ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেরা মুহূর্ত বললেন কোহলি

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সেরা মুহূর্ত বললেন কোহলি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতীয়রা তাঁর মাঝে শচীনের ছাঁয়া দেখেন। সেই ব্যাটিং-অধিশ্বরকেই কিনা ছাড়িয়ে গেলেন বিরাট কোহলি। আধুনিক ডন যা পারেননি তা করে দেখালেন ২৬ বছরের দিল্লী প্রতিভা। প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে চিরশত্রু পাকিস্তানের বিপক্ষে হাঁকালেন সেঞ্চুরি! সৌজন্যে ৩০০ রানের পুঁজি গড়ে ৭৬ রানের বড় জয়ে শিরোপা ধরে রাখার মিশন শুরু চ্যাম্পিয়নদের। ১৫১তম ওয়ানডেতে ২২ নম্বর সেঞ্চুরি। মাত্র সাড়ে ছয় বছরের ক্যারিয়ারে আগের ২১ সেঞ্চুরির পথে দলকে জিতিয়েছেন অনেকবার, হয়েছেন ম্যাচসেরাও। তবু বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির সঙ্গে আর কিছুর তুলনা চলে? এ্যাডিলেড ওভালের ঐতিহাসিক অর্জনকেই জীবনের সেরা মুহূর্ত বললেন পাক-বধের নায়ক বিরাট কোহলি। ‘মনে হচ্ছে পারলে এ্যাডিলেড ওভালের মাঠটাকে সঙ্গে করে মুড়ে নিয়ে যাই! মানতেই হবে এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে ভারতকে হারানোর ম্যাচে ম্যাচসেরা...সত্যি বলতে ছোট্ট এই জীবনের সেরা স্মৃতি এটিই’Ñ বলেন কোহলি। ১২৬ বলে ১০৭ রানের ক্ল্যাসিক্যাল ইনিংস উপহার দেন তিনি। চিরশত্রু পাকিদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে কোন ভারতীয় ব্যাটসম্যানের আগের সর্বোচ্চ ছিল ৯৮ রান, করেছিলেন গ্রেট শচীন টেন্ডুলকর। ১৯৯২ থেকে ২০১১ পর্যন্ত আগে পাঁচবার মুখোমুখি হয়ে সবটিতেই জয় ভারতের, কিন্তু সেঞ্চুরির দেখা এই প্রথম। শুরুতেই পাকিস্তানের মতো উন্মাদনার ম্যাচের সাফল্য আসরের বাকি সময়টায় ভাল করতে সাহায্য করবে বলেই মনে করেন কোহলি। ‘বড় জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করাটা দারুণ ব্যাপার। তার ওপর পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে জয় সবসময়ই বাড়তি উদ্দীপনার’Ñ যোগ করেন তিনি। কোহলি কী পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু ভারত শঙ্কায় ছিল ওয়ানডেতে তাঁর ফর্মহীনতা নিয়ে। দীর্ঘ অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্টে আগুন জ্বলা পারফর্মেন্সের পর স্বল্পদৈর্ঘের ম্যাচে হঠাৎ করেই চুপসে গিয়েছিলেন! কার্লটন মিড ত্রিদেশীয় হয়ে প্রস্তুতি ম্যাচÑ আগের শেষ ছয় ওয়ানডে ইনিংসে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ১৮ রানের! বাকি পাঁচ ম্যাচে ৯, ৪, ৩*, ৮ ও ৫! অফ-ফর্ম কাটিয়ে ফিরলেন উন্মাদনার পাকিস্তান ম্যাচে। ফেরার জন্য এর চেয়ে মোক্ষম আর কি হতে পারত! তবে ওসব একদমই মাথায় ছিল না বলে জানান পাক-বধের নায়ক। কোহলি বলেন, ‘যে পরিমাণ প্রত্যাশার চাপ নিয়ে খেলতে হয় তাতে আমার কোন অসুবিধা হয় না। আর এটা খুব স্বাভাবিক যখন দেশের হয়ে ভাল করবেন, তখন আপনাকে ঘিরে প্রত্যাশা তৈরি হবে। এতে আমার তেমন কোন অসুবিধা হয় না!’ ম্যাচের আগের দুইদিনের পরিবেশ বর্ণনা করে তিনি আরও যোগ করেন, ‘পাকিস্তান ম্যাচের আগে শুক্র ও শনিবার দুদিন আমাদের হোটেলে তিলধারণের জায়গা ছিল না। সমর্থকরা দখল করে নিয়েছিল! সবারই আবদার ছিল যে করে হোক পাকিস্তানকে হারাতে হবে, জিততে হবে। এটা ভেবে ভাল লাগছে যে সাধারণের চাওয়া পূরণ করতে পেরেছি।’ কোহলি যতই বলুন চাপ নেই। দল হিসেবে ভারত কিন্তু বাড়তি টেনশনেই ছিল। আসর শুরুর আগে সেটা স্বীকারও করেছিলেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রায় আড়াই মাস আগে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছে একের পর এক হারে মনোবল ভেঙ্গে পড়েছিল তাদের। তার ওপর বিশ্বকাপ শিরোপা ধরে রাখার বাড়তি চাপ। প্রথম ম্যাচেই জ্বলে ওঠায় এবার সামনের ম্যাচগুলোয় কোহলির কাছে প্রত্যাশা আরও বেড়ে গেল। এ নিয়ে সেনসেশনাল ব্যাটসম্যান বলেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে আগেই জানিয়েছিল, যতটা সম্ভব ক্রিজে থেকে ব্যাটিং করব। একদিক ধরে রাখব। তাতে অপরপ্রান্তে থাকা ব্যাটসম্যানরা পিটিয়ে খেলতে পারবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে যেটা করেছে শিখর ধাওয়ান ও সুরেশ রায়না।’ গতবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের পর কোহলিই প্রথম শচীনকে কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। এবার প্রথম ম্যাচেই পাক-বধে তাঁকে নিয়ে আসমান সমান আশায় ভারতীয়রা। সবাই তাঁকে শচীনের ভূমিকায় দেখতে চাইছেন। এটিকে ‘বিশেষ কিছু বলেই মানেন কোহলি।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় দিয়ে শুরু করতে পেরে সন্তুষ্ট অধিনায়ক ধোনিও। তিনি বলেন, ‘গর্ব হয় যে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে অপরাজিত আমরা। কিন্তু সামগ্রিকভাবে খুব বেশি ম্যাচ জিতিনি। আগে পাকিস্তান প্রচুর ম্যাচ জিতেছে।
×