ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

বেনাপোল ও আখাউড়া সীমান্তে মিলনমেলা

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বেনাপোল ও আখাউড়া সীমান্তে মিলনমেলা

সাজেদ রহমান/আবুল হোসেন, বেনাপোল থেকে ॥ বেলা ৯টা। বেনাপোল সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ড। সেখানে তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা অতিথিবৃন্দ। ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে এসেছিলেন বনগাঁ মহকুমা শহরের সাহাপাড়ার আরতী সাহা। মাথায় বাঁধা কালো ফেটি। তাতে লেখা, ‘ অমর একুশে’। এসেছেন নোম্যান্সল্যান্ডে অস্থায়ী বেদীতে ফুল দিতে। এ রকম অনেকে এসেছিলেন বেনাপোলে, বনগাঁ শহর ও তার আশপাশের গ্রাম-পাড়া মহল্লা থেকে। তাঁদের মধ্যে ছিল ভাষা শহীদদের নিয়ে অন্য রকম আগ্রহ। ফিরে যাবার সময় নোম্যান্সল্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা এক বিজিবি সদস্যকে বললেন, ‘ধন্যবাদ’। এর আগে সেখানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন বাংলাদেশের মানুষ। এ সময় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। তখন দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী স্থানে আবেগ-আপ্লুত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। একে অপরকে আলিঙ্গন করে সকল ভেদাভেদ ভুলে যায় কিছু সময়ের জন্য। অনেক মানুষ নাড়ির টানে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। ক্ষণিকের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক সীমারেখা। পরে বেনাপোল ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে যশোর রোডের উপর রেইনট্রি গাছের নিচে তৈরি মঞ্চে দুই বাংলার নেতারা বক্তব্য রাখেন। দুই বাংলার মানুষ একই মঞ্চে গাইলেন বাংলার জয়গান। কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার গাইলেন, সেই কালজয়ী গান ‘সালাম সালাম, হাজার সালাম, শহীদ ভায়ের স্মরণে ... স্টাফ রিপোর্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জানান, ত্রিপুরার সদ্যপ্রয়াত বাংলাভাষার বিশিষ্ট কবি অনিল সরকারের ‘এপার পদ্মা ওপার গঙ্গা, মধ্যে করতল- সেতু বাঁধো মৈত্রী সেতু, প্রেমের শতদল’ শীর্ষক কবিতার লাইনকে ধারণ করে মহান একুশে ফেব্রুয়ারিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-আগরতলা সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে দুই পারের সংস্কৃতিকর্মী, কবি, শিল্পীরা মিলনমেলায় মিলিত হন। শনিবার বেলা ১১টায় বিজিবি-বিএসফের সহায়তায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস আবৃত্তি সংগঠন ও আগরতলার নীহারিকা এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ সময় দুই পারের পক্ষ থেকে একে অপরের জন্য নিয়ে আসা ফুল ও মিষ্টি বিনিময় করে। তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের পরিচালক মোঃ মনির হোসেন ও নীহারিকার সম্পাদক শুভ্রজিৎ ভট্টাচার্যের যৌথ পরিচালনায় একুশের ভাষা শহীদ ও ত্রিপুরার সদ্যপ্রয়াত কবি অনিল সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করার মধ্যদিয়ে মিলনমেলা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীরা একুশের কবিতা আবৃত্তি করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেনÑ ত্রিপুরা রাজ্যের ডেপুটি স্পীকার পবিত্র কর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, ত্রিপুরা রাজ্যের বিশিষ্ট কবি দিলীপ দাস, আজকের ফরিয়াদ পত্রিকার সম্পাদক শানিত দেব রায়, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, ত্রিপুরার বিশিষ্ট সাংবাদিক তাপস দেবনাথ, বিপুল ভৌমিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতিক সংগঠক জহিরুল ইসলাম ভূঞা, সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী আফজাল হোসেন নেসার, নারী সংগঠক নেলী আকতার, সাংস্কৃতিক সংগঠক এটিএম ফয়েজুল কবির এবং অধ্যাপক উসমান গনি।
×