ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে ॥ কানাডার হাইকমিশনার

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ করতে  হবে ॥ কানাডার হাইকমিশনার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশজুড়ে চলমান সহিংসতা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনু পিয়ের লাঘামে। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁয় দুই দিনব্যাপী ‘কানাডা শোকেস-২০১৫’ অনুষ্ঠান শেষে রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। কানাডিয়ান হাইকমিশনের সহায়তায় কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ক্যানচ্যাম) এই শিক্ষা ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে। লাঘামে বলেন, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক এ সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ হতে হবে। এসব ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করবে বলেও মনে করেন তিনি। কানাডার হাইকমিশনার বলেন, অর্থনীতিতে এ অস্থিরতার প্রভাব অবশ্যই পড়বে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ না থাকলে এ দেশে বিনিয়োগ করা তাদের জন্য কঠিন হবে। দেশে একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার মানুষগুলোর চেহারা দেখে তিনি অত্যন্ত মর্মাহত উল্লেখ করে পিয়ের বলেন, এরা সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাত নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তি, তৈরি পোশাক ও ব্লু-ইকোনমি খাতে কানাডিয়ানদের বিনিয়োগ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এর আগে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার বলেন, ‘২১ সালে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার যাত্রায় কানাডা বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দু’দেশের সমৃদ্ধি সুরক্ষিত ও দৃঢ় করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দ্রুত বাড়ছে। দু’দেশের মধ্যে মোট পণ্যের বাণিজ্য মূল্য ২০০৪ সালের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০০৪ সালের মোট ৬০৫ মিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার থেকে বেড়ে ২০১৪ সালে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারে উন্নীত হয়েছে। বাণিজ্য ভারসাম্য বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে কানাডায় বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি মূল্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারেরও বেশি ছিল। এর অন্যতম কারণ, বাংলাদেশের সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে কানাডা। এ সময়ে কানাডা থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, কানাডা থেকে গম, মসুরি ডাল, পটাশ সার, তেলবীজ ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য এবং সেইসঙ্গে রোলড স্টিল, টেলিযোগাযোগ ও জ্বালানি সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আমদানি করে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, প্রায় ১শ’ রফতানি পণ্যের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্যযোগ্য তৈরি পোশাক; অন্য সব নামে মাত্র। আরেক প্রশ্নের জবাবে স্টেপ কানাডার পরিচালক মোরতাজা তরফদার বলেন, তথ্য-প্রযুক্তিখাতে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে চায়। এছাড়া ব্লু-ইকোনমি খাতে কানাডিয়ানদের রয়েছে অভিজ্ঞতা। এখানে সামুদ্রিক মৎসশিল্প খাতে বিনিয়োগ করারও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের কৃষির উন্নয়নে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তারা যৌথভাবে গবেষণা করে যাচ্ছেন বলে জানান মোরতাজা তরফদার। বাণিজ্যিকভাবে বায়োটেকনোলজির ব্যবহার করতে কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। স্টেপ কানাডার পরিচালক বলেন, কানাডার বাজারে বাংলাদেশের সব পণ্যের রফতানিকারকদের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের মসুরি ডালের শতকারা ৬৫ শতাংশই কানাডা থেকে আসে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ক্যানচ্যাম) সভাপতি মাসুদুর রহমান।
×