ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে বিল পাস ফরমালিন অপব্যবহারে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সংসদে বিল পাস ফরমালিন অপব্যবহারে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন

সংসদ রিপোর্টার ॥ ফরমালিন অপব্যবহারে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান রেখে সোমবার জাতীয় সংসদে ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ হিসেবে এর অপব্যবহার রোধে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৫’ পাস হয়েছে। বিলটি পাসের ফলে ফরমালিন ব্যবহার ও ব্যবসা কার্যক্রম আইনী কাঠামোর আওতায় আসবে। জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র বেশ ক’জন সংসদ সদস্য বিলটির ওপর জনমত যাচাই-বাছাই ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলেও তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। পরে বিলটি পাসের জন্য প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিল প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতিরেকে কেউ ফরমালিন আমদানি করতে পারবে না। আইনী কাঠামোর মধ্যে ফরমালিন ব্যবহার ও ব্যবসা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যেই বিলটি উত্থাপন করা হয়েছে। কোন ব্যক্তি লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করলেও কারাদ- ও অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। একটি বিশেষ গোষ্ঠী পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ মারছে, তখন বর্তমান সরকার মানুষের জীবন বাঁচাতেই এই বিলটি এনেছে। আইনটি বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশবাসীই বেশি লাভবান হবে। দেশবাসীকেও ফরমালিনের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে। পাসকৃত বিলে ফরমালিনের অপব্যবহারে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ২০ লাখ টাকা অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে শর্ত ভঙ্গ করলেই সাত বছরের কারাদ- ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিলে ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি অবৈধভাবে রাখার জন্য ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদ- এবং ৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। উত্থাপিত বিলে অবৈধভাবে ফরমালিন মজুদের জন্য ২ থেকে ৭ বছর কারাদ- ও সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনে এ ধরনের অপরাধ ধর্তব্য এবং জামিন অযোগ্য বলে গণ্য হবে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতকে বিচারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আইনটি বাস্তবায়নে প্রতি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ কমিটি’ গঠন করা হবে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এ অপরাধের বিচার করা যাবে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফরমালিন জৈবিক পদার্থ পচনরোধকারী একটি রাসায়নিক দ্রব্য। সাধারণত গবেষণাগার, হাসপাতাল, চামড়া শিল্প, টেক্সটাইল, হ্যাচারি, বোর্ড শিল্প ইত্যাদিতে এই ফরমালিন ব্যবহার হয়ে থাকে। ইদানীং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী খাদ্য সামগ্রী যেমন-ফল-মূল, শাক-সবজি, মাছ-মাংস পচনরোধের উদ্দেশে এর অপব্যবহার করছে। ফলে ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্যদ্রব্যাদি মানুষ গ্রহণ করে ক্যান্সারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফরমালিন একটি প্রাণঘাতি কেমিক্যাল। তাই এর অপব্যবহার রোধ করার লক্ষ্যে ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।
×