর্মকার, লিলি ইসলাম ও রবিরাগের পরিচালক খ্যাতিমান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাদি মহম্মদ। তাঁদের পরিবেশিত কয়েকটি গানের শিরোনাম ছিলÑ ‘মুখপানে চেয়ে’, ‘অনেক কথা যাও যে বলে’, ‘সেই তো বসন্ত’, ‘আমার পরাণ যাহা চায়’ ও ‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে’। সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। মাতৃভাষা দিবসের মাসব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব ॥ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে চলছে মাসব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজিত উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান ও বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ। ভাষার মাস পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় এ অনুষ্ঠানমালা। দলীয় নৃত্য, পথনাটক ও মঞ্চনাটকের প্রদর্শনী দিয়ে সাজানো হয়েছে এ আয়োজন। আর খোলা আকাশের নিচে স্থাপিত মঞ্চে প্রতিদিনই বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানমালাটি উপভোগ করছেন অগণিত দর্শক। শনিবার ছিল উৎসবের চৌদ্দতম দিন। বৈকালিক নানা পরিবেশনা শেষে এদিন সন্ধ্যায় ছিল মঞ্চনাটকের প্রদর্শনী। পরিবেশিত হয় থিয়েটার আর্ট ইউনিটের আলোচিত নাটক সময়ের প্রয়োজনে। জহির রায়হানের রচনা থেকে প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন মোঃ বারী। সময়ের প্রয়োজনে নাটকটি নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দেয়ার তাগিদ থেকে সৃষ্টি হয়েছে নাটকটি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিসেনাদের একটি ক্যাম্পে ঘটে যাওয়া আনন্দ-বেদনার ও অসীম সাহসিকতার কাহিনী উপস্থাপিত হয়েছে নাটকের গল্পে। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, প্রশান্ত হালদার, সাইফ সুমন, সাথী, শিল্পী, সুমন মজুমদার, স্বাধীন শাহ, সানু, লেমন, রাখী, পাইলট, সম্পদ, বিপ্লব, রেজা, রিয়াজ ও শাকিল। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত এ উৎসব। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হয় আয়োজন। আর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় অনুষ্ঠিত হয় নাটকের প্রদর্শনী। আজ রবিবার মঞ্চস্থ দৃষ্টিপাত নাট্য সংসদের নাটক নাগর আলীর কিচ্ছা। একইসঙ্গে রচনার পাশাপাশি প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন ম. আ. সালাম। নৃত্য-গীত পথনাটকে একুশের অনুষ্ঠানমালা ॥ বুকের খুনে যুদ্ধ জারি অমর একুশে ফেব্রুয়ারি সেøাগানে চলছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের অমর একুশের অনুষ্ঠানমালা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলমান এ আয়োজনের সপ্তম দিন ছিল শনিবার। নৃত্য-গীত ও পথনাটকের সাজানো ছিল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলমান অনুষ্ঠানমালা। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনায় অংশ নেয় ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী ও সুরসাগর ললিতকলা একাডেমি। একক কণ্ঠে গান শোনান আবু বকর সিদ্দিক, অনিমা রায়, ফয়জুল বারী ইমু, রিনা ফেরদৌসী প্রমুখ। বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে মুক্তবাক, বাকশিল্পাঙ্গন ও স্বরব্যঞ্জন। নৃত্য পরিবেশন করে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক ফোরাম ও নবচেতনা। রঙ্গপীঠ শীর্ষক পথনাটক উপস্থাপন করে আরণ্যক নাট্যদল। এছাড়াও ছিল শিশু সংগঠন সুরবিহারের পরিবেশনা। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটায় শুরু হবে এ অনুষ্ঠান। আর ১৮ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠান হবে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে।
×