অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী লক্ষ্যভিত্তিক দারিদ্র্য হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখলেও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক ও ফলাফল নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। তাই কর্মসূচীর সামগ্রিক সফলতার জন্য প্রয়োজন চার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া। এগুলো হচ্ছে, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, কার্যকরী বাস্তবায়ন কৌশল, যথাযথ সমন্বয় এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে প্রথাগত জবাবদিহিতার বাইরে সাধারণ জনগণ, নাগরিক সমাজ কিংবা নাগরিক সংগঠনের অংশগ্রহণে সামাজিক নিরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ কৌশল। গভার্নেন্স কোয়ালিশন ও অক্সফ্যামের যৌথ উদ্যোগে ‘সামাজিক নিরীক্ষার আলোকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর বর্তমান অবস্থা ও উত্তরণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ তাগিদ দেন।
শনিবার রাজধানীর এ এস মাহমুদ সেমিনার হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রিফাত আমিন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম, অর্থনীতিবিদ ড. এম. এম. আকাশ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, ড. নাজনীন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গভার্নেন্স কোয়ালিশনের আহ্বায়ক মহসিন আলী। আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন অক্সফ্যামের পলিসি অফিসার কামরুন্নেসা নাজলী এবং মাঠ পর্যায়ে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর সামাজিক নিরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন করেন সবার জন্য খাদ্য প্রচারাভিযানের সমন্বয়কারী কানিজ ফতেমা।
অতিথির বক্তব্যে রিফাত আমিন এমপি বলেন, গভার্নেন্স কোয়ালিশন কর্তৃক উত্থাপিত দাবিসমূহ যথেষ্ট যৌক্তিক। এ বিষয়সমূহ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হবে। যাতে করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সূফল আরও বেশি কার্যকরভাবে পাওয়া যায়। ড. শামসুল আলম বলেন, জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্র সরকার কর্তৃক গৃহীত হলে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর বর্তমান সমস্যাসমূহের অধিকাংশই সমাধান হবে এবং দেশের দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য বড় ধরনের একটা পদক্ষেপ হবে।
ড. এম. এম. আকাশ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর কর্মসূচীর মাঠ পর্যায়ের বাস্তবায়নের গভার্নেন্স বিশ্লেষণ করে নীতি প্রণয়ন করা দরকার। ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমাদের সীমিত সামর্থ্যরে যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর যথাযথ বাস্তবায়ন, সকল পক্ষের অংশগ্রহণ, সুশাসন ও উপযুক্ত নীতিমালার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন ও টেকসই দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারের যথাযথ অংশগ্রহণের মাধ্যমে সকল সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীসমূহের একটি সমন্বিত রূপরেখা গ্রহণ করার এখনই উপযুক্ত সময় এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মহসিন আলী বলেন, দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপুষ্টি প্রতিরোধ, খাদ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা, দুর্যোগকালে ও কর্মহীন সময়ে খাদ্য সহায়তা প্রদান ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উপকারভোগীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সাময়িকভাবে সাহায্য করা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী বাস্তবায়িত হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: