ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যা আছে মান্না-খোকা ফোনালাপে-

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

যা আছে মান্না-খোকা ফোনালাপে-

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংলাপের অন্যতম উদ্যোক্তা রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমানকে একটি অডিও টেপে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা বলতে শোনা গেছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে রাজধানীতে মান্না নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য আয়োজিত গণমিছিলের পরিকল্পনা নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে বলে ওই অডিও টেপে শোনা যায়। বিএনপি-জামায়াত জোটের চলমান আন্দোলন নিয়ে দুই নেতার দীর্ঘ কথোপকথন রয়েছে ওই টেপে। বিএনপি নেতা খোকা আট মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। টেপ বিষয়ে মান্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার না করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘খোকা ভাইয়ের সঙ্গে আমার মাঝে মাঝে কথা হয়। তিনিই আমাকে ফোন করেন।’ এক সময়ের বামধারার ছাত্রনেতা ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না নব্বইয়ের দশকে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান। ওই সময় তিনি ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর দল থেকে পদ হারান মান্না। এরপর গত মহাজোট সরকারের আমলে তিনি নাগরিক ঐক্য গঠন করেন। গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মান্নার উল্লেখযোগ্য কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখা না গেলেও গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ‘মাঠে নামার’ ঘোষণা দেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘বিএনপি রোজার পর আন্দোলন করবে। রোজার পর আমরাও মাঠে থাকব। আমাদের অভিভাবক ড. কামাল হোসেন আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’ মূলত ওই সময় থেকেই গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ও সিপিবি-বাসদের সঙ্গে জোট করে তৃতীয় শক্তি গঠনের উদ্যোগের কথা জানিয়েছিলেন মান্না। সম্প্রতি বিএনপির টানা হরতাল-অবরোধের মধ্যে সুশীল সমাজের একাংশকে নিয়ে ‘উদ্বিগ্ন নাগরিক’ নামের একটি মঞ্চ গঠন করেন কামাল-মান্না। এই মঞ্চ থেকে বিএনপির সঙ্গে আগাম নির্বাচন বিষয়ে সংলাপের চিঠি প্রদানসহ একাধিকবার সংবাদমাধ্যমে আহ্বান জানান মান্না, কামাল ও কাদের সিদ্দিকী। মান্না সম্প্রতি বলেছেন, সরকার সংলাপের ক্ষেত্রে নমনীয় না হলে সেনা অভ্যুত্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কথোপকথনের প্রথম অংশ খোকা : হ্যালো মান্না : জ্বি, সøামালাইকুম। খোকা : হ্যাঁ, ওয়ালাইকুম, কেমন আছেন? ভাল? মান্না : হ্যাঁ, আছি ভাল, ভাল আছেন? খোকা : এই.. চলছে আর কী। মান্না : ডিস্টার্ব করলাম না তো, কোন্ সময় যে কী তা তো বলতে পারি না। খোকা : এখন তো এখানে বাজে রাত সাড়ে ১০টা। মান্না : তার মানে ঘুমাতে যাননি এখনও? খোকা: না না, আমি তো ঘুমাই অনেক রাতে। দুইটার আগে তো ঘুমাই না। মান্না : আচ্ছা আচ্ছা আচ্ছা, এমনে শরীর-টরীর কী অবস্থা আপনার? খোকা: শরীরটা আগের চেয়ে খারাপ হয় নাই, এইটাই ওরা বলে যে, ভাল। মান্না : ওই যে কী রিপোর্ট পাওয়ার কথা যে, সেটার কী অবস্থা? খোকা : পেয়েছি, ওইটা স্ট্যাবল আছে। ডেটরেট করে নাই। মান্না : তাইলে তো ভাল। ওদিকের খবর-টবর তো সব বোধ হয় পেয়েছেন যে, টুকু ভাইসহ একদিন কথাও বলেছি। খোকা : হ্যাঁ, আমাকে ফোন করল একটু আগে, আপনার সাথে কথাটথা যেটা বলল জানাল আর কী আমাকে। মান্না : এখন এ ব্যাপার হলো যে, ধরেন শেষ পর্যন্ত কী হবে সেটা তো এখন ওরকম করে বলা যায় না। বাট দেখা যাচ্ছে যে, কূটনীতিকরা অন্যান্যরা যথেষ্ট পরিমাণে ইনিশিয়েটিভ। খোকা : হ্যাঁ, ইনিশিয়েটিভ তো কিছুটা হচ্ছে দেখা যায়। মান্না : জ্বি। আবার প্রতিবেশীদেরও দৃষ্টিভঙ্গির বেশ পরিবর্তন হচ্ছে। আমি খবরটবর পাচ্ছি। এই মুহূর্তে আসলে দরকারটা হলো মাঠে যাওয়া। আমি আপনাদের অসুবিধাটা বুঝতে পারছি, যদিও আমি দেখতে পাচ্ছি যে, চেষ্টা করছেন আপনারা। আমি একটা প্রোগ্রাম করলাম সোহরাওয়ার্দীতে। এখন ধারণা করছি যে, এ প্রোগ্রামটার একটা কন্টিনিউটি রাখতে হবে। কারণ, বিদেশী কূটনীতিকরা এটার ওপরও জোর দিচ্ছে যে, বিরোধীদেরকে সভা-সমাবেশ ইত্যাদি করতে দিতে হবে। এটায় বাধা দেয়া যাবে না। সরকারের ওপর একটা চাপও রয়েছে। আমি এটা করতে পারব, দেখা যাক কতদূর কী করা যায়। খোকা : অ্যাকচুয়ালি আমাদের জেলা পর্যায়ে বা অন্যান্য দিকে নিচের দিকে যে নেতাকর্মীরা আছে ওরাতো প্রায় দেড় মাস হয়ে গেল। ওরাতো অ্যাগজস্টেড হয়ে যাচ্ছে। এখন এটা কতদিন কনটিনিউ করা যাবে। আবার না করেও তো কোন উপায় দেখছি না। মান্না : আরও কিছুদিন তো কনটিনিউ করতেই হবে। খোকা ভাই আমি যেটা দেখতে পাচ্ছি। খোকা : আপনার ওপিনিয়নটা কী... আরও কিছুদিন কনটিনিউ করি, নাকি? মান্না : হ্যাঁ, আমি যেটা বলতে শুরু করেছি ত হলো যে, এখানে মাঝখানে যে একটা গ্রে এরিয়া বা ভয়েড আছে এই জায়গাটাতে এখন আমাদের নামা দরকার। আমাদের বলতে... সিপিবি বা ওদের পজিশন কিন্তু বেশ ফেসিনিটিং। অনেকটা ওই দিকে আর খানিকটা এই দিকে এই রকম। তার মানে আমরা যে কয়জন আছি এই কয়জনই। তার মধ্যে আবার দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। কিন্তু এখানে কাউকে টানতে হবে। এরমধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গ্রোগ্রামটা আমি করেছি যে এইটাতে অন্যরা খুব চাঙ্গা হইছে। বিকজ এটার সাথে পাবলিক রেসপন্সটা খুব ভাল ছিল। আমাদের তুলনায় খুবই ভাল ছিল। খোকা : আমরা কিছু কর্মী পাঠিয়েছিলাম। মান্না : হ্যাঁ হ্যাঁ, গেছে ওরা গেছে। যোগাযোগ হয়েছে। তার পরেও ধরেন আপনাদের এরাও যদি বোঝে যে, এখানে তারা পার্টিসিপেট করলে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের লাভ হবে তাইলে কিন্তু পার্টিসিপেশন অনেক বড় হতে পারে। ওই রকম হয়নি। হয়েছে, ওই রকম না। আপনি যাদের যাদের বলেছেন ওরা কয়েকজন আমাদের সাথে কথাও বলেছে। ওইটা ভাল আরকি। আমি এখন ৩ বা ২৩ তারিখে একটা গণমিছিলের প্রোগ্রাম করতে চাচ্ছি আমার সুবিধার জন্য। টিভির টকশোতে বলেছি, লিখেছি, ফরমাললি এ্যানাউন্স করব হয়ত, এক দিন দুই দিন পরে, ভাবলাম আপনার সঙ্গে একটু আলাপ করি। কারণ এখন পরিস্থিতিটা একটু সামনে নাজুক কী, ধরেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যদি ছয় হাজার লোক থেকে থাকে, মিছিলে তো এক হাজার লোক আসতে ভয় করে। মিছিল আর ওটা ডিফ্রেন্ট জিনিস। তারপরেও এটা আনতে হবে কারণ রাস্তার ভয়টাই তো ভাঙ্গার দরকার এবং এইটাতে আমি কথাবার্তা বলছি, আমি মনে করি মিটিং মিছিলটা করলে পুলিশ হয়তো বাধা দেবে না বা দিলেও আমরা তো থাকব সেখানে। দেখা যাক কী হবে। তো.. আপনার কাছে আমি দুইটা সাপোর্ট চাইছি, একটা হল যে, মাঝে আপানি তো দূরে থেকেও যেটুকু কিছু একটা ইয়ে করেছেন, আমার উপকারও হয়েছে। যে জিনিসটা একটু বেশি আমার জন্য কষ্টসাধ্য হচ্ছে যে, মানে খুবই কমিটেড লোক আনতে হবে আর ব্যাপক একটা পাবলিসিটি করতে হবে। মানুষ জানুক যে না রাস্তায় আছে লোকজন। সেøাগানটা এরকম দেব যে, শান্তি ও সংলাপের দাবিতে গণমিছিল। মানে দুটো জিনিস কম্বাইন করা যায়। আপনি ওখান থেকে প্রোগ্রাম-টোগ্রাম দেখতে পান কিনা, সেটা হলো টকশো এখন আমরা ডমিনেট করি। ওরা রাফলি চেষ্টা-টেষ্টা করে সেটা। আর আরেকটা ব্যাপার খোকা ভাই, আমি বলি আপনাকে সেটা হচ্ছে যে, আপনি তো দূরে থেকে যেটুকু ইনফ্লুয়েন্স করতে পারেন, আপনাদের লোকজনকে এইটা একটু বলেন, সেটা হলো যে, যদি অনেকটা নিউট্রাল পজিশনে পার্টিসিপেট করি সেটা কিন্তু ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টটাকে হেল্পই করবে। মিছিল মিটিং যদি আমি ১০ হাজার লোকের করতে পারতাম তাইলে একটা আওয়াজ উঠত। সাড়া পেতাম। সেটা হয়ত পারব না। কিন্তু পারব নাই বা কেন? একবার না পারি দু’বার তিনবার চেষ্টা করেও যদি পারি। ব্যানারটা যাই থাকুক। ব্যানার আর যাই হউক না কেন ব্যানারের ভেতরে অন্তত বিরোধী আন্দোলনকে কোন সমালোচনা করা হচ্ছে না। কালকে আমি আর নূরুল কবীর আরটিভির টকশোতে ছিলাম। এর আগে ইন্ডেপিন্ডেন্ট-এ ছিলাম। মানে এটাই বলেছি যে, এই ক্রাইসিসটার গোড়া তো ৫ জানুয়ারি, সেটা বাদ দিয়ে এগুলো আলোচনা করতে হবে কেন। ওইটা করেন তার সাথে এই যে আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা ঢুকেছে সেটাও আলোচনা করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই যে, বিদেশী কূটনীতিকরা গতকালকে এই যে ব্যবসায়ীদের সাথে বসেছিল। আজকে আপনি যদি পারেন তাইলে প্রথম আলোর ফার্স্ট নিউজটা পড়ে দেখবেন, হুবহু একই কথা বলেছে তারা। পরিস্থিতিটা বেশ ফেভারেবল আছে আমার মনে হয়। যদিও আমি জানি না যে গভর্নমেন্টের এ্যাটিচিউটের জন্য ভাল হবে নাকি মন্দ হবে। প্রাইম মিনিস্টার আমার ব্যাপারে খুব অ্যালার্জি হয়ে গেছে। মনে করছে যে, এই সব কাজ ভেতরে ভেতরে আমি করে দিচ্ছি। নইলে ড. কামাল আর নাগরিকরা কি এগুলো পারে নাকি...? আমি এগুলো করাচ্ছি। এরকম একটা ধারণা হয়েছে। আপনার ভাইবার ঠিক আছে, এই জন্য কথা বলতেছি। না হলে তো কথা বলতেও ভয় লাগে। আমাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বলছে যে আপনি একটু কেয়ারফুল থাকেন। আপনাকে যদি সুবিধাজনকভাবে পায় তাহলে ইউ উইল ইন ট্রাবল। তো ওইটাও একটু কেয়ারফুল থাকার চেষ্টা করছি। সব মিলায়ে আর কি, এখন দোয়া করেন কি করা যায়। আর কোন পরামর্শ যদি থাকে আপনার সেইটা বলেন। খোকা : আমি আপনাকে ফোন করতাম এই জন্য যে, আমাদের গ্রোগ্রাম নিয়ে আমরা একটু দ্বিধাগ্রস্ত, এইটা কি করা যায়। মান্না : শোনেন, পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক থেকে আমি একটা কথা বলি। আই মে বি রং। কারণ এটা তো আপনার ডেফিনেট কথা ছাড়া বলা যায় না। তার পরেও আমি মনে করছি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকান এ্যাম্বাসেডর- সব কথাবার্তা সূক্ষ্মভাবে দেখেন- মনে হচ্ছে যে তারা কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, সংলাপ করতে হবে। অপজিশনকে ডেমোক্র্যাটিক এ্যাটমোসফেয়ার দিতে হবে। সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। এটা তোমাদেরই কাজ, করতে হবে, নইলে তোমাদের ক্ষতি হবে। এখন এই কথাটা শুধু কথার মধ্যে কি? এটার সঙ্গে যদি ইন্ডিয়ানদের একটা যোগসাজশ হয়, তাহলে এইখানে একটা চেঞ্জের বাতাস বয়ে যাবে। আমি বলছি আমার নলেজ অনুযায়ী বন্ধুদের পরিবর্তন হচ্ছে, এখন যদি আপনি, মানি এটার ইউজ করেন, তাবে রংটা কিন্তু শেষ হয়ে যাবে। যদি থাকে, থাকলে যেটা হবে এটা আমি বল এটা আমি বলছি না। কিন্তু যদি না থাকলে হবেই না সেটা সিউর, না থাকলে ইউ জাস্ট ডিফিটেড, আপনাদের এটা উইথ ড্র করার জায়গা নেই আর। বরং আরও ভাল করে করার চেষ্টা করতে পারেন। সেটা যদি একটু দুর্বলও হয়, তারপরও কিন্তু। .... দেখেন, এতগুলো লোক পেট্রোলবোমায় মারা গেছে, কিংবা এতো প্রপাগা-ার পরেও মানুষের আন্দোলন, বিরোধী মনোভাব গড়ে উঠেছে। (না, আন্দোলন তো জাস্টিফাইড : খোকা) মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, বিরক্ত হচ্ছে, ভাল লাগছে না। তারপরেও মানুষ বলছে না সব দমন করে ফেলো, বিএনপি খুব অন্যায় করছে। খোকা : বলছিলাম, ধরেন আপনাদের মুভমেন্ট, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক যে একটা তৎপরতা চলছে আরকি। তারপরও তো সরকারের অবস্থানের কোন রকম কোন ইয়ে নাই, কোন রকম অবস্থানের পরিবর্তন নাই। এহেন পরিস্থিতিতে আমাদের সাইড থেকে কি ম্যাডামের অবস্থান থেকে স্টেজে কি কোন কথা বলা কি ঠিক হবে যে, কি পরিস্থিতিতে আমাদের এই মুভমেন্টটা কন্টিনিউ করতে হচ্ছে। খোকা : একটা হলো যে, গবর্নমেন্ট এই ধরনের জাতীয় আন্তর্জাতিক চাপের পরও তারা আলোচনার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। এই সমস্যা সমাধানে তাদের কোন ভ্রƒক্ষেপ নাই। এমতাবস্থায় আমাদের আন্দোলন চালায়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের জন্য কোন উপায় খোলা নাই। মান্না : না না, খোকা ভাই না। মানে আপনি যেটা বলতে চেয়েছিলেন, সেটা বলেন। কিন্তু টোনটা একটু ডিফরেন্ট থাকতে হবে। সেটা হচ্ছে কি, একটা যে, আমরা কোন সহিংসতার মধ্যে নাই। আমাদের এ রকম একটা অন্দরের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এটা একটা অবৈধ সরকার। অনির্বাচিত সরকার। আমরা তার কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করিনি। আমরা শুধু বলেছি, তুমি ভুল করেছ, কারেকশন করো। মান্না : সেই জন্য এই আন্দোলন। সেই আন্দোলনটাকেও তারা এই এই ভাবে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে। সেখানে আপনার এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের উদাহরণগুলো সব তোলেন। তোলার পর বলেন, এটা একটা ন্যায্য আন্দোলন। এই ন্যায্য আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার কোন পথ আসে না। মান্না : ওরা যে এত সহিংসতা সহিংসতা করেছে। এই সহিংসতা তারা নিজেরাও যে করেছে কত? এটা আপনাকে ক্লিয়ার করতে হবে যে, আপনি কোনভাবেই সহিংসতার পক্ষে নন। কিন্তু ডেমোক্রেসির প্রশ্নে ... মান্না : ... এই সমস্যার সমাধান হতে পারে, সরকার যদি সংলাপের উদ্যোগ নেয়, কথা বলে, এটার একটা বাস্তবসম্মত সমাধান করে। ব্যাকফুটে যাওয়ার কোন টোন থাকা যাবে না। কিন্তু আপনার বক্তব্যটা বোঝা যাবে। মান্না : এখন কিন্তু আমি দেখছি, সালাউদ্দিন সাহেবের যে স্টেটমেন্ট যাচ্ছে, দিজ আর ফাইন। খুবই সুন্দর স্টেটমেন্ট যাচ্ছে আমি দেখছি। ওই জায়গাটা ধরে রেখে ম্যাডাম সমস্ত পরিবেশই বিবেচনা করছে জনগণকে বলবেন, এই কষ্টটুকু স্বীকার করতে হচ্ছে, আমরা জনগণের কষ্টের জন্য দায়ী না। দায়ী তারা। তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। সরকার এটা তাদের মানতে হবে। মান্না : যেমন ধরেন, আমরা এইখানে যেই ক্যাম্পেইনটা করছি। ক্যাম্পেইন মানে কথা বলছি। সেখানে আমরা বলেছি, সমস্যাটা শুরু হয়েছে এইখানে। ৯৬’র নির্বাচনের পরে তখন আমরা সঙ্গে ছিলাম, আমরা বলেছি, গবর্মেন্ট মানি না একদিনের জন্য। তুমি যাও। তারা ৩ সপ্তাহের মধ্যে মধ্যে সংসদ ভেঙে তা করে ফেলেছিল। কিন্তু এখন তুমি কথা দিয়েছিলে, এক বছরের মধ্যে নির্বাচন দিবে। কিন্তু তা করতেছো না। তুমি ৫ বছর চলতে চাও। এটাই কারণ। তুমি এটাই মিটাও। বাকি যেটা বলছো, আমরা এটারও বিরুদ্ধে। আমরা দরকার হলে সবাইকে বলব, সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়েন। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, তুমি ক্রসফায়ার করে মেরে ফেলতে হবে। সেই রাইটও তোমার নেই। খোকা : না না ভয়াবহ অবস্থা। এটাতো স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশের চরিত্রইতো থাকছে না আর। যেখানে সেখানে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এই হচ্ছে, এটা কি হলো একটা দেশের? মান্না : এইটা দুইটাতে প্লে করে ওইটা বলতে হবে, আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছি। খোকা : হ্যাঁ, সেটাই সেটাই। মান্না : এই জায়গাটাই একটু ইয়ে করতে হবে যে, আমরা বড় ঠেকায় পড়ে গেছি, তাই এটা করতেছি। মানুষ চায় না। মানুষ এখানে চায় বিনয়ী ...। ওইভাবে আমি মনে করি একটা দিতে পারেন। আর বাকিটা আপনিই বুঝবেন, সেটা হলো, আসলে কতখানি ধরে রাখতে পারবেন। আর কতখানি নিতে পারবেন? ভেঙে পড়া যাবে না। তার আগে আপনার বুঝতে হবে। কিন্তু আমি এখনও ভেঙে পড়ার পরিস্থিতি দেখছি না।.. খোকা : না, সেটা না। কিছু কিছু ডিস্ট্রিক্ট থেকে বোধ হয়, একটু বিরক্ত মানে। এখন ধরেন মুভমেন্ট চালানো, প্রতিদিন একটা হিউজ কর্মযজ্ঞ হয়। একটা মানুষ জেল জুলুম পালায়া থাকা, এই করা সেই করা, আবার এ্যাকটিভিটিজ করা, এটার জন্য যোগান দেয়া এগুলো একটু ইয়ে হয়ে আসছে আরকি। ... মান্না : হু হু হু। ... সহসাই আপনাদের দেবে না। কিন্তু আমরা যদি একটা দুইটা বড় প্রোগ্রাম করে ফেলতে পারি। তাহলে ব্রেক থ্রু হয়ে যাবে। আপনারা তখন পেছনে পেছনে নিজেদের মতই নামতে পারবেন। ওকে নামতে পারলেই কেইস শেষ। মান্না : ... এই প্রোগ্রাম আমি ডিক্লেয়ার করেছি। ড. কামাল এ্যাগ্রি করেছেন। হি উইল লিড দ্য প্রোসেশন। তিনি এখন দেশের বাইরে যেমন ধরেন কালকে একটা প্রশ্ন করেছিলো সরকার কি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঠেকাচ্ছে? আমি বললাম, না, এটাতো কোন প্রশ্ন হয় না। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঠেকাচ্ছে না। মান্না : কিন্তু অন্যান্য শক্তিকেও ঠেকাচ্ছে। সেটাও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নয়। এই ক্যাম্পেইনগুলো করা, যতটুকু পারা যায়। তার সঙ্গে সঙ্গে এ্যাকশন নিবেন। আর যেটাই হোক, পাবলিকের কিলিংয়ের ঘটনা ডেফিনিটলি এ্যাভয়েড করতে হবে। এটা করা যাবে না। মান্না : গত চার পাঁচ দিনে পেট্রোলবোমায় মৃত্যুর ঘটনা কিন্তু নেই এখন আর। এটা ভালো। খোকা : সেটাও গবর্মেন্টের অপপ্রচার। তারা বলবে, আমরা কন্ট্রোল করে ফেলছি। সব ঠিক হয়ে গেছে। মান্না : না না, তা করতে পারছে না। তা করেনি এখন পর্যন্ত। হয়তো তারা করবে। তারা ভালভাবে খেয়ালই করেনি এখনও। ... এটা আপনারা বলতে পারবেন। এটা আমাদের বলতে হবে। আমি দুইটা টক শোতে বললাম। অন্যদেরও বলতে বলেছি। ... কিন্তু আন্দোলন বাকিটা চলতে থাকবে। খোকা : আপনার প্রোগ্রাম কি ২৩ তারিখে। মান্না : জ্বি ২৩। ২৩। খোকা : এটা কি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই। মান্না : এটা প্রেস ক্লাব থেকে হয়তো মিছিল করব। মতিঝিলের দিকে যাব চিন্তা করছি। খোকা : এটা কি বিকালের দিকেইতো হবে, নাকি? মান্না : জ্বি, বিকালে। তিনটার দিকে জমায়েত। এরপর আমরা মিছিল করব। ধরেন আমার মিছিল এক হাজার লোকেরই হলো। এক হাজার না পাঁচ হাজার সেটা বলতে পারব না। ঢাকা শহরের সব লোককে জানাতে হবে যে, এই মিছিলটা হচ্ছে। যাতে মানুষ হতাশ হয়ে না যায়। এই জায়গাটাতো ভেঙে গেছে। এটা ধরে রাখতে হবে ... স্পিরিট অব মুভমেন্ট না হলে মানুষ টিকবে না। মান্না : ঢাকা সিটির মনে হয় না। আপনাদের এখানে যারা সিটিতে আছে, তাদের নিজেদের মতো করে ভাবতে হবে। শহরের তারা কোথায় কিভাবে কি করতে পারে? এই জন্য টিউনিং দরকার। একটু বোঝানো দরকার। গেলেইতো গুলি খাবে এই কথা বলেতো আপনি দেড় বছর চুপ থাকতে পারবেন না। নামতে হবে তো আপনাকে। সেটা আপনি কৌশলে নামেন, সতর্কতা, তৈরি করে নেন কিভাবে এটা আপনি অত দূর থেকে বলবেন। এটা নিজেদের ফিল করতে হবে। মান্না : আরেকটা বিষয় আমি ওই যে বলেছিলাম। কোনভাবে ইউনিভার্সিটি নাকি এটা ভাবেন। দ্যাট শুড বি এনি কস্ট। যদি পারা যায়। আমি জানি না। এটা আরও আগে, মাস তিনেক আগে। খোকা : করে ওরা। বাট এটা খুবই সীমিত। মান্না : ওটাতো ট্রাডিশনাল হয়েই গেছিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগকেতো ডিভিডে- দিচ্ছে...। মান্না : ধরেন, ইউনিভার্সিটিতে একটা মিছিল হলো। ধরেন যা মারামারি বাইরে হচ্ছে। ইউনিভার্সিটিতে মারামারিতে গেলো দুই তিনটা। কি করা যাবে? কিন্তু হল ... আপনারা গভমেন্টকে শেইক করে ফেললেন। মান্না : আমি মাস তিনেক আগে ... কে বলেছিলাম, যে কোনভাবেই হোক আপনি আগে ইউনিভার্সিটিতে দুই তিনটা হল দখল করেন। আগে এ রকম ছিলোতো আমাদের। এই পাঁচটা হল আমাদের। ওই তিনটা হল তোমাদের। ওই দুইটা ওদের। মান্না : তখন উনি বলেছিলেন, না আমাদের ছাত্রদলের এ রকম স্ট্রেন্থ এখন আর নাই। খোকা : ছাত্ররা হয়তো ছাত্র-ছাত্রের লড়াইতে কুলাইতে পারবেন। কিন্তু পুলিশ টুলিশ আইসা ইউনিভার্সিটি অথরিটি আইসা, ঢুইক্যা-ফুইক্যা রুম-টুম ইয়ে টিয়ে করে, বড় ধরনের একটা ইয়ে হয়ে যাবে। মান্না : একটা বড় ধরনের কিছু হলেই ঘটনাই পাল্টে যাবে। গভমেন্ট সুতার উপরেই ঝুলছে এখন। যে টোনে কথা বলতে দেখছি, তাতে আমার কাছে মনে হয়েছে, গভমেন্ট রিয়াল একটা শেকি পজিশনে আছে। আমি জানি না, কেরির সঙ্গে ওখানে কি কথা হচ্ছে বা হবে। দ্যাট উইল বি ভেরি ভাইটাল। খোকা : এখানে বিভিন্নভাবেতো আমরা কিছু ইনফ্লুয়েন্স করার চেষ্টা করছি। আমি ওসমান ফারুক যাই হোক জানা থাকলো আর কি। মান্না : খোকা ভাই দোয়া করবেন, আবার কথা হবে। আমি আবার আপনাদের ... যাব। এইরকম যদি হয় আপনাদেরও কিছু কিছু জায়গা আছে। যারা উদ্যোগী করবে। তাদের দিয়ে কথা বলাতে হবে। দলের কোন ক্ষতি হয় এমন না। যেমন আগামীকাল অলি আহাদ সাহেবের উপর উনার মেয়ে করছে। সেখানে এমাজউদ্দিন আহমেদ সাহেবও আছেন। খোকা : ওই মেয়েটা কালকেতো আরটিভিতে দেখলাম আপনার প্রোগ্রাম, ভালই হয়েছে। মান্না : ওকে তো আমি নিয়েছি। ওকে আমি একদিন বাংলাভিশনে একটা প্রোগ্রামে দেখেছি। ওই যেটা বড় প্রোগ্রামটা হয়। আমার ভাল লাগল, শুনি। এরা যখন জিজ্ঞেস করলে বললাম ওকে দাও। খোকা : কালকে রাতে ওকে ফোনও করলাম। মান্না : এটা যদি পারেন। ওই মেয়েটা আছে, পারভেজ আছে। এইরকম ৫টা ৭টা ছেলে মেয়ে তৈরি করেন। যারা সব জায়গায় যেতে পারে। কথা বলুক তারা। এটা কিন্তু খুব ম্যাটার করে। খোকা : পলিটিক্স কিন্তু মাঠের থেকে চুরি হবার আরেকটা কারণ টকশো। মানুষের এটেনশনটা টকশো’র দিকে চলে গেছে। মান্না : ইন স্পাইট অফ অল দ্য প্রেসার এই জায়গাটা কিন্তু এখনো ডেমোক্রেটিক ফোর্সের প্রভাব বেশি। ধরেন যে পরিচালনা করে, যে প্রডিউশার তারাও আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওরাও ভাবে বিএনপির কথা আসা দরকার। ওরাও একোমোডেট করবে। কিন্তু এইজন্য তো মানুষ নাই এখন। কেউ তো যাচ্ছে না। মান্না : আচ্ছা, লাস্ট একটা কথা বলি। আমাকে দুই একজন এইরকম বলেছে আপনি একটু ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি হয়তো একটু ভাল ফিল করবেন। উনি একা আছেন, পরিস্থিতি কি জানান। তো আমার হয়তো ফোন করা হবে বলে মনে হয় না। আমি হয়তো শিমুলের সঙ্গে কথা বলবো। আপনি যদি পারেন আমার সালাম দিয়েন। আই এম নট বিএনপি ম্যান বাট আমি ডেমোক্রেসির কোয়েশ্চেনে ফাইট করছি। খোকা : আমি তো বলতে পারি। আপনারা যেহেতু কামাল হোসেন সাহেবসহ আপনারা দেখা করলেন। উনি বিদ্যমান বিষয় নিয়ে আপনাদের ফোন দিতে পারেন। একটু আলোচনা করি বা এটা সেটা। এইরকম করলে কি আপনারা কিÑ মান্না : মনে হয় তা পারবো না। আমি তো একা যেতে পারবো না। ড. কামাল হোসেন সাহেব তো রাজি হবেন বলে মনে হয় না। কাজেই উনাকে একটু বলেন। ... উনাকে পারসু করছেন বললে আমরা কথা বলতে পারি। খোকা : উনি যদি ইয়ে হয় ... ম্যাডাম.. দাওয়াতই দিল ... যে আসেন।... মান্না : আপনার কনভেশনের জন্য একটা কথা বলি। খেয়াল করে দেখেন এই যে নাগরিক সমাজের যে উদ্যোগটা সংলাপের পক্ষে একটা সাড়া ফেলে দিল না ... এটা হলো কি ... হবার পর দেখলাম বান কি-মুনের চিঠিটা ... বান কি-মুনের চিঠি ও এই উদ্যোগটা কিন্তু প্রায় একই জিনিস ছিল। খোকা : হু হু হু ... হু হু মান্না : বান কি-মুনের চিঠিটা প্রথম আলোতে যেদিন প্রকাশিত হলো তার সাতদিন আগে মতিভাই বললেন, এই রকম একটা চিঠি আসছে ... নিউজ তো করতে পারছি না বিকস ডকুমেন্ট নাই। কি কি ডকুমেন্ট দেখেন চেষ্টা করে। মানে মতিভাই সম্ভবত জানতেন বান কি-মুন এই রকম বলছে। তার আগে হয়তো ড. কামালও জানতেন। হয়তো তাকে ফলো করে সে কাজটা করেছেন। তাহলে হলো কি, ড. কামাল যেটাকে না বলেন আমি তা পারসু করতে চাই না। ... উনি উনার মতো যা করেনÑ যেমন নারায়ণগঞ্জে উনি কোর্টে না দাঁড়ালে র‌্যাব-ট্যাব অ্যারেস্ট হতো না। যাকে যতখানি পাওয়া যাবে তাকে ততখানি নেওয়াই ভাল। তার বাইরে প্রেসার করতে চাই না। খোকা : হু হু ... মান্না: তারপরে আওয়ামী লীগ একদম লেগে গেছে আমাদের বিরুদ্ধে। পার্লামেন্টের মধ্যেই প্রাইমমিনিস্টার বিরুদ্ধে বক্তৃতা করলেন। আমাদের তো আওয়ামী লীগের মধ্যে প্লে করতে হবে। ওই জায়গাটা থাকতে হবে। কারণ, আওয়ামী লীগের অনেক লোক বিরক্ত, অনেক লোক মনে করে যে বাড়াবাড়িটা ঠিক হচ্ছে না। তারাও ভিন্ন রকম চিন্তা করে। ওরা আমাদের ব্যান্ড করে দিতে পারলে ওদের লাভ। ... আপনি যদি বলেন ঠিক আছে। তবে ওটা আমি পারসু করতে চাই না। ... আপনি উনাকে বলেন। দেখেন কি হয়... খোকা : আচ্ছা আচ্ছা...
×