ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তবু হাল ছাড়তে নারাজ ওয়াটসন!

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৬ মার্চ ২০১৫

তবু হাল ছাড়তে নারাজ ওয়াটসন!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বশেষ ম্যাচটায় একাদশের বাইরে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন। দীর্ঘদিন রানের খরায় ভোগা এ ক্রিকেটার বিশ্বকাপের দুই ম্যাচ খেলেও বড় কোন ইনিংস উপহার দিতে পারেননি। করতে পেরেছেন ০ ও ২৩ রান। বল হাতেও সুবিধা করতে পারেননি তিনি। সে কারণে আফগানদের বিরুদ্ধে সাইডলাইনে বসেই খেলা দেখতে হয়েছে। এটা পরিষ্কার যে এখন ওয়াটসনের বিকল্প কাউকে দলে প্রতিষ্ঠিত করার চিন্তাভাবনা করছে অসিরা। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার অন্ধকারে ঢেকে গেলেও ৩৩ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডার হাল ছাড়তে নারাজ। প্রত্যয় জানিয়েছেন সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় নিজেকে মেলে ধরার। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া দলে একঝাঁক অলরাউন্ডার। স্টিভেন স্মিথ, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর জেমস ফকনারÑ এ চার তরুণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে দলটা। দুর্দান্ত ফর্মেও আছেন তাঁরা। তবে এর মধ্যে পেস বোলিং অলরাউন্ডার শুধু ফকনারই। তাঁর সঙ্গেই এখন একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা ওয়াটসনের। ইনজুরির কারণে অবশ্য ফকনার বিশ্বকাপের প্রথম থেকেই ছিলেন অনুপস্থিত। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একাদশে ফিরেছেন তিনি। আর ফকনার ফেরায় জায়গা দিতে ছিটকে পড়তে হয়েছে ওয়াটসনকে। তাহলে কি একসময়ের নির্ভরযোগ্য এ অলরাউন্ডারের অসি দলে ভবিষ্যতটা অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে? এমনটাই আলোচনা এখন চারদিকে। ওয়াটসন আপাতত নিজের ভাগ্যটা মেনে নিলেও কোনভাবেই হাল ছাড়তে নারাজ। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের ওপর আস্থাশীল। নিজের যে সামর্থ্য আছে তাঁর ওপরে দারুণ বিশ্বাসও আছে। যে কোন সময় যদি কোন সুযোগ আসে আমি ভালভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমি জানি, এই মুহূর্তে আমি রান করতে পারছি না। সে কারণে একাদশ থেকে ছিটকে যাওয়াটা স্বাভাবিক। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমাকে এসব মানতেই হবে। নিজেকেই সেজন্য দোষী ভাবছি আমি। সবসময়ই দলের হয়ে খেলা সম্ভব নয়। কিন্তু ফেরাটা কখনই অসম্ভব হতে পারে না।’ ব্যাটে-বলে সম্প্রতি নেই ধারাবাহিকতা। তবে বিশ্বকাপে ওয়াটসনের ব্যাটিং গড় আছে ৫০ এর ওপরে। যদিও এবার বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০ আর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ২৩ রান করেছেন তিনি। ইংলিশদের বিরুদ্ধে মাত্র ৩ ওভার বোলিং করলেও কিউইদের বিরুদ্ধে তাঁর হাতে বল ওঠেনি। আর আফগানদের বিরুদ্ধে একাদশেই ঠাঁই হলো না। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বাধিক ২৭৫ রানের জয়ের রেকর্ডের দিন তিনি ড্রেসিং রুমে বসে ছিলেন। দেখেছেন তাঁর ও পন্টিংয়ের ২৫২ রানের জুটিকে ভেঙ্গে ফেলতে। দ্বিতীয় উইকেটে ২৬০ রানের নতুন দেশসেরা জুটি গড়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্মিথ। তবে সাইডলাইনে বসে বিন্দুমাত্র বিচলিত ছিলেন না ওয়াটসন। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই দল থেকে বাদ পড়াটা সবসময়ই হতাশার। কিন্তু এটা বরং নিজের উন্নতি এবং আরও ভাল করার জন্য প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ। তাই আমি কোনভাবেই নিজের ভবিষ্যত খারাপ হয়ে যাচ্ছে এটা ভাবছি না।’ অসি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কও বেশ আশাবাদী ওয়াটসনের ছন্দে ফেরার বিষয়ে। ইনজুরি কাটিয়ে ওয়াটসনের জায়গায় ফেরা ফকনারও তেমন কিছুই করতে পারেননি। ব্যাট হাতে ৭ রান করার পর ৪ ওভার বোলিং করে ৮ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। এ বিষয়ে ক্লার্ক বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে ওয়াটসন মানসিকভাবে এটাকে বেশ ভালভাবেই সামাল দিয়েছেন। অবশ্যই তাঁকে বাদ দেয়াটা নির্বাচকদের জন্য কঠিন এক সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি পুরো দলের কাছেই সারাদিন চমৎকার এক উপস্থিতি।’ ওয়াটসন ১৮২ ওয়ানডে খেলে ৪০.১৫ গড়ে ৫৫০১ রান করেছেন এবং ৩১.২৯ গড়ে নিয়েছেন ১৬৪ উইকেট। ২০১২ থেকে শুরু করে ওয়াটসন অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ক্রিকেটার।
×