ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাতীয় পথনাট্যোৎসবে ‘এক টুকরো একাত্তর’

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৫ মার্চ ২০১৫

জাতীয় পথনাট্যোৎসবে ‘এক টুকরো একাত্তর’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিকৃতসুরে ‘কুইক মার্চ কুইক মার্চ’ গানের সঙ্গে চলছে রাজাকারদের ট্রেনিং। কমান্ডারের ধমকের মুখে কখনও কখনও তারা হয়ে উঠছে হিংস্রতার আড়ালে ভদ্র। শহীদ মিনারের পাদদেশে রাজশাহীর অনুশীলন নাট্যদলের পরিবেশনায় ‘এক টুকরো একাত্তর’ পথনাটকের শুরুটা ছিল এমনই। ‘এ মাাটি নয় জঙ্গীবাদের, এ মাটি মানবতার’ স্লোগানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে জাতীয় পথনাট্যোৎসব। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান আয়োজিত আট দিনব্যাপী এ উৎসবের বুধবার ছিল চতুর্থ দিন। এদিন চারটি পথনাটকের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। আর উন্মুক্ত উৎসবটি ইতোমধ্যে নজর কেড়েছে দর্শকদের। এদিন বিকেল থেকে শুরু হয় উৎসবের কার্যক্রম। প্রথমেই পরিবেশিত হয় রাজশাহীর অনুশীলন নাট্যদলের নাটক ‘এক টুকরো একাত্তর’। এতে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের এক খ-িত চিত্র। যেখানে খাওয়ার লোভ সামলাতে পারেনি একাত্তরের পরাজিত শত্রু পাক সেনাদের দোসর রাজাকাররা। গ্রামের মানুষের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি জোর করে খেতে খেতে লোভের বশবর্তী হয়ে কোন এক সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে মৃত্যু হয় তাদের। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন এস এম আবু বকর। এরপর ঢাকার নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল মঞ্চস্থ করে নাটক ‘স্বাধীনতা ফিরে এসো’। আবদুল্লাহ আল মামুন জুনিয়রের রচনা থেকে প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন সাঈদ রহমান। বাংলা নাট্যদল পরিবেশিত ‘মুক্তির ছিন্ন দলিল’ শিরোনামের প্রযোজনাটির রচনা করেছেন নাসির আহমেদ এবং নির্দেশনা দিয়েছেন হ ম সহিদুজ্জামান। মঞ্চস্থ হয় নাট্যনন্দনের দর্শকনন্দিত নাটক ‘অন্য যুদ্ধ’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আহসান হাবীব স্মরণ। এবারের পথনাটক উৎসবে প্রতিদিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল সাড়ে চারটায়। উৎসব চলবে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শিল্পকলায় বাতিঘরের ‘ঊর্ণাজাল’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন ॥ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় বাতিঘর নাট্যদলের ‘ঊর্ণাজাল’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন। এটি ছিল দলটির তৃতীয় প্রযোজনা। নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় ছিলেন বাকার বকুল। বিদেশ থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করে দীর্ঘদিন পর নিজ গ্রামে ফেরে খালেদ। স্কুলের জন্য রেখে যাওয়া পিতার স্বপ্নের একখ- জমিতে মাদ্রাসা গড়ে তোলে সে। অন্যদিকে সাঁইজির আখড়ায় বেড়ে ওঠা গায়েন সয়ফুল খালেদের বাল্যবন্ধু। ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হতে শিল্পের মনসংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় শিল্পী। চক্ষুদান করে যাওয়া জয়নাল ঘাতকের জানাজা পড়ানোর দায়ে ইমামের জিহবা কেটে নেয় কে বা কারা। ঘাতকের কবরে গোক্ষুর দেখে ভীত হয় গ্রামবাসী। সুযোগে ধর্মীয় মতবাদের আশ্রয়ে ঢুকে পড়ে অপকৌশল-কূটনীতি। কাফের মুরতাদ হত্যার প্রশিক্ষণ চলতে থাকে দূরের জঙ্গলে, জঙ্গী ক্যাম্পে। এভাবেই বিন্যাস্ত হয়েছে নাটকটির কাহিনী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মুক্ত নীল, সজীব তানভীর, রবিউল ইসলাম শশী, সৈয়দ মাসুম রেজা, সাদিয়া ইউসুফ বৃতা, ইন্দ্রানী ঘটক, ফিরোজ মুনীর প্রমুখ।
×