ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৮৫ রান করেও ৪ উইকেটে হার, তবু সন্তুষ্ট মরুর দেশের খেলোয়াড়রা

জিম্বাবুইয়ে জয়ের দেখা পেল আমিরাতকে হারিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জিম্বাবুইয়ে জয়ের দেখা পেল আমিরাতকে হারিয়ে

জিএম মোস্তফা ॥ বিশ্বকাপের ১১তম আসরে প্রথম জয় পেয়েছে জিম্বাবুইয়ে। বৃহস্পতিবার তারা ৪ উইকেটে হারিয়েছে তুলনামূলকভাবে টুর্নামেন্টের খর্ব শক্তির দল সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬২ রানে হেরেছিল জিম্বাবুইয়ে। বৃহস্পতিবার আরব আমিরাতের বিপক্ষে নেলসনের স্যাক্সটন ওভালে ১২ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করেছে তারা। ষষ্ঠ উইকেটে শন উইলিয়ামস এবং ক্রেইগ এরউইনের ৮৩ রানের চমৎকার জুটির সৌজন্যেই আরব আমিরাতের দেয়া ২৮৫/৭ রানের লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয় জিম্বাবুইয়ে। আর ৭৬ রানে অপরাজিত থাকায় ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেন উইলিয়ামস। তবে মিডল অর্ডারে এই জুটি দলের হাল না ধরলে জিম্বাবুইয়েকে বড় লজ্জাই উপহার দিতে অপেশাদার আরব আমিরাতের ক্রিকেটাররা। স্যাক্সটন ওভালে টস জিতে প্রতিপক্ষ আরব আমিরাতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান জিম্বাবুইয়ের অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা। কিন্তু জিম্বাবুইয়ের বোলারদের হতাশ করে ৭ উইকেটে ২৮৫ রানের লড়াকু ইনিংস গড়ে তুলে সংযুক্ত আরব আমিরাত। যা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বকালের সেরা স্কোর। শুধু ব্যাট হাতেই নয় জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে আরব আমিরাতের বোলাররাও জ্বলে উঠে। ৩৩ ওভারে ১৬৭ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট তুলে নিয়ে বিশ্বকাপে অঘটনের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন তারা। মূলত শন উইলিয়ামস ও এরউইনের কাছেই হার মানে তারা। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি ম্যাচ উপভোগ করেছে নেলসনের ক্রিকেটপ্রেমীরা। গ্রুপ ‘বি’ থেকে দুই ম্যাচ খেলা জিম্বাবুইয়ের এটাই প্রথম জয়। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছিল তারা। যে কারণে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ভাবেনি টেইলর-মাসাকাদজরা। প্রথমে ব্যাট করে আরব আমিরাতের ছুড়ে দেয়া ২৮৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে সতর্কতার সঙ্গেই জিম্বাবুইয়ের ইনিংস শুরু করেন সিকান্দার রাজা এবং রেজিস চাকাভা। আরব আমিরাতের অধিনায়ক মোহাম্মদ তৌকির ৪৬ রানে সিকান্দার রাজাকে আউট করে দেশকে প্রথম সাফল্য উপহার দেন। এর পরের চারটি উইকেট নিয়মিত বিরতিতেই পড়ে যায় জিম্বাবুইয়ের। যে কারণে কিছুটা চাপে পড়ে যায় তারা। এর মধ্যে জিম্বাবুইয়ের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা হ্যামিল্টন মাসাকাদজা মাত্র ১ রান করেই আমজাদ জাভেদের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। চাকাভা তৌকিরের বলে হিট উইকেট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৪ বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৫ রান করেন। ব্রেন্ডন টেইলর ৪৭ এবং সোলোমন মায়ার ৯ রানে ফিরে গেলে জিম্বাবুইয়ের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৬৭। এরপরই দলের হাল ধরেন উইলিয়ামস এবং এরউইন। ২৫০ রানে এরউইনের উইকেট পতনের পরে অধিনায়ক চিগুম্বুরাকে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান উইলিয়ামস। তার অসাধারণ ব্যাটিংয়ের সৌজন্যেই ১২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুইয়ে। আরব আমিরাতকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয় পাওয়ায় দারুণ সন্তুষ্ট জিম্বাবুইয়ে। ম্যাচ হারলেও নিজেদের অন্যতম সেরা ওয়ানডে পারফর্মেন্সের কারণে আরব আমিরাতও বেশ আনন্দিত। গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২৮২ রান করেছিল তারা। যা এতদিন পর্যন্ত আমিরাতের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। এখন জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৮৫ রানই সর্বোচ্চ স্কোর। ৩৫ বছর বয়সী শায়মান আনোয়ার ক্যারিয়ার এবং ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৭ রান তুলেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান এসেছে সহঅধিনায়ক অভিজ্ঞ খুররম খানের ব্যাট থেকে। তাদের গুরুত্বপূর্ণ দুই ইনিংসেই জিম্বাবুইয়েকে লড়াকু টার্গেট দিতে সক্ষম হয় আরব আমিরাত। পঞ্চম উইকেটে স্বপ্নীলের সঙ্গে ৮২ রান সংগ্রহ করেন শায়মান আনোয়ার। যা তাদের রেকর্ড সর্বোচ্চ। ৪২ রানে আরব আমিরাতের ৩ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুইয়ের সফল বোলার টেন্ডাই চাতারা। এছাড়া সোলোমন মির ও শন উইলিয়ামস প্রতেক্যেই ২টি করে উইকেট লাভ করেন।
×