ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ চারে মুক্তিযোদ্ধা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

শেষ চারে মুক্তিযোদ্ধা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চলমান মৌসুম-সূচক ফুটবল আসর ‘ফেডারেশন কাপ’-এর সেমিফাইনালে উঠেছে ‘অল রেডস’ খ্যাত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের চতুর্থ ও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ১-০ গোলে হারায় দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ‘আকাশী-নীল’ খ্যাত ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে। মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন সেনেগাল থেকে আগত ফরোয়ার্ড কামারা সারবা। এ জয়ে আগামী ২ মার্চ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিতে প্রতিপক্ষ ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের মোকাবেলা করবে নব্বই দশকের সাড়া জাগানো ‘ড্রিম টিম’ খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা। ৩ মিনিটে আবাহনীর হাঙ্গেরিয়ান মিডফিল্ডার গ্যাবনের শট মুক্তির এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ফেরত আসায় গোলবঞ্চিত হয় আবাহনী। ১৩ মিনিটে মুক্তির অধিনায়ক-ফরোয়ার্ড এনামুলের পাসে মিশরীয় মিডফিল্ডার জেইয়িদা হেড নিলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১৮ মিনিটে জটলা থেকে আবাহনীর আরিফুলের শট আটকে দেন মুক্তির গোলরক্ষক তিতুমীর চৌধুরী টিটু। ২০ মিনিটে আবাহনীর নাইজিরিয়ান তাইয়ো ইফাবিয়ির হেড ভাঙ্গতে পারেনি মুক্তির ডিফেন্স। ৪৯ মিনিটে বক্সের ডানপ্রান্ত থেকে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন আবাহনীর বদলি ফরোয়ার্ড আমিনুর রহমান সজীব। কিন্ত বল সরাসরি মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষকের পায়ে লেগে ফেরত আসায় গোল হয়নি। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে কোনপক্ষই গোল করতে না পারায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত আরও ৩০ মিনিটে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেই সফলকাম হয় মুক্তি। ৯৫ মিনিটে মুক্তির ডিফেন্ডার ইবনুল সিরাজীর পাস তীব্র শটে গোল করেন কামারা সারবা (১-০)। ১০৫ মিনিটে এনামুলের টানা দুটি শট একই রকমভাবে আটকে দেন আবাহনীর গোলরক্ষক। আবাহনী আরও কয়েক বার জোরালো আক্রমণ করলেও তাদের গোলপ্রচেষ্টাগুলো পর্যবসিত হয় ব্যর্থতায়। খেলা শেষ হলে মাঠ ছাড়ার সময় আবাহনীর দর্শকদের তীব্র রোষানলের শিকার হন আবাহনী ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু ও দলের খেলোয়াড়রা। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আগে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড হয় ‘সি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। ২ খেলায় তাদের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবকে ২-০ গোলে হারালেও হারাতে পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডকে (০-০)। পক্ষান্তরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ২ খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ আটে ওঠার আগে হয় ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ। প্রথম ম্যাচে তারা ৪-০ গোলে উত্তর বারিধারাকে হারালেও পরের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সঙ্গে। শেখ রাসেলেরও তাদের সমান পয়েন্ট ছিল। কিন্তু এক গোল বেশি করায় রাসেলই হয়ে যায় গ্রুপসেরা। ফেডারেশন কাপের ২৭তম আসরে (১৯৮০ সালে এ আসর শুরু হয়। তবে চারবার এ আসরটি অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৮৪ সালে পরিত্যক্ত, ১৯৯০, ৯২ ও ৯৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি) আবাহনী এর আগের ২৬টি ফেডারেশন কাপের ফাইনালে খেলেছে ১৫ বার। শিরোপা জিতেছে ৮ বার। পক্ষান্তরে মুক্তিযোদ্ধা ৭ বার ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৩ বার। তারা এ আসরের সর্বশেষ রানার্সআপ (২০১৩ আসরে শেখ জামাল ধানম-ির কাছে হেরে)। পক্ষান্তরে আবাহনী ফেডারেশন কাপে সর্বশেষ ফাইনাল খেলে ও চ্যাম্পিয়ন হয় ২০১০ আসরে (সেবার তারা হারায় শেখ জামাল ধানম-িকে)। এখন দেখার বিষয়, সেমিতে মোহামেডানকে হারিয়ে ২০১৩ আসরের পর আবারও টানা ফাইনালে খেলার কৃতিত্ব অর্জন করতে পারে কি না কোচ আবু ইউসুফের শিষ্যরা।
×