ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলাহাটের একটি আম বাগানে প্রতি রাতে অস্ত্র বেচাকেনার বাজার বসে!

অস্ত্র, বিস্ফোরক পাচারের নিরাপদ রুট চাঁপাই সীমান্ত

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

অস্ত্র, বিস্ফোরক পাচারের নিরাপদ রুট চাঁপাই সীমান্ত

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ॥ অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকদ্রব্য পাচারের নিরাপদ ঝুঁকিবিহীন রুট হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত। বিশেষ করে শিবগঞ্জে ১২, সদর থানা সীমান্তের ছয় ও ভোলাহাট সীমান্তের পুরোটাই ব্যবহার হয়ে আসছে অস্ত্র পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে। ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনই কমবেশি ছোটবড় আগ্নেয়াস্ত্র এসব রুটে দেশে প্রবেশ করেছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাপকহারে অস্ত্রের সঙ্গে ঢুকতে থাকে বিস্ফোরক ও গানপাউডার। বিশেষ করে সেই সময়ে শিবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হামলা চালানোর লক্ষ্য নিয়ে আসা গুলিসহ পিস্তল ধরা পড়লে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পিস্তলসহ আটক হেনার ছেলে আঙ্গুর ধরা পড়ার পর স্বীকারোক্তিতে জানায় হামলা চালানোর প্রস্তুতির কথা। তার বাড়ি নয়ালাভাঙ্গা ইউপির সুন্দরপুর গ্রামে। এর আগে একই উদ্দেশ্যে ৭ সেপ্টেম্বর ১৪ বিজিবি কিরনগঞ্জ সীমান্তের কাছে ৭৬ বিঘী এলাকায় অভিযান চালালে অস্ত্রের একটি বড় চালান নিয়ে চোরাকারবারিরা সরে যায়। ফেলে যায় গুলিসহ একটি পিস্তুল। এরপর অক্টোবরে তিনটি অভিযানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চারটি পিস্তুল, ২৮ রাউন্ড গুলি, একাধিক ম্যাগাজিনসহ নয়টি তাজা বোমার সঙ্গে এক কেজি ৩শ’ ৯০ গ্রাম গানপাউডার উদ্ধার করে। রানীহাটির রামচন্দ্রপুর হাট, মনাকষার ঠুটাপাড়া ও সোনামসজিদ সীমান্তের কাছাকাছি এলাকা থেকে এসব অস্ত্র ও গানপাউডার ধরা পড়লে সীমান্তে বেড়ে যায় অস্থিরতা। আটক অস্ত্র ও গানপাউডার বহনকারী উনিশবর্গী গ্রামের বাবলু রহমান (২৭), কামালপুর গ্রামের বাবু (২২) ও ঠুটাপাড়া গ্রামের বাদলের ছেলে কবিরকে আটক করা হয়। উল্লেখ্য, বাবলু দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত। একই সময়ে বিজিবি মনাকষা ইউপির গোপালপুর গ্রামের কবির মিঞাকে (২৫) ছয় লাখ ভারতীয় নকল রুপীসহ আটক করে। এই ঘটনার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে মনাকষা ইউপির গোপালপুর ঘাট এলাকায় একটি নসিমন আটক করে তার সিটের তলা থেকে একটি পিস্তুল, ম্যাগাজিন ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে বিজিবি। একই বছরের নবেম্বর-ডিসেম্বরে দশটি পিস্তল ও একাধিক ম্যাগাজিনসহ প্রচুর গুলি উদ্ধার করে। এসব অস্ত্র বহনকারীদের প্রায় নয়জনকে আটক করে র‌্যাব ও বিজিবি। আটককারীরা স্বীকার করে, তারা দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র বহন করে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে থাকে। তারাপুর গ্রামের আজিজুল মেকারের ছেলে বাবু, শাহবাজপুর গ্রামের ইসরাইলের ছেলে ইসমাইলসহ (২৫) অন্যরা স্বীকার করেছে তারা কয়েক মাস ধরে যেসব অস্ত্র নিয়ে আসছে তা পৌঁছে দিচ্ছে বিশেষ বিশেষ স্থানে বিশেষ ব্যক্তিদের কাছে।
×