ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কথিত ভিডিওটি গোপনে বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের মিশন কর্মকর্তাদের কাছে

মিথ্যাচারে ভরা ভিডিও তৈরি ॥ তারেকের নির্দেশনায় এবার জাতিসংঘে অপপ্রচার শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

মিথ্যাচারে ভরা ভিডিও তৈরি ॥ তারেকের নির্দেশনায় এবার জাতিসংঘে অপপ্রচার শুরু

মাহফুজুর রহমান, নিউইয়র্ক থেকে ॥ দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভিন্ন চিত্র উপস্থাপন করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হাসিনা সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন করতে বিএনপি আন্তর্জাতিক প্রচারণায় নেমেছে। আর এ কাজে নেপথ্যে মূল ভূমিকা রাখছে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করে লন্ডনে বসবাসরত দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে এই প্রচারণায় সহযোগিতা করছেন বাংলাদেশ, ব্রিটেন ও আমেরিকা থেকে বিএনপির মতাদর্শে বিশ্বাসী মিডিয়াকর্মীরা। সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণার সর্বশেষ কৌশল হিসেবে বিএনপির পক্ষ থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন দেশে ওয়ান-ইলেভেন পূর্ব সময়ে যেভাবে লগি-বৈঠার লড়াই নিয়ে গোপনে জামায়াতপন্থী সরকারী কর্মকর্তারা ভিডিও বিতরণ করেছেন ঠিক সেভাবেই একটি কৌশলী-ভিডিও বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। আর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘ বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. আব্দুল মোমেন। ড. মোমেন বলেন, সত্য উল্টে মিথ্যাচার দিয়ে তৈরি করা ভিডিওটি তাকে একটি দেশের মিশন প্রধান দিয়েছেন। যাতে দেখানো হয়েছে ও বলার চেষ্টা করা হচ্ছে দেশে চলমান সহিংসতা এবং পেট্রোলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে সরকার এবং এক্ষেত্রে তারা দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার কাটিং কৌশলে ব্যবহার করেছে। ড. মোমেন আরও বলেন, এই অপপ্রচারের মধ্যে দিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট আন্তর্জাতিক মহলে যে অপপ্রচারে নেমেছে তাতে তারা তেমন সাড়া পাচ্ছেন না। এদিকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব তার কাছে কিছু জানতে চেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন গত সপ্তাহে দুটি ইভেন্টে মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়েছে এবং তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি বা জানতেও চাননি। ড. মোমেন বলেন, মহাসচিব বান কি মুনের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন এবং আজ (নিউইয়র্ক সময়) সোমবার তার সঙ্গে দেখা হবে। ড. মোমেন বলেন আগে থেকেই তারানকো বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করেছেন সে হিসেবে সাক্ষাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলবেন এটাই স্বাভাবিক। এদিকে নিউইয়র্কে শুধু জাতিসংঘ সদর দফতরে বিভিন্ন দেশের মিশনে নয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ও আইনপ্রণেতাদের কাছেও কথিত ভিডিও পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছেও ভিডিওর কপি দেয়া হয়েছে সাধারণ প্রবাসীদের দেখাতে। ভিডিওটি দেখে অনেকেই বলছেন এটি লন্ডন থেকে তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা বলছেন এর পেছনে প্রচুর মেধা খরচ করা হয়েছে যাতে সত্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্ত করা যায়। এতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেয়া একজন ব্রিটিশ এমপির একতরফা বক্তব্যও রাখা হয়েছে। আর তাতে পেট্রোলবোমা হামলার ঘটনায় ডজন ডজন জামায়াত-বিএনপি ও ছাত্রদল-শিবিরের কর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়টি গোপন রেখে দেশের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত দুয়েকটি ঘটনায় ছাত্রলীগের কর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। আর বলা হয়েছে বিএনপির আন্দোলন বানচাল করতে সরকারই পেট্রোলবোমা দিয়ে বাস জ্বালিয়ে মানুষ মারছে আবার বার্ন ইউনিটে গ্লিসারিন দিয়ে কাঁদিয়ে নাটক করছে।
×